অতিমারির কারণে শুধু মানুষ দৈহিক ভাবে নয়, তার সঙ্গে মানসিক ভাবেও আক্রান্ত হচ্ছেন। রোগ পরবর্তীতে নিজের মন এবং মানসিক একেবারেই মেলানো সম্ভব হচ্ছে না। একধরনের ডিপ্রেশন গ্রাস করছে মানুষকে! কোনও কিছুতেই যেন সুখ নেই, কাজ করতে ইচ্ছে করলেও মন সায় দিচ্ছে না। প্রচুর মনস্তত্ত্ববিদের সূত্রে জানা যাচ্ছে মানুষ সবেতেই বিরক্ত বোধ করছেন, অযথা রেগে যাচ্ছেন এবং কোভিড পরবর্তীতে এটি খুব সাধারণ ব্যাপার।
রোগ পরবর্তীতে মানুষ প্রচন্ড রকম দুর্বল হয়ে পড়ছেন। এবং তার সঙ্গেই মানসিক ভাবে অশান্তি গ্রাস করছে তাকে। বাড়িতে থাকতে থাকতে ক্লান্ত অনুভব করছেন তারা তবে রেহাই নেই! একেবারেই যেন বাইরের সঙ্গে শত্রুতা সৃষ্টি হয়েছে মানবজীবনের। তাই মনকে সুস্থ রাখতে গেলে বেশ কিছু পন্থা অবলম্বন করা প্রয়োজন। মানসিক যদি ঠিক থাকে তবে কোনও রোগ বেশিদিন টিকতে পারে না। কী করবেন আইসলেশনে থাকা কালীন?
অবশ্যই রোগের পরবর্তীতে, গা হাত পা ব্যথা, গলা চুলকানি এবং হাত পায়ে অ্যালার্জির বিষয়টিকে দেখে রাখতে হবে। নিয়ম করে গারগেল করা এবং প্যারাসিটামল চিকিৎসকের পরামর্শ অনুযায়ী খেতে হবে। নিজেকে সুস্থ রাখতে গেলে, অবশ্যই শ্বাসযন্ত্র ঠিক রয়েছে কিনা, প্রতিদিন অক্সিজেন লেভেল এবং গায়ের তাপমাত্রা দেখে নিতে হবে। এছাড়াও,
- সুস্বাদু এবং পুষ্টিকর খাবার খাওয়া অভ্যাস করতে হবে। কারণ খাবার যদি পুষ্টিকর এবং শরীরের পক্ষে কাজে না দেয় তবে বেশ সমস্যার!
- ফ্লুইড জাতীয় খাবার বেশি খেতে হবে। রক্তে বিশুদ্ধ স্থিতি রাখা প্রয়োজন। ফলের রস কিংবা ডাবের জল খাওয়া অভ্যাস করুন।
- অন্তত ১০ দিনের জন্য, ব্যায়াম শরীরচর্চা বন্ধ করুন। এতে আপনারই লাভ। এবং লক্ষণ বুঝেই পুনরায় ব্যায়াম করুন। হঠাৎ করেই সাংঘাতিক ভাবে ব্যায়াম করবেন না, আস্তে ধীরে।
- জোরে জোরে শ্বাস নিন। অনুলোম বিলম করতে থাকুন। ফুসফুসের কার্যক্ষমতা বাড়াতে এটি বেশ কাজ দেয়। তার সঙ্গেই মনকে শান্ত রাখতে হবে তাই এটি আবশ্যিক!
- সবসময় ভাল কিছু ভাবা অভ্যাস করুন। এতে উদ্বেগ কমবে, ভাল মোটিভেশনাল বই পড়ুন। একলা থাকলেও অন্যদের সঙ্গে ফোনে যোগাযোগ বন্ধ রাখবেন না। মনের কথা গুলি প্রকাশ করুন।
- যে কাজটি করতে ভাল লাগে সেটি করতে থাকুন। অর্থাৎ, সিনেমা দেখা কিংবা ক্রিয়েটিভ কোনও কাজ করা এগুলি বন্ধ করবেন না। রঙিন সবকিছুই এসময় মনে আনন্দ সৃষ্টি করতে পারে। বিশেষ করে শিশুদের মধ্যে এই রোগ দেখা দিলে তাদের ক্ষেত্রে এসব কার্যকরী।
- সারাদিনে কী করলে ভাল থাকছেন সেটি দেখে নিন। তাহলে সেগুলোই করবেন, পারলে রোগের খবর এবং দুশ্চিন্তা থেকে দূরে থাকুন।
- যেগুলি একেবারেই করবেন না তার মধ্যে, অযথা মদ্যপান এবং ধূমপান একদম করবেন না। এতে শরীর আরও আলগা হতে থাকে। খারাপ খবর থেকে এই সময় দূরে থাকাই ভাল।
যারা মানসিক ভাবে আগে থেকেই অসুস্থ, তাদের পক্ষে কিন্তু এগুলি আরও যন্ত্রণা দায়ক হতে পারে। যারা আসলেই ডোমেস্টিক ভায়োলেন্সের শিকার, কিংবা ছোট থেকেই বঞ্চিত, তারা কিন্তু বেশি ক্ষতিগ্রস্থ হবেন মানসিক ভাবে। সময় এবং সমাজের পক্ষে নিজেকে মেলানো এইসময় সমস্যার হতে পারে। তাদের এইসময় যত্নে কিংবা ভালবাসায় রাখা উচিত। তাদের মন মত খাবার এবং যা করতে ভালবাসে সেগুলো এগিয়ে দিন। ওদের সামনে রোগ নিয়ে ভয়ঙ্কর আলোচনা না করাই ভাল।
ইন্ডিয়ান এক্সপ্রেস বাংলা এখন টেলিগ্রামে, পড়তে থাকুন