বাংলার বেশিরভাগ সতীপীঠেই মন্দির তৈরির ইতিহাস স্থানীয় বাসিন্দাদের মুখস্থ। ভক্তদের আনাগোনায় সেই সব সতীপীঠের মন্দিরগুলোয় বিরাজ করছে আলাদা শ্রী। যেখানে নিয়মিত পরিচর্যা চলে মন্দির ও সংলগ্ন অঞ্চলের। আর, তারই মাঝে ব্যতিক্রম এই সতীপীঠ। যেখানে পৌরাণিক কাহিনি তো আছে। কিন্তু, মন্দির তৈরির ইতিহাস নিয়ে রয়েছে হাজারো মতবিরোধ। এমনকী, সতীপীঠ এখানেই কি না, তা নিয়েও রয়েছে মতান্তর।
এই সতীপীঠ ত্রিস্রোতা। যেখানে দেবীর রূপ ভ্রামরী। পীঠনির্ণয়তন্ত্র মতে এখানে দেবীর বাম চরণ পড়েছিল। কারও মতে, জল্পেশধামই দেবী ভ্রামরীর আসল পীঠ। কারও মতে আবার এই শক্তিপীঠ জলপাইগুড়ি জেলার বোদাগঞ্জ অঞ্চলে। কারও মতে আবার এই শক্তিপীঠ জলপাইগুড়ি জেলার বোদাগঞ্জ অঞ্চলে। এখানকার ভৈরব ঈশ্বর হলেও, অনেকের মতে তিনি জল্পেশ। কারণ, কাছাকাছির মধ্যে জল্পেশের শিবমন্দির অত্যন্ত বিখ্যাত। ভক্তদের এই অংশের দাবি, জল্পেশই হলেন সেই ঈশ্বর। সে যাই হোক, কথিত আছে যে দেবী ভ্রমর রূপে অরুণাসুরকে বধ করেছিলেন। তাই তাঁর নাম ভ্রামরী।
আরও পড়ুন- বাংলার একমাত্র দুর্গম সতীপীঠ, যেখানে সারাক্ষণ জ্বালানো থাকে প্রদীপ
যাইহোক, কবে এখানে মন্দির তৈরি হয়েছে, তাই নিয়ে নানা মহলে নানা মত থাকলেও সবচেয়ে গ্রহণযোগ্য মত হল, কয়েক দশক আগে লাল শালু পরা এক সাধক এসেছিলেন। তাঁর জটা পা পর্যন্ত ঠেকত। তিনি দীর্ঘদিন এই মন্দিরে পূজা ও যজ্ঞ করতেন। ওই সাধকই তিনটি মোটা গাছের গুঁড়ির নীচে দেবীর পাথররূপী বাম পায়ের সন্ধান পান। কোনও এক ভক্ত আবার ফালাকাটা স্টেশনের দেওয়ালে মন্দিরের ম্যাপও এঁকে দিয়েছেন। শুধু তাই নয়, কথিত আছে জিওলজিক্যাল সার্ভে অফ ইন্ডিয়ার দুই আধিকারিকও এই মন্দিরে এসে দেবীর মহিমার কথা স্থানীয় বাসিন্দাদের কাছে প্রচার করেন।
স্থানীয় বাসিন্দাদের বিশ্বাস, দেবী এখানে অত্যন্ত জাগ্রত। যাঁর কৃপায় বহু বিপদ থেকে রক্ষা পাওয়া যায়। তা সে আইনি বিবাদই হোক বা অন্যকিছু। তবু যেন সবটাই, বিশ্বাসে মিলায়ে বস্তু। আর, তর্কে বহুদূর। এই মন্দিরে দুর্গাপুজো এবং মাঘি পূর্ণিমায় বিশেষ পুজোপাঠ হয়। এই সময় দূর-দূরান্ত থেকে এখানে বহু ভক্ত আসেন।