বসন্তের শুরু, চারপাশের পরিবেশ মনোরম, কিন্তু এই সময়েই সবচেয়ে বেশি সম্ভাবনা চিকেন পক্সের। অনেকেই জানেন না যে সঠিক ডায়েট চিকেন পক্সকে দূরে সরিয়ে রাখতে সক্ষম। চিকেন পক্স একটি অত্যন্ত সংক্রামক রোগ, এবং এই অসুখে খুব যত্নের প্রয়োজন হয়ে থাকে। সেই যত্নের তালিকার অবিচ্ছেদ্য অঙ্গ হলো প্রয়োজনীয় ডায়েট। প্রথমেই বলি, হলুদের মতো অ্যান্টি-ভাইরাল খাবার গ্রহণ করা খুব জরুরি। দুধ, দই, পনির-জাতীয় খাবার খাওয়া উচিত বেশি করে। পানীয়ের পরিমাণ বাড়ানো উচিত, কারণ এই সময় খুব ডিহাইড্রেশন হয়। তাই প্রচুর পরিমাণে জল, ডাব ও ফলের রস খাওয়া প্রয়োজন।
রান্নায় কম তেল ও প্রচুর শাকসবজি খাওয়া দরকার। সজনে ফুল, সজনে ডাটাকে বলা হয় অ্যান্টিপক্স সবজি। রোজ ভাতের সঙ্গে তেতো খেলে ভালো হয়। দইতেও প্রচুর পরিমাণে ক্যালসিয়াম ও প্রোবায়োটিক আছে, তাই যত পারেন দই খান, দইয়ের ঘোল খান। কিন্তু খাবার যাই খান না কেন, স্বাদু নাহলে কি মুখে রোচে? এবার তাই আপনাদের কাছে পেশ করলাম মরশুমি কিছু রেসিপি। এই খাবারগুলি সহজপাচ্য এবং যথেষ্ট উপকারী। ভাল করে বানাতে পারলে খুব খারাপ লাগবে বলে মনে হয় না।
সজনে ফুল দিয়ে ট্য়াংরার ঝাল
উপকরণ:
ছোট ট্যাংরা - ১০-১২টা
কাঁচা টম্যাটো - ২টো
সর্ষে বাটা - ১ টেবিলচামচ
হলুদগুঁড়ো - ১ চা-চামচ
লঙ্কাগুঁড়ো - ১ চা-চামচ
চেরা কাঁচালঙ্কা - ৪-৫টা
নুন - স্বাদমতো
কালো জিরে - ১/২ চা-চামচ
ছেঁচে নেওয়া রসুন - ২ চা-চামচ
সর্ষের তেল - ১/৪ কাপ
সজনে ফুল - ১০০ গ্রাম
ঝিরি ঝিরি করে কাটা বেগুন - ১ কাপ
চিনি - ১/২ চা-চামচ
ধনেপাতা কুচি - ২ টেবিলচামচ
প্রণালী: মাছ ধুয়ে নুন ও ১/২ চা-চামচ হলুদ মাখিয়ে নিন। সজনে ফুলগুলি ধুয়ে বেছে রাখুন। বেগুন ধুয়ে নুন ও চিনি মাখিয়ে নিন। কড়াইতে তেল গরম করুন ও মাছগুলো ভেজে নিন। ওই তেলে বেগুনগুলোও ভেজে তুলে নিন। এইবার পরিষ্কার তেলের মধ্যে কালো জিরে ফোড়ন দিন। ফোড়ন হয়ে গেলে তাতে কাঁচা টম্য়াটো, ১/২ চা-চামচ হলুদগুঁড়ো, লঙ্কাগুঁড়ো ও নুন দিয়ে অল্প করে সাঁতলে নিন। ১/২ কাপ সর্ষেবাটা জলে গুলে দিয়ে দিন। এর পর প্রয়োজন মতো নুন ও ভেজে রাখা মাছ দিয়ে ২-৩ মিনিট ঢাকা দিয়ে রান্না করুন। এইবার ঢাকা খুলে সজনেফুল, কাঁচালঙ্কা ও বেগুনগুলো দিয়ে দিন। বেশ মাখা মাখা হয়ে গেলে ১ টেবিলচামচ সর্ষের তেল ও ধনেপাতা কুচি দিয়ে নামিয়ে নিন। দুপুরের পাতে, গরম ভাতে দারুণ জমে যাবে।
নিম আলুর ভর্তা
উপকরণ:
আলু সেদ্ধ - ২টি (বড়)
ভাজা শুকনো লঙ্কা - ২টি
রসুন কুচি - ২ চা-চামচ
নিমপাতা - ১ আঁটি
সর্ষের তেল - ১ টেবিলচামচ
কালো জিরে - ১/২ চা-চামচ
নুন - স্বাদমতো
প্রণালী: একটা প্যানে সর্ষের তেল গরম করে তাতে কালো জিরে, রসুন ও শুকনো লঙ্কা দিন। লঙ্কা ও রসুন ভাজা হলে সবটুকু একটা বাটিতে ঢেলে রাখুন। নিমপাতা বেছে নিয়ে ৪ মিনিট মাইক্রো করে নিন। দেখবেন যেন বেশ শুকনো মুচমুচে হয়। এইবার নিমপাতা ঠান্ডা হলে ভাল করে হাত দিয়ে গুঁড়ো করে নিন। সবশেষে সেদ্ধ আলুর সঙ্গে তেল সমেত ভাজা রসুন, লঙ্কা, কালো জিরে এবং আপনার স্বাদ অনুযায়ী নিমপাতার গুঁড়ো ভাল করে মেখে নিন। এই নিম আলুর ভর্তা বেশ স্বাদু ও স্বাস্থ্যকরও বটে। যাঁরা এমনি নিমপাতা পছন্দ করেন না, তাঁরা এইভাবে খেয়ে দেখতে পারেন। গুঁড়ো নিমপাতা একবার বানিয়ে একটা এয়ার টাইট কৌটোতেও রেখে দিতে পারেন।
সজনে ফুলের বাটি চচ্চড়ি
উপকরণ:
ফুলকপি ডুমো করে ছোট ছোট কাটা - ১ কাপ
আলু ডুমো করে ছোট ছোট কাটা - ১ কাপ
কাঁচালঙ্কা চেরা - ৬টা
সজনে ফুল - ৫০ গ্রাম
নুন - স্বাদমতো
হলুদগুঁড়ো - ১/২ চা-চামচ
লঙ্কাগুঁড়ো - ১/২ চা-চামচ
সর্ষের তেল - ৪ টেবিলচামচ
ধনেপাতা কুচি - ৩ টেবিলচামচ
সর্ষের তেল আরও ১ টেবিলচামচ
ছাড়ানো মটরশুঁটি - অল্প
প্রণালী: ধনেপাতা কুচি ও ১ টেবিলচামচ সর্ষের তেল বাদে সব উপকরণ একটা বাটির মধ্যে ভাল করে মিশিয়ে নিন। এইবার সামান্য একটু জল দিয়ে কড়াই ঢাকা দিয়ে রান্না করুন কম আঁচে। যখন দেখবেন সব তরকারি সুসিদ্ধ হয়ে গিয়েছে ও তেল ছাড়ছে, তখন ধনেপাতা কুচি ও কাঁচা তেল ছড়িয়ে নামিয়ে নিন। খুব ভাল লাগে সাধারণ এই বাটি চচ্চড়ি ভাত দিয়ে মেখে খেতে।