সরস্বতী মহাভাগে বিদ্যে কমলোলোচনে - কথায় বলে বিদ্যা এবং সুরের দেবী সরস্বতী শুভ্রবসনা, শ্বেত হংসে অধিষ্ঠিতা। তবে আপামর বাঙালি থেকে কচিকাঁচাদের মনে সরস্বতী পুজো মানেই সকাল সকাল কাঁচা হলুদে স্নান করে হলুদ রঙের পোশাক পরে একেবারে তৈরি! বেশিরভাগ সময় বাগদেবীর বিগ্রহে সাদা কিংবা সোনালী শাড়ি দেখা গেলেও, মানা হয় হলুদ রঙ দেবীকে সন্তুষ্ট করতে সবথেকে বেশি গুরুত্ব রাখে।
Advertisment
শাস্ত্রের ভাষায় একে বসন্ত পঞ্চমী বলা হয়। অর্থাৎ মাঘ মাসের শুক্ল পক্ষের পঞ্চমী তিথিতে বীণাপানির আরাধনায় রত হন সকলেই। শিক্ষা এবং সুর - এই দুই উদ্দেশ্যেই দেবী সরস্বতীর পূজা করে থাকেন মর্ত্যবাসী। কিন্তু এইদিনেই কেন?
পুরাণ মতে দেবী সরস্বতীর জন্মই নাকি এইদিনে। স্বয়ং ব্রহ্মার কমণ্ডলু থেকে তাঁর সৃষ্টি। মানুষকে জীবনদান করার পরেও তিনি সন্তুষ্ট হননি। নিজের কমণ্ডলু থেকেই জল ছিটিয়ে দিন প্রজাপতি ব্রহ্মা, ফুলের গাছের উপর পড়তেই আবির্ভূত হন দেবী - চার হাতে বীণা, বই, মালা এবং বরদ মুদ্রা।
শুভ সময়ঃ পঞ্চমী লাগছে শনিবার অর্থাৎ ৫ই ফেব্রুয়ারি, ভোর ৩:৪৮ মিনিট থেকে। থাকছে রবিবার ৬ ফেব্রুয়ারি ভোর ০৩:৪৬ মিনিটে। শুভ সময় সকাল ৭:০৭টা থেকে দুপুর ১২:৩৫টা পর্যন্ত।
তবে হলুদ রঙের সঙ্গে সরস্বতী পুজোর সম্পর্ক নিয়ে বেশ কিছু তথ্য জানতে পারা যায়। কেউ কেউ বলেন, বসন্তের এক সময় নতুন করে প্রকৃতিতে পাতা গজায়, ধানে নতুন করে রং ধরে, চারিদিকে হলুদ সুন্দর দৃশ্য! এই কারণেই দেবীর আরাধনায় হলুদ রঙের পোশাক কিংবা গাঁদা ফুলের প্রয়োজনীয়তা রয়েছে।
আবার কেউ কেউ বলেন, দেবী জ্ঞান, বিদ্যা এবং বুদ্ধির দেবী। হিন্দু শাস্ত্র মতে এই তিনটিই হলুদ রং দিয়ে বর্ণনা করা হয়। স্বয়ং সরস্বতীর আশীর্বাদ কালীদাসকে মহাকবি হিসাবে পরিচিতি দান করে।
আবার কেউ কেউ বলেন, সরস্বতী পুজোর দিন হলুদ রঙের পোশাক পরার কারণে বেশ কিছু বিশেষত্ব রয়েছে। হলুদ রঙকে এই পুজোর ক্ষেত্রে শুভ বলে বিবেচনা করা হয়। হলুদ রং সরলতা, সাত্ত্বিক ভাব, সমৃদ্ধি, শক্তি এবং ইতিবাচক আশাবাদের রূপ হিসেবে ধরে নেওয়া হয়।
মানা হয়, হলুদ উচ্ছ্বাস এবং উদ্যমের প্রতীক! তাই বাগদেবীর আরাধনায় এটি একান্ত কাম্য!
তবে বেশ কিছু নিয়ম মেনে চলতে হয়?
প্রথম, খুব গাঢ় রঙের পোশাক যেমন কালো, নীল পোশাক এই সময় না পড়াই ভাল।
চেষ্টা করবেন যেন নিরামিষ আহার করেন।
পরেরদিন খাগের কলম ব্যবহার করে বেলপাতায় সরস্বতী মন্ত্র লেখা খুব পুণ্যের।