শহর কলকাতা বড়বাজারকে চেনে ব্যবসার কেন্দ্রভূমি হিসেবে। কিন্তু, তা ছাড়াও বড়বাজারের আরেকটা বিশেষত্ব আছে। সেই বিশেষত্ব হল, এই অঞ্চল রাজ্যের ধর্মচর্চার অন্যতম স্থল। সেই ধর্ম আরাধনার অন্যতম কেন্দ্রবিন্দু হল বড়বাজারের রাজাকাটরা। যেখানে রয়েছে কলকাতা তো বটেই, ভারতের বেশ পুরোনো এক হনুমান মন্দির। এই মন্দির ৩৫০ বছরের পুরোনো। এই মন্দিরে প্রতি শনি ও মঙ্গলবার ভক্তদের ভিড় উপচে পড়ে।
দূর-দূরান্ত থেকে ভক্তরা এই মন্দিরে আসেন। কারও সন্তানের অভাব, কারও আবার সন্তানের সমস্যা। কেউ আবার পাত্র বা পাত্রীর অভাবে বিয়ে করতে পারছেন না। কারও বা অন্যকিছু। সমস্যা যতই ভিন্ন হোক না-কেন, সব সমস্যা থেকে মুক্তি পাওয়ার ঠিকানা কিন্তু একটাই। আর, তা হল- রাজাকাটরা হনুমান মন্দির। ভক্তরা জানেন বলেই, দূর-দূরান্ত থেকে এই মন্দিরে ভিড় উপচে পড়ে। ভক্তদের বিশ্বাস, এই হনুমান সিদ্ধিদাতা। কারণ, প্রথমত তিনি দক্ষিণমুখী। আর, দ্বিতীয়ত এখানে হনুমান বিগ্রহ পঞ্চমুখী।
কলকাতার বিখ্যাত স্ট্র্যান্ড রোডের ওপর অবস্থিত এই মন্দির খোলে ভোর ৫টায়। বন্ধ হয় সকাল ১১টায়। সকালের আরতি হয় ভোর ৫টা নাগাদ। বিকেলে মন্দির খোলে বিকেল ৪টায়। বন্ধ হয় রাত ১০টায়। সন্ধ্যাবেলায় এই মন্দিরে আরতি হয় ৭টা ৩০ নাগাদ। অবাঙালি থেকে বাঙালি, জাতি নির্বিশেষে শহরবাসী ভিড় করেন এই মন্দিরে। ভারতে বেশিরভাগ হনুমান প্রতিমাই একমুখী। সেই বিচারে এই মন্দিরের হনুমান প্রতিমা পঞ্চমুখী। যিনি যাবতীয় রোগ-ব্যাধির নাশক।
আরও পড়ুন- ভক্তদের প্রাণের দেবী সাধনকালী, আপদ-বিপদে করেন রক্ষা, পূরণ করেন মনস্কামনা
ভক্তদের চাহিদা পূরণ হয়। তাই এই মন্দিরে দান-ধ্যানেরও অভাব ঘটে না। ভক্তদের মধ্যে অনেকে আবার শহর কলকাতার নামী ব্যবসায়ী। যে ব্যবসায়ীরা এই শহর থেকেই থেকেই তাঁদের ব্যবসাকে গোটা দেশে ছড়িয়ে দিয়েছেন। গোটা দেশে তাঁদের ব্যবসায়িক সমৃদ্ধির জন্য রীতিমতো পরিচিতি লাভ করেছেন। কিন্তু, এই মন্দিরে তাঁরা আসেন স্রেফ সাধারণ ভক্ত হিসেবেই। যে কারণে বলা যায়, বড়বাজারের এই হনুমান মন্দির, শহর কলকাতার অন্যতম তীর্থক্ষেত্র।