Advertisment

দেশের অন্যতম শক্তিপীঠ, সিদ্ধিলাভের জন্য যেখানে ভিড় জমান দূর-দূরান্তের মহাসাধকরা

আশ্বিন মাসে নবরাত্রির দিন এখানে ১৬ দিন ধরে দেবীর পুজো করা হয়। দেবীকে নিবেদন করা হয় আমিষ ভোগ।

author-image
IE Bangla Web Desk
New Update
saktipeeth bimala

পুরীর জগন্নাথধাম। দেশের চার ধামের অন্যতম এই তীর্থক্ষেত্র। যেখানে দেশের বৈষ্ণব সম্প্রদায় জগন্নাথদেবের মধ্যে খুঁজে পান শ্রীবিষ্ণুকে। ভগবান বিষ্ণুর স্ত্রী লক্ষ্মীদেবী শ্রী দান করেন। সেই কারণে জগন্নাথধামকে শ্রীক্ষেত্রও বলা হয়। তবে, শুধু বৈষ্ণবই নয়। হিন্দুদের অন্যান্য সম্প্রদায়ের কাছেও পুরী বা জগন্নাথধাম অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ তীর্থক্ষেত্রে। কারণ, জগন্নাথদেবকে শাক্ত এবং শৈবরাও মহাশক্তির আধার হিসেবে পুজো করেন।

Advertisment

সবচেয়ে বড় কথা জগন্নাথধামেই রয়েছে সতীপীঠ। এখানে দেবীর রূপ বিমলা। আর, ভৈরব হলেন স্বয়ং জগন্নাথদেব। দেবীপুরাণ মতে, এখানে সতীর দুটি পা পড়েছিল। যদিও অন্যমতে দেবীর নাভি পড়েছিল এই তীর্থক্ষেত্রে। তন্ত্রচূড়ামণি গ্রন্থে ‘পীঠনির্ণয়’ বা ‘মহাপীঠনির্ণয়’ অংশেও উৎকলের বিরজা ক্ষেত্রকে শক্তিপীঠ বলে উল্লেখ করা হয়েছে। কুব্জিকাতন্ত্র অনুযায়ী আবার বিমলা ৪২টি সিদ্ধপীঠের একটি। দেবীভাগবত পুরাণ, প্রাণতোষিণী তন্ত্র ও বৃহৎ নীলতন্ত্র এবং মৎস্যপুরাণে বিমলাকে শক্তিপীঠ হিসেবে উল্লেখ করা হয়েছে। বামনপুরাণ মতে এটি মহাতীর্থ। মহাপীঠ নিরুপণ, নামাষ্টত্তরশত গ্রন্থেও উল্লেখ রয়েছে বিমলার।

আরও পড়ুন- বাংলারই সতীপীঠ, যেখানে মন্দিরের জন্ম ইতিহাস আজও রহস্যের চাদরে ঢাকা

পুরীর জগন্নাথ মন্দিরের দক্ষিণ-পশ্চিম কোণে এই মন্দির। যার পাশে রয়েছে 'রোহিণী জলাধার কুণ্ড'। বিমলা মন্দিরের চারটি অংশ। প্রথমটি, বিমান অর্থাৎ গর্ভগৃহের অংশ। দ্বিতীয়টি, জগমোহন বা সভাকক্ষ। তৃতীয়টি, নাট মণ্ডপ বা উৎসব কক্ষ। চতুর্থটি, ভোগ মণ্ডপ বা ভোগ নিবেদনের কক্ষ। শক্তি উপাসকদের কাছে বিমলা হলেন জগন্নাথের তান্ত্রিক পত্নী ও জগন্নাথ মন্দিরের রক্ষাকর্ত্রী। জগন্নাথদেবের উচ্ছিষ্টই এখানে দেবী বিমলাকে নিবেদন করা হয়। আশ্বিন মাসে নবরাত্রির দিন এখানে ১৬ দিন ধরে দেবীর পুজো করা হয়। দেবীকে নিবেদন করা হয় আমিষ ভোগ। দুর্গাপুজোর এই সময় বিমলা দেবীকে মহিষাসুরমর্দিনী রূপে পুজো করা হয়।

দুর্গাপুজোর সময় খুব ভোরে গোপনে বিমলা মন্দিরে পাঁঠাবলি হয়। স্থানীয় মার্কণ্ডেয় মন্দিরের জলাশয় থেকে মাছ ধরে এনে রান্না করে নিবেদন করা হয় দেবী বিমলাকে। যাবতীয় পূজা চলে তন্ত্র মতে। এই সমস্ত তান্ত্রিক ক্রিয়াকলাপ ভোরে জগন্নাথ মন্দিরের দরজা খোলার আগেই সেরে ফেলা হয়। বৈষ্ণব ও স্ত্রী ভক্তদের এই সময় বিমলা মন্দিরে প্রবেশ করতে দেওয়া হয় না। কেবলমাত্র হাতেগোনা ভক্ত এই সময় 'বিমলা পারুষ' বা দেবী বিমলার আমিষ প্রসাদ পান। ভক্তদের বিশ্বাস, এই সময় দেবী দুর্গা উগ্রমূর্তি ধারণ করেন। সেই জন্য তাঁকে শান্ত করতে আমিষ ভোগ দিতেই হয়।

Hindu Jagannath Temple Jagannath Dev
Advertisment