হিন্দু শাস্ত্র অনুযায়ী, শিব এবং শনির মধ্যে গুরু-শিষ্যের সম্পর্ক আছে। শিব হলেন সৃষ্টির সংহারকর্তা। আর, শনি হলেন ন্যায়াধীশ। শিবের আশীর্বাদেই শনিদেব কর্ম অনুযায়ী ফল দান করে থাকেন, তাই তিনি হলেন কর্মফলদাতা। শনির গায়ের রং কালো। তাই দেখে সূর্যদেব জন্মের পর শনিকে নিজের সন্তানের মর্যাদা দিতে চাননি। ক্ষুব্ধ হয়ে শিবের ঘোরতর তপস্যা শুরু করেছিলেন শনি। তাঁর তপস্যায় সন্তুষ্ট হন শিব। আর, তিনি শনিকে আশীর্বাদ করেন যে সকলে শনিদেবকে ন্যায়ের দেবতা বলে জানবে।
আর, এই ন্যায়ের দেবতা হওয়ার জন্যই সকলে শনিদেবকে ভয় পায়। কারণ, শনিদেব শান্তি দেবেনই। জ্যোতিষশাস্ত্র মতে, শনি হল এমন একটি গ্রহ, যার প্রভাবে প্রতিটি মানুষের জীবনে অন্ধকার নেমে আসতে পারে। আর, এই সব কারণেই শনির নামে মানুষ ভয় পায়। বিশেষ করে শনির সাড়েসাতি তো জ্যোতিষীদের মত রীতিমতো ভয়ের কারণ। এই সাড়েসাতির প্রথমভাগে মানুষ মানসিকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হয়। দ্বিতীয়ভাগে ক্ষতিগ্রস্ত হয় আর্থিক ও শারীরিক ভাবে। আর, তৃতীয়ভাগে ক্ষতিগ্রস্ত হওয়ার পর, শনিদেব যে যে ক্ষতি সেই ব্যক্তির করেছেন, তাঁকে সবকিছু দিয়ে যান।
হিন্দুশাস্ত্রে শনিকে প্রসন্ন করার নানা পদ্ধতির উল্লেখ আছে। তার অন্যতম হল কালো বস্ত্র দান করা। সরষের তেল দান করা। শনিবার শনিমন্দিরে পুজো দেওয়ার মত নানা পদ্ধতিতে শনিদেবকে প্রসন্ন করার চেষ্টা করা হয়। কিন্তু, অনেকেই জানেন না যে সামান্য একটি ফুল দেওয়া হলে, শনি মহারাজ সহজেই প্রসন্ন হন। আর, ভক্তের ডাকে সাড়া দেন। ভক্তের মনস্কামনা পূরণ করেন। আসলে, কথায় আছে যে দেবতা যে ফুলে সন্তুষ্ট। নারায়ণকে আমরা যেমন গাঁদা ফুল দিয়ে পুজো করি সন্তুষ্ট করার জন্য।
আরও পড়ুন- জাগ্রত মন্দির, যেখানে রাতে হেঁটে বেড়ান গ্রহরাজ
তেমনই দেবী লক্ষ্মীকে পদ্মফুল দিয়ে পুজো করা হয়। মহাদেবকে ধুতরো ফুল দিয়ে পুজো করা হয়। ঠিক তেমনই শনিদেবকে আকন্দ ফুল দিয়ে তিনি অত্যন্ত সন্তুষ্ট হন। শনিদেবের পাশাপাশি আকন্দ ফুল মহাদেবকেও প্রসন্ন করে থাকে। এরমধ্যে যদি সাদা আকন্দ দিয়ে শনিদেবের পুজো করা যায় তবে শনিদেব খুব সহজেই ভক্তের ডাকে সাড়া দেন। খুব তাড়াতাড়ি প্রসন্ন হবেন।
যদি কোনও শুভমুহূর্তে এই গাছ বাড়ির উত্তর-পূর্ব দিকে স্থাপন করা যায়, তাহলে জীবনে অনেক সমস্যা থেকে সহজেই মুক্তি পাওয়া যায়। দূর হয়ে যায় গৃহদোষ বা বাস্তুদোষ। কালাজাদু বা টোনা-টোটকার প্রভাব থেকেও মুক্তি মিলবে। তাই প্রতিদিন, না-পারলে কেবলমাত্র সপ্তাহে শনিবার সাদা আকন্দ, না-পারলে লাল আকন্দ দিয়েই গ্রহরাজের পুজো দিন। তার ফল মিলবে হাতেনাতে।