হুগলি জেলার চুঁচুড়ার তামলিপাড়ায় রয়েছে দাসী পিসির গঙ্গার ঘাট। এই দাসী পিসির আসল নাম সত্যময়ী দেবী। তিনি ব্যক্তিগত প্রচেষ্টায় গড়ে তুলেছিলেন গঙ্গার ঘাট। সঙ্গে প্রতিষ্ঠা করেছিলেন মন্দির। যে মন্দিরের বিগ্রহ নিমকাঠের দক্ষিণাকালী। আর, তা প্রতিষ্ঠিত হয়েছিল সাধক বামাক্ষ্যাপার হাত দিয়ে। কথিত আছে, গঙ্গায় ভেসে এসেছিল ওই নিমকাঠ। স্বপ্নাদেশ পেয়ে কাঠটি গঙ্গা থেকে তুলে এনেছিলেন সত্যময়ী দেবী।
তবে, শুধু তিনিই নন। স্থানীয় পেয়ারা বাগান এলাকার এক কারিগরও একইসময়ে পেয়েছিলেন দেবীর স্বপ্নাদেশ। সেই স্বপ্নাদেশে বলা হয়েছিল, সত্যময়ী দেবী গঙ্গায় ভেসে যাওয়া নিমকাঠ পেয়েছেন। সেই নিমকাঠকে ৯ টাকার বিনিময়ে মূর্তির আকারে গড়ে দিতে হবে। সেই মতো কারিগর এসে খোঁজ নেন সত্যময়ী দেবীর বাড়িতে। যা শুনে সত্যময়ী বুঝতে পারেন, এ আসলে দেবীরই লীলা। সেই মতো সূর্য অস্ত্র যাওয়ার আগে তৈরি করা হয়েছিল এই দেবীমূর্তি।
যেহেতু এই বিগ্রহ সত্যময়ী দেবী নিজের বাড়িতে তৈরি করিয়েছিলেন, তাই এলাকাবাসীর কাছে এই মূর্তি পরিচিতি পায় সত্যময়ী কালী নামে। বাংলার ১২৯৯ সালে প্রতিষ্ঠিত হয় সেই মূর্তি। শুধু মূর্তিই নয