/indian-express-bangla/media/media_files/2025/11/02/radha-krishna-love-festival-2025-11-02-17-00-30.jpg)
Radha Krishna Rasa Yatra: রাধা-কৃষ্ণের প্রেম উৎসব।
Radha-Krishna Love Festival: বাংলার ঐতিহ্যবাহী এক অনন্য উৎসব হল রাসযাত্রা (Rasa Yatra)। রাধা-কৃষ্ণের প্রেম-লীলা স্মরণে পালিত এই উৎসব বৈষ্ণব ভাবধারার অন্যতম উজ্জ্বল প্রতীক। শারদ পূর্ণিমার রাতজুড়ে প্রেম, ভক্তি এবং সংগীতের আবেশে দেশজুড়ে নানা মন্দির, মেলা আর ভক্তিমঞ্চ ভরে ওঠে। বৃন্দাবন থেকে শুরু করে নদিয়া, ময়মনসিংহ, মেদিনীপুর, শান্তিনিকেতন, মণিপুর— সর্বত্রই আজও রাস উৎসব সমান উৎসাহে পালিত হয়।
রাসযাত্রার ইতিহাস এবং তাৎপর্য
রাসযাত্রার মূল ভিত্তি 'রসলীলা' — শ্রীকৃষ্ণের সেই অলৌকিক প্রেমলীলা, যেখানে গোপিনীদের সঙ্গে তিনি রাত্রিভর নৃত্য এবং সংগীতের মাধ্যমে প্রেম-আনন্দ ভাগ করে নিয়েছিলেন। পুরাণ মতে, কৃষ্ণ যখন বৃন্দাবনে গোপিনীদের সঙ্গে এই রসনৃত্য করেছিলেন, তখন তা ছিল মহাজাগতিক মিলনের প্রতীক।
আরও পড়ুন- জন্মদিনে শীর্ষেন্দু! জেনে নিন নানা অজানা কথা
রাধাকৃষ্ণের ঐক্য মানে আত্মা আর পরমাত্মার মিলন, প্রেম এবং ভক্তির বিশুদ্ধতম রূপ। গোপিনীরা সংসার ত্যাগ করে কৃষ্ণের সান্নিধ্যে আসেন— এই কাহিনি কেবল রোমান্টিক নয়, এটি এক আধ্যাত্মিক যাত্রা। গোপিনীদের অহং ভেঙে কৃষ্ণ তাঁদের প্রকৃত ভক্তির অর্থ বোঝান। তাই রাস উৎসব মানে শুধু প্রেম নয়, অহং ভাঙা, আত্মশুদ্ধি আর ভক্তির পথ ধরে ঈশ্বরপ্রাপ্তি।
আরও পড়ুন- একদিনেই দেখে ফেলুন নদিয়ার নবদ্বীপের সেরা দর্শনীয় স্থানগুলি
বাংলায় রাসযাত্রার প্রচলন
বাংলায় রাসযাত্রার প্রচলনে গভীরভাবে যুক্ত রাজা কৃষ্ণচন্দ্র রায় ও গিরিশচন্দ্র রায়। নদিয়ার কৃষ্ণনগর, শান্তিপুর, বীরভূম, মেদিনীপুর থেকে শুরু করে দক্ষিণ ২৪ পরগনা পর্যন্ত রাসমেলা আজও বাঙালির হৃদয়ে উজ্জ্বল ঐতিহ্য। বিশেষ করে নদিয়া জেলার কৃষ্ণনগর ও নবদ্বীপে রাসমেলা ঘিরে চলে সপ্তাহজুড়ে উৎসব, আলো, নাটক, পুতুলনাচ এবং ধর্মীয় নাট্যাভিনয়।
আরও পড়ুন- সেনা পাঠিয়েও ভাঙতে পারেননি ঔরঙ্গজেব, এই মন্দির স্বয়ং বিশ্বকর্মা বানিয়েছেন বলে বিশ্বাস ভক্তদের!
রাসযাত্রা শুধুমাত্র বৈষ্ণব সমাজেই নয়, সাধারণ মানুষও এটিকে উৎসব হিসেবেই পালন করে আসছে। ঘরে ঘরে রাধাকৃষ্ণের পূজা, কীর্তন, আরতির ধ্বনি ও প্রজ্বলিত প্রদীপের আলোয় সেজে ওঠে গ্রামবাংলা।
একনজরে এবছরের রাসযাত্রা
| ২০২৫ সালে রাসযাত্রা | ৫ নভেম্বর, বুধবার |
| পূর্ণিমা তিথি থাকবে | ৪ নভেম্বর রাত ৯:২২ / ১০:৩৮ থেকে ৫ নভেম্বর সন্ধ্যা ৬:৪৯ / ৭:০৬ পর্যন্ত |
| উৎসবের মূল ভাব | রাধাকৃষ্ণের প্রেমলীলা ও ভক্তির প্রকাশ |
| জনপ্রিয় স্থান | নদিয়া, বৃন্দাবন, মথুরা, শান্তিপুর, মণিপুর |
আরও পড়ুন- উত্তরবঙ্গের প্রাচীনতম জাগ্রত কালীমন্দির, বয়রায় আজও বাজে মায়ের নুপুরের ধ্বনি
রাসযাত্রার দিনে ভক্তরা রাধাকৃষ্ণের মন্দিরে ভোগ নিবেদন করেন, প্রদীপ জ্বালান ও কীর্তন করেন। অনেক স্থানে সারারাত ভজন, রাসলীলা ও নাচগান চলে। রাস পূর্ণিমার রাতে চাঁদের আলোয় মন্দির ও ঘরে ঘরে ভক্তিমূলক আবহ ছড়িয়ে পড়ে। রাসযাত্রা শুধুমাত্র ধর্মীয় অনুষ্ঠান নয়, এটি বাঙালির সংস্কৃতিরও এক অবিচ্ছেদ্য অংশ। প্রেম, আত্মত্যাগ, ভক্তি এবং ঈশ্বরচেতনার মিলনই এই উৎসবের মর্মবাণী।
/indian-express-bangla/media/agency_attachments/2024-07-23t122310686z-short.webp)
Follow Us