একসময় শুধু তান্ত্রিক, কাপালিকরাই আসতেন এই সতীপীঠে, পুজো দিতেন বর্গি সেনাপতিও

এখানে দেবীর নাম শেফলিকা।, আর ভৈরব হলেন যোগীশ।

এখানে দেবীর নাম শেফলিকা।, আর ভৈরব হলেন যোগীশ।

author-image
IE Bangla Web Desk
New Update
nalateshwari

কথিত আছে ২৫২ বঙ্গাব্দে ব্রহ্মচারী কামদেব স্বপ্নাদেশ পেয়ে এই সতীপীঠ আবিষ্কার করেন। দেবীর স্বপ্নাদেশ পেয়ে কাশী থেকে ছুটে এসেছিলেন ওই ব্রহ্মচারী। তবুও একান্ন পীঠের অন্যতম এই সতীপীঠে সাধারণ মানুষের তেমন একটা আনাগোনা ছিল না। টিলা আর চতুর্দিকে জঙ্গলে ভরা ছিল গোটা এলাকা। এরপর আজ থেকে প্রায় ৫০০ বছর আগে স্মরনাথ শর্মা নামে এক সাধক দেবীর স্বপ্নাদেশ পান। তখনই জানা যায়, দেবী সতীর খণ্ডিত দেহাংশ এখানে শিলারূপে অবস্থান করছে। স্মরণাথ শর্মাই এখানে দেবীর নিত্যপূজার ব্যবস্থা করেন। প্রচার করেন দেবীর মাহাত্ম্যর।

Advertisment

পরে নাটোরের রানি ভবানী এখানে মন্দির তৈরি করে দেন। তার মধ্যে ভৈরবের মন্দির তৈরির সময় মাটির নীচ থেকে উঠে এসেছিল শ্রীবিষ্ণুর পদচিহ্ন আঁকা শিলাখণ্ড। তারপর থেকে আজও এখানে দেবী ওই ভৈরবের আগে বিষ্ণুর পদচিহ্ন আঁকা শিলাখণ্ডের পুজো করা হয়। মূল মন্দিরের ডানদিকে রয়েছে সিদ্ধিদাতা গণেশের মন্দির। কথিত আছে, কোনও এক ভৈরবী গণেশের মন্দিরের জায়গাটি আবিষ্কার করেন। আজও এখানে পাহাড়ের গায়ে শিলারূপে অধিষ্ঠিত গণেশের পুজো করা হয়। এরকমই হাজারো কাহিনি ছড়িয়ে আছে বীরভূমের নলাটেশ্বরী সতীপীঠকে ঘিরে।

আরও পড়ুন- এই সতীপীঠে পড়েছে দেবীর তৃতীয় নয়ন, কুণ্ডে স্নানে ঘটে রোগমুক্তি

পীঠনির্ণয় তন্ত্রতথা অনুযায়ী, ৫১ সতীপীঠের অন্যতম এই সতীপীঠ। আর, শিবচরিত মতে এটি সতী নয়, উপপীঠ। তবে, সতীপীঠ বিশ্বাসীদের দাবি এখানে দেবীর কণ্ঠনালি পড়েছিল। যা থেকে এখানে নাম হয়েছে নলাটেশ্বরী। জায়গাটির নাম হয়েছে নলহাটি। এখানে দেবীর নাম শেফলিকা।, আর ভৈরব হলেন যোগীশ। যদিও স্থানীয় বাসিন্দারা একে নলাটেশ্বরী দেবীর মন্দিরই বলে। পণ্ডিতদের একাংশের অবশ্য দাবি, সংস্কৃত নলক শব্দের অর্থ নলের মত লম্বা অস্থি। যার অর্থ নুলো বা কনুইয়ের নিম্নভাগ এখানে পড়েছিল। ব্রাহ্মণী নদীর তীরে ললাট পাহাড়ের নীচে এই মন্দির।

Advertisment

বহু তান্ত্রিক ও কাপালিক এই মন্দিরে তপস্যা করেছেন। বর্গিদের নেতা ভাস্কর পণ্ডিতও এখানে পুজো দিতে আসতেন। বর্তমানে নন্দীপুরের দেবোত্তর ট্রাস্ট এই মন্দির পরিচালনা করে থাকে। দিনের আলো ফোটার আগেই শেষ হয় মূল মন্দিরে দেবীর মহাস্নান। তারপর মঙ্গলারতি করে শুরু হয় দিনের। তখন থেকেই ভক্তদের জন্য খোলা থাকে এই মন্দিরের দরজা। মন্দির রাত আটটা পর্যন্ত খোলা থাকে। বিশেষ তিথিতে রাতভর এখানে দেবীর মন্দিরে হোমযজ্ঞ হয়।

Temple Kali Puja Devi Durga