Advertisment

বাংলার সতীপীঠ, যেখানে আজও অলৌকিক ঘটনাকে স্বাভাবিক বলেই ধরা হয়

প্রবল গরমে যখন অনেক পুকুরের জল শুকিয়ে যায়, এই কুণ্ড সেই সময়ও জলে ভরা থাকে।

author-image
IE Bangla Web Desk
New Update
kankalitala

প্রথমে ছিল কুণ্ড বা পুকুর। পরে, তার পাশেই তৈরি হয়েছে মন্দির। আজও সেই কুণ্ডের জলে নামতে সাহস পান না ভক্তরা। তাঁরা মনে করেন সেখানে রয়েছে দেবী সতীর কঙ্কাল। তাই ওই কুণ্ডে নামলে তাঁদের ক্ষতি হবে। ওই কুণ্ডের জলে বেশ কিছু পাথর আছে। যা আসলে দেবী সতীর দেহাংশ বলেই বিশ্বাস ভক্তদের।

Advertisment

কুড়ি বছর বাদে কুণ্ড থেকে ওই পাথরগুলো তোলা হয়। পুজো হয়ে গেলে ফের তা ডুবিয়ে দেওয়া হয় কুণ্ডের জলে। প্রবল গরমে যখন অনেক পুকুরের জল শুকিয়ে যায়, এই কুণ্ড সেই সময়ও জলে ভরা থাকে। ভক্তদের বিশ্বাস, এই কুণ্ডের সঙ্গে সুড়ঙ্গের মাধ্যমে কোনও নদীর যোগ আছে। সেই কারণেই কুণ্ডের জল শোকায় না।

অবশ্য সেটা হওয়া অস্বাভাবিক না। মন্দিরের পাশ দিয়ে বয়ে গিয়েছে কোপাই নদী। আর, মন্দিরের ডান দিকে রয়েছে এই কুণ্ড। যেখানে দেবী সতীর কঙ্কাল খসে পড়েছিল বলেই বিশ্বাস ভক্তদের। তাঁদের সেই বিশ্বাসকে মর্যাদা দিয়ে এই সতীপীঠের নাম হয়েছে কঙ্কালীতলা। একান্নপীঠের সর্বশেষ পীঠ। কঙ্কাল খসে পড়ার পরই মহাদেবের চৈতন্য ফিরেছিল। সেকথা মাথায় রেখে এই পীঠের নাম ভক্তদের অনেকের কাছে চৈতন্যপীঠ।

বীরভূমের বোলপুর শহর থেকে প্রায় নয় কিলোমিটার দূরে বোলপুর-লাভপুর রোডের ওপর এই সতীপীঠ। কেউ বলেন কয়েকশো বছর আগে এক সাধু স্বপ্নাদেশ পেয়ে এই পীঠের অস্তিত্ব অনুধাবন করেছিলেন। তার পরে অন্য এক সাধক দেবীর স্বপ্নাদেশ পেয়ে নাকি এই পীঠে পুজোর শুরু করেন।

যদিও ইতিহাসবিদ রাখালদাস বন্দ্যোপাধ্যায়ের বাংলার ইতিহাস বইতে দাবি করা হয়েছে, গৌড়বঙ্গের পালবংশের রাজা প্রথম মহীপালের রাজত্বে কাঞ্চিরাজ রাজেন্দ্রচোল বীরভূমের এই জায়গা দখল করে নিয়েছিলেন। শিবভক্ত কাঞ্চিরাজই কোপাই নদীর ধারে প্রতিষ্ঠা করেছিলেন শিবমন্দির। যে কারণে এখানকার শিবলিঙ্গ কাঞ্চীশ্বর শিবলিঙ্গ নামে পরিচিত। শিবমন্দিরের পাশেই রয়েছে মহাশ্মশান ও পঞ্চবটী বন।

কিছুদিন আগেও এখানে খোলা বেদীতেই দেবীর পুজো হত। এখন মন্দির তৈরি হলেও দেবীর কোনও মূর্তি নেই। রয়েছে শ্মশানকালীর বড় বাঁধানো ছবি। যাকে দেবী রূপে পুজো করা হয়। এই সতীপীঠে দেবীকে কেউ বলেন দেবগর্ভা। কেউ বলেন রত্নাগর্ভি। আর, ভৈরবকে বলেন রুরু। চৈত্র সংক্রান্তিতে এখানে তিন দিন ধরে মন্দিরে উৎসব চলে।

Temple Birbhum Devi Durga
Advertisment