Advertisment

ভাই-বোনের সৌহার্দ্যের বন্ধন! উৎসবের গুরুত্ব, ইতিহাসের মাঝেই জানুন কোন সময়ে রাখী বাঁধা শ্রেয়

এই বছর রাখী বন্ধন উত্সবটি ৩০ এবং ৩১ আগস্ট দুই দিন ধরে পালন করা হবে।

author-image
IE Bangla Web Desk
New Update
aksha bandhan, raksha bandhan 2023, happy raksha bandhan, raksha bandhan importance, raksha bandhan history, importance of raksha bandhan,raksha bandhan significance,raksha bandhan date in india, raksha bandhan 2023 date, raksha bandhan 2023 date in india, raksha bandhan date 2023, raksha bandhan in 2023, when is raksha bandhan in 2023, when is raksha bandhan 2023, when is raksha bandhan in 2023, rakhi 2023, rakhi 2023 date, rakhi 2023 date in india, 2023 সালে রক্ষা বন্ধন কখন, 2023 সালে রক্ষা বন্ধন কখন, রক্ষা বন্ধনের ইতিহাস, রাখি 2023

এই বছর রাখি বন্ধন উত্সবটি ৩০ এবং ৩১ আগস্ট দুই দিন ধরে পালন করা হবে।

সে এক উত্তাল সময়। ১৯০৫-এর ১৯ জুলাই। ব্রিটিশ ভারতের তৎকালীন ভাইসরয় লর্ড কার্জন বঙ্গভঙ্গের প্রস্তাব ঘোষণা করলেন। অবিভক্ত বাংলাকে শোষণ করা সমস্যা হয়ে দাঁড়াচ্ছিল ক্রমশ। তাই শুধু এবং শুধু্মাত্র প্রশাসনিক কারণে ইংরেজ শাসকরা ঠিক করলেন, ধর্মের ওপর ভিত্তি করে ভাগ করা হবে বাংলাকে। হিন্দু জনসংখ্যার আধিক্যযুক্ত অঞ্চল আলাদা করা হবে মুসলিম অধ্যুষিত বাংলা থেকে। বাংলার মুসলিমদের এমন মগজ ধোলাই ততক্ষণে হয়ে গেছে, তারা প্রায় খুশি মনেই মেনে নিয়েছে প্রস্তাব।

Advertisment

তখনকার অবিভক্ত বাংলা মানে কিন্তু বাংলা, বিহার, আসাম, শ্রীহট্ট সবটা মিলে। তত দিনে ব্রিটিশ বিরোধী জাতীয়তাবাদী আন্দোলনের আঁতুড়ঘর হয়ে উঠেছে বাংলা। ইংরেজদের উদ্দেশ্য ছিল বাংলাকে ভাগ করে দিয়ে বিদ্রোহের গতি কমিয়ে আনা। অতএব পাশ হয়ে গেল বঙ্গ ভঙ্গের প্রস্তাব। তখন শ্রাবণ মাস। ১৬ আগস্ট। কাকতালীয় ভাবে সেটা ছিল রাখী পূর্ণিমা।

হিন্দু ঘরের মেয়েরা তাদের ভাই-এর হাতে পরাবে রাখী। অন্যরকম রাখী বন্ধনের কথা মাথায় এল রবীন্দ্রনাথের। ভাই-বোনের নয়, রাখীবন্ধন হয়ে উঠল হিন্দু-মুসলিমের সম্প্রীতি উৎসব। এ ধর্মের মানুষ ভালোবেসে জড়িয়ে ধরে হাতে রাখী পরিয়ে দিচ্ছে যার হাতে, তার ধর্ম আলাদা। হাতে হাত রেখে সাম্রাজ্যবাদী শক্তির দিকে ছুঁড়ে দেওয়া হল প্রতীকী প্রতিবাদ। একটা মানুষের ডাকে ধর্ম নির্বিশেষে সারা বাংলা এক হয়েছিল সে দিন। প্রতিবাদের ভাষা, চরিত্র বদলেছে ক্রমশ। দীর্ঘ ৬ বছর পর ১৯১১ সালে ভাইসরয় লর্ড হার্ডিঞ্জ রদ করে দেন বাংলা ভাগের প্রস্তাব।

