রাস্তায় রোদে বেশি ঘুরে বেড়ান? কিংবা ত্বকের প্রয়োজনীয় প্রসাধনী ব্যাবহার করেন না? অথবা শারীরিক অভ্যন্তরীণ গোলমাল সবকিছু থেকেই চামড়ায় কিন্তু নানান ধরনের রোগ দেখা দিতে পারে। চামড়ায় কালো ছোপ, মেছেতা, এমনকি ব্রণ অথবা ফুসকুড়ি খুবই সাধারণ বিষয়। তবে এরই মাঝে যখন স্কিন অতিরিক্ত উত্তপ্ত হয়ে যায়, শরীরের প্রদাহ বেড়ে যায় তখন মুখে rosacea কিংবা লাল ফুল যাওয়া দাগ খুব সাধারণ বিষয়।
প্রসঙ্গে ধারণা দিচ্ছেন চিকিৎসক গীতিকা গুপ্তা। তিনি বলছেন কম করে ১৪ কোটি মানুষ এই Rosacea রোগে আক্রান্ত। এবং এর থেকেই দীর্ঘ দিনের চর্মরোগ এর মত সমস্যা চাগার দিতে পারে। তবে সকলের ক্ষেত্রে এই রোগ সমান নয়, অর্থাৎ এক একজনের কারণ আলাদা, প্রকৃতি আলাদা, তার কারণ সকলের স্কিনের ধাত এবং দৈহিক বৈশিষ্ট এক নয়। কী কী কারণে হতে পারে এই চর্মরোগ?
তিনি বলছেন এর পেছনে কম করে অনেক কারণ রয়েছে, তবে তার মধ্যে সবথেকে বেশি যেগুলি লক্ষ্যণীয় :-
জেনেটিক, অর্থাৎ পরিবারের কারওর মধ্যে যদি এই জাতীয় রোগ থেকে থাকে তবে বংশ পরম্পরায় এটি দেখা যেতে পারে, তাই পরিবারে কারওর থাকলে আগে থেকে সতর্ক হন।
মাথার চুলের স্ক্যাপ্লে দেমোডিক্স মাইট নামক এক জীবাণু থাকে, এটি কিন্তু খুব খারাপ এবং সেই থেকেও দেখা দিতে পারে ভয়ানক মুশকিল... এটি থেকে যে লার্ভা বেরোয় সেটি মুখে পড়ে চর্মরোগ সৃষ্টি করতে পারে।
শরীরের অটো ইমিউনিটি বেড়ে গেলে, এটি নিজে থেকেই প্রদাহ সৃষ্টি করতে পারে। এবং শরীরে গরম ভাব বেড়ে গেলে এই জাতীয় চামড়ার সমস্যা সৃষ্টি হওয়া খুব স্বাভাবিক।
অবশ্যই পরিবেশ এবং আবহাওয়ার প্রভাব এক বিস্তর ভূমিকা গ্রহণ করে। বাতাসের গরম ভাব, ধুলোবালি এবং সবকিছুই স্কিনের পক্ষে খারাপ। অনেকসময় অতিরিক্ত শুষ্কতার কারণেও এটি হতে পারে।
এর প্রতিকার কীভাবে সম্ভব?
যেহেতু স্কিনের বিষয় তাই যাই করবেন না কেন চিকিৎসকের পরামর্শ নেওয়া একেবারেই উচিত। কিন্তু তারপরেও প্রসাধনী কিংবা ওষুধের বিষয়ে যেগুলি খেয়াল রাখবেন,
অবশ্যই স্কিনে সানস্ক্রিন লাগাতে হবে। স্কিনে সানস্ক্রিন ব্যবহার না করলে সূর্যের প্রখর তাপ সমস্যা সৃষ্টি করতে পারে।
Ph ব্যালেন্স যুক্ত ক্লিনজার অবশ্যই ব্যবহার করতে হবে। তাহলে বেশ ভাল। কারণ সব ধরনের ক্লিনজার একেবারেই চলে না, এই ধরনের স্কিনের সমস্যায়।
আজালেইক অ্যাসিড, স্কিনের সমস্যায় এক অভ্যার্থ ওষুধ। ত্বকের অ্যাসিড মাত্রা কিন্তু একেবারেই সঠিক রাখতে হবে, নইলে বেশ মুশকিল। আর এইসব রোগে স্কিন ভীষণভাবে আদ্র রাখা দরকারি।
Azythromaicin দিয়ে ট্রিটমেন্ট করলেই পারেন। অনেক সমস্যার সমাধান হবে। এবং এর থেকে অনেক ঘোরতর সমস্যার রেহাই পাবেন। শুধু এই লাল দাগ নয়, বরং এক্সফলিসন এবং পুষ্টি জোগাতে কাজে লাগে।
যে কাজগুলি এই রোগ থাকলে একেবারেই বন্ধ করে দেবেন :-
প্রথম, অতিরিক্ত ঝাল জাতীয় খাবার খাওয়া বন্ধ করে দিতে হবে।
দ্বিতীয়, সূর্যের ইউভি রশ্মি থেকে যতটা পারবেন চামড়াকে বাঁচিয়ে রাখতে হবে।
তৃতীয়, মদ্যপান একেবারেই বন্ধ করে দিতে হবে।
চতুর্থ, প্রচন্ড গরম পানীয় না খাওয়াই ভাল, এতে প্রদাহ বাড়তে পারে।
পঞ্চম, ব্যায়াম করা একটু কমান। সবসময় মন চাইলেই অত্যধিক মাত্রায় এটি অভ্যাস করবেন না।
ষষ্ঠ, চুলে হেয়ার স্প্রে ব্যবহার না করলেই ভাল।