ত্রেতাযুগের শ্রীরামচন্দ্রের পদধূলিতে ধন্য হয়েছিল এই স্থান। রামের ঈশ্বর হিসেবে এখানকার জ্যোতির্লিঙ্গের নাম রামেশ্বরম। তামিলনাড়ুর রামনাথপুরম জেলার পাম্বান দ্বীপে এই তীর্থস্থান। শিবের দ্বাদশ জ্যোতির্লিঙ্গের মধ্যে অন্যতম তো বটেই। দেশের চার ধামেরও অন্যতম। শাস্ত্রজ্ঞদের অনেকে একে দক্ষিণ ভারতের কাশীও বলে থাকেন।
দক্ষিণ-পূর্ব ভারতের শেষ প্রান্তভূমি পক প্রণালীতে একটি দ্বীপের আকারে গড়ে উঠেছে রামেশ্বরম। এখানকার জ্যোতির্লিঙ্গটি বিশাল আকারের। সারা বছর ধরেই পর্যটকরা এখানে ভিড় করেন। এই মন্দিরে রয়েছে রামেশ্বর স্তম্ভ।
এখানকার জ্যোতির্লিঙ্গ মন্দির ৮৬৫ ফুট লম্বা ৬৫৭ ফুট চওড়া। শিব ছাড়াও এই মন্দিরের চত্বরে আরও কয়েকটি ছোট আকারের মন্দির আছে। যার মধ্যে দক্ষিণ দিকে আছে রামেশ্বরী বা দেবী পার্বতীর মন্দির। প্রতি সপ্তাহেই শুক্রবার করে এই পার্বতী মন্দিরের মূর্তিকে নবরত্নে সাজিয়ে সোনার পালঙ্কে বসিয়ে মন্দিরের সামনে থেকে শোভাযাত্রা বের হয়।
সঙ্গে চলে বেদপাঠ। এখানে ১২ ফুট লম্বা চুন-বালিতে তৈরি একটি নন্দীমূর্তিও রয়েছে। সেই নন্দীমূর্তির পাশ দিয়ে গিয়েই গর্ভমন্দিরে প্রবেশ করতে হয়। শুধু তাই নয়া. এর গর্ভমন্দিরেই রয়েছে রামেশ্বরম শিবের লিঙ্গমূর্তি।
আরও পড়ুন- দ্বাদশ জ্যোতির্লিঙ্গের অন্যতম, যেখানে শিব নাগেশ্বর রূপে বিখ্যাত
কথিত আছে, সীতাদেবীর বালি দিয়ে তৈরি মূর্তি ও রামচন্দ্রের প্রতিষ্ঠিত শিবলিঙ্গ স্থাপিত রয়েছে এই মন্দিরে। এই মন্দিরে নাকি দুটি লিঙ্গ আছে বলে মনে করা হয়। তার মধ্যে একটি সীতা পূজা করতেন বলে মনে করা হয়। অন্যটি পূজা করতেন হনুমান। লঙ্কা জয় করে আসার পর এই পূজা করেন সীতা ও হনুমান।
এই মন্দির চত্বরে রয়েছে ২২টি কুণ্ড বা কূপ। এর জলে ওষুধের গুণ রয়েছে। যাতে স্নান করলে দূর হয় রোগ। শুধু তাই নয়, স্বয়ং শ্রীকৃষ্ণও নাকি এখানে এসেছিলেন। তিনি রুদ্র কুণ্ডে স্নান করেছিলেন। তারপরই মাতুল কংসকে হত্যার পাপ থেকে শ্রীকৃষ্ণ মুক্ত হয়েছিলেন।
এই মন্দিরের সামনে রয়েছে সোনার তালগাছ। এখানে সোনার বেদির ওপর প্রতিষ্ঠিত রয়েছে জ্যোতির্লিঙ্গ। এর মাথার ওপর পঞ্চফণা নিয়ে দাঁড়িয়ে রয়েছে কালনাগ। এই মন্দির চত্বরে রয়েছে বিষ্ণুমন্দির। যেখানে রয়েছে শ্বেতপাথরের বিষ্ণুমূর্তি।