রাখী মানেই ভাই বোনের সম্পর্ক খানিকটা তরাণ্বিত করে। আজকের দুনিয়াটা হয়ে উঠেছে একটা গ্লোবাল ভিলেজ। ইন্টারনেট মারফতই টিকে থাকছে সম্পর্ক। সাম্প্রতিক কালে দাদা-দিদি, ভাই-বোন একই শহরে একই সঙ্গে রয়েছে, এমন উদাহরণ হাতে গোনা। দাদা দিল্লি, তো বোন কলকাতায় সংসার ঠেলছে। আবার ভাই হনলুলু তো বোন হাভানা, দিব্যি এরকম ভাবেই কাটছে ভাই বোনের সম্পর্ক। ভাইকে রাখী পরিয়ে জোর করে প্রণাম আদায় কিমবা দাদার পকেট কেটে রাখীর উপহার হিসেবে হেড ফোন, পছন্দের পোশাক, ব্যাগ কেনা ফার্স্ট ডে ফার্স্ট শো তে শাহরুখের সিনেমা দেখা আর ক’জনের ভাগ্যে জোটে?

ফেসবুক হোয়াটসঅ্যাপকে বাবা জ্যেঠারা যতই গাল মন্দ করুক, এই প্ল্যাটফর্ম কিন্তু বাঁচিয়ে রেখেছে একাধিক সম্পর্ক। তাই রাখীর শুভেচ্ছাটাও সেই মারফতই সেরে নিন। রাগ অভিমান, আনন্দ, মিস করা সবটা ভাগ করে নিন একসঙ্গে। তারপর নয় একটা ভিডিও কল ও একটা ফোন সেরে নেবেন। এই বছর রাখি বন্ধন উত্সবটি ৩০ এবং ৩১ আগস্ট দুই দিন ধরে পালন করা হবে। রাখি প্রধানত ‘নিরাপত্তা ও রক্ষা বন্ধন’চিহ্ন হিসেবে উঠে এসেছে বছরের পর বছর ধরে। পূর্ণিমা তিথি ৩০ আগস্ট, সকাল ১০.৫৯ মিনিটে শুরু হবে, যা পরের দিন সকাল ০৭.০৪ পর্যন্ত থাকবে।

এই দিন ভদ্রকাল থাকবে সকাল ১০:৫৯ থেকে রাত ০৯:০২ পর্যন্ত। অতএব, ভদ্র যোগ এড়িয়ে, আপনি রাখি বাঁধতে পারেন ০৯.০২ এর পর। ভদ্রকালকে অত্যন্ত অশুভ বলে মনে করা হয় ৷ সেই কারণেই জ্যোতিষশাস্ত্র অনুসারে রাত ০৯.০২ এর পর রাখি বাঁধাই শ্রেয়। রাত ৯.০২ মিনিট থেকে রাত ১২.২৮ মিনিট পর্যন্ত রাখি বাঁধতে পারেন আপনার ভাইয়ের হাতে। ৩১ অগাস্ট সকাল ০৭.০৫ মিনিট পর্যন্ত শুভ যোগ রয়েছে।

রাখি উৎসব সম্পর্কে এমনও একটি বিশ্বাস রয়েছে যে, মহাভারত যুগে ভগবান শ্রী কৃষ্ণ রাজা শিশুপালকে সুদর্শন চক্র দিয়ে হত্যা করেছিলেন। এ কারণে তার আঙুল থেকে রক্ত ​​পড়তে থাকে। সেই সময় সুভদ্রা কাপড় খুঁজতে থাকেন। আশেপাশে বাঁধার মতো কোন কাপড় তিনি পাচ্ছিলেন না। ঠিক সেই সময় সেখানে দ্রৌপদী হাজির হন এবং তার মূল্যবান শাড়ি থেকে একটি টুকরো ছিঁড়ে কৃষ্ণের আঙুলে বেঁধে দেন। এর পর শ্রীকৃষ্ণ দ্রৌপদীকে সব বিপদ থেকে রক্ষা করার প্রতিশ্রুতি দেন।  

Rakhi
Advertisment