রুশ হামলায় সমগ্র ইউক্রেন জুড়ে মর্মান্তিক পরিস্থিতি। সাধারণ মানুষের ঘরবাড়ি থেকে পরমাণু কেন্দ্র, সবকিছুই বোমাবর্ষণে ধংসের মুখে। একে একে সীমান্ত পেরিয়ে পোল্যান্ড পাড়ি দিচ্ছেন অনেকেই। মানবজাতি তো বটেই বরং সেই দলে আছে ইউক্রেনের বেশ কিছু পশুর দলও। রাশিয়ার আগ্রাসন থেকে বাঁচতেই ইউক্রেনিয় চিড়িয়াখানার ছটি সিংহ, ছটি বাঘ, দুটি ক্যারাকাল এবং একটি আফ্রিকান বন্য কুকুর নিয়ে একটি ট্রাক বৃহস্পতিবার পোল্যান্ডে পৌঁছেছে। পোলিশ চিড়িয়াখানার এক কর্মকর্তা জানিয়েছেন সেই প্রদেশের চিড়িয়াখানার মালিকই জন্তুদের জীবনের স্বার্থে সাহায্য চেয়েছিলেন।
পোজনান চিড়িয়াখানার মুখপাত্র জানিয়েছেন, বিভিন্ন প্রদেশে বোমাবাজির কারণেই তাদের স্থানান্তরিত করতে এত সময় লেগে গেল। এর আগেও অনেকবার তাদের পোল্যান্ডে পাঠানোর ব্যাবস্থা করা হলেও রাস্তাঘাট বোমার আঘাতে উরে যাওয়ার কারণেই তাদের পুনরায় ফিরে যেতে হয়, গতবে অবশেষে অবলা প্রাণীদের সুরক্ষিত জায়গায় পৌঁছাতে পেরে সকলেই বেশ নিশ্চিন্ত।
ওদেরও প্রাণ আছে, নিজের চেষ্টায় অন্তত এই পরিস্থিতিতে ওরা বাঁচতে পারবে না- পশুরা যে সুস্থভাবে পোল্যান্ড পৌঁছে গেছে এ যেন কেউ বিশ্বাস করতেই পারছে না। আধিকারিকরা জানাচ্ছেন, পূর্বে একবার রাশিয়ান ট্যাঙ্কের মুখোমুখি হওয়াতে তাদের যাত্রা ভেস্তে গেছিল, আতঙ্কে ছিল সকলেই। বাঘের শাবকরা সকলেই সুস্থভাবে অন্যত্র যাত্রা করবে এই নিয়ে কোনও সন্দেহ ছিল না, তবে ১৭ বছরের এক বাঘিনী বেজায় ক্লান্ত হয়ে পড়ায় তাকে নিয়ে চিন্তায় ছিল সকলেই।
মুখপাত্র জানান, সেদিন সাধারণ মানুষরাও ওদের পোল্যান্ড নিয়ে যেতে সাহায্য করে। ড্রাইভারকে সহযোগিতার হাত যারা বাড়িয়েছিলেন তাদের বন্যপ্রাণী পরিচালনায় কোনও অভিজ্ঞতা ছিল না। তারপরেও মানবিকতার খাতিরেই তারা এটুকু করেছিলেন, কিন্তু এখন তারা কিয়েভ ফিরে গিয়েছেন। পোজনানে প্রাণীরা কিছুটা বিশ্রাম পাওয়ার পরে, তাদের আরও পশ্চিম প্রান্তে নিয়ে যাওয়া হতে পারে। বেলজিয়ামের একটি অভয়ারণ্য এই ছয়টি সিংহ এবং আফ্রিকান বন্য কুকুরকে গ্রহণ করবে বলেই জানিয়েছে।