একান্ন পীঠের অন্যতম এই সতীপীঠ। যেখানে রয়েছে একের পর এক শিবলিঙ্গ। প্রতিটি লিঙ্গের আলাদা নাম। কোনও শিবলিঙ্গের নাম কুবেরেশ্বর, কোনওটার সিদ্ধেশ্বর, জ্যোতির্লিঙ্গেশ্বর, কালারুদ্রেশ্বর, জম্ভশ্বর। আবার রয়েছে একের পর এক জলের কুণ্ড বা উষ্ণ প্রস্রবণ। যার নাম- পাপহরা গঙ্গা, বৈতরণী গঙ্গা বা সৌভাগ্যকুণ্ড, খরকুণ্ড, ভৈরবকুণ্ড, অগ্নিকুণ্ড, দুধকুণ্ড, সূর্যকুণ্ড, শ্বেতগঙ্গা বা শ্বেতকুণ্ড, ব্রহ্মাকুণ্ড এবং অমৃতকুণ্ড বা জীবৎসকুণ্ড।
প্রতিটি কুণ্ডের পিছনে রয়েছে আলাদা পৌরাণিক কাহিনি। শুধু তাই নয়, প্রতিটি প্রস্রবণের কাছে শিবলিঙ্গ রয়েছে। ভক্তদের বিশ্বাস, এই কুণ্ডগুলোয় স্নান থেকে রোগভোগ থেকে মুক্তি পাওয়া যায়। এর মধ্যে খরকুণ্ডের তাপমাত্রা ৬৬ ডিগ্রি সেলসিয়াস। ভৈরবকুণ্ডের তাপমাত্রা ৬৫ ডিগ্রি সেলসিয়াস। আর, সূর্যকুণ্ডের তাপমাত্রা ৬১ ডিগ্রি সেলসিয়াস। অগ্নিকুণ্ডের তাপমাত্রা ৮০ ডিগ্রি সেলসিয়াস।
দুধকুণ্ডের তাপমাত্রাও থাকে ৬৬ ডিগ্রি সেলসিয়াস। সকালের দিকে এই কুণ্ডের জলে ওজোন ঘনীভূত হয়ে সাদা সরের মত পদার্থ তৈরি করে। এই সব কুণ্ডের জলে সোডিয়াম, পটাশিয়াম, ক্যালসিয়াম, সিলিকেট, ক্লোরাইড, বাইকার্বোনেট এবং সালফেট জাতীয় পদার্থ পাওয়া গিয়েছে। যাতে ওষুধের গুণ রয়েছে বলেই বিশ্বাস ভক্তদের। এছাড়াও কুণ্ডের জলে পাওয়া গিয়েছে রেডিওঅ্যাকটিভ উপাদান।
আরও পড়ুন- এনডিএর সঙ্গে বিবাদ ঘুচল? রাষ্ট্রপতি পদপ্রার্থী দ্রৌপদী মুর্মুকে সমর্থন করবে শিবসেনা
এই সতীপীঠে দেবীর তৃতীয় নয়ন বা দুই ভ্রূর মধ্যবর্তী স্থান পড়েছিল। দেবী এখানে মহিষাসুরমর্দিনী। আর, ভৈরব বক্রেশ্বর বা বক্রনাথ। এই সতীপীঠের পাশ দিয়ে বয়ে গিয়েছে পাপহরা নদী। কথিত আছে মহামুনি অষ্টাবক্র এখানে শিবের তপস্যা করেছিলেন। তিনি পাপহরা নদীতে স্নানের পর রোগ থেকে মুক্ত হন। সেকথা মাথায় রেখে এখানে মহাদেবের নাম করা হয়েছে বক্রেশ্বর বা বক্রনাথ।
তেমনভাবে অনেকেই এখানকার কুণ্ডের জলে স্নান করে রোগ থেকে মুক্তি পেয়েছেন বলেই বিশ্বাস ভক্তদের একাংশের। কথিত আছে অষ্টাবক্র মুনি প্রথমে কাশীতে উপাসনার সিদ্ধান্ত নিয়েছিলেন। কিন্তু, স্বয়ং বিশ্বনাথ তাঁকে গৌড়দেশের গুপ্তকাশী বক্রেশ্বরে গিয়ে সাধনা করতে নির্দেশ দিয়েছিলেন। সেই কারণে, ভক্তদের কাছে বক্রেশ্বর গুপ্তকাশী নামেও পরিচিত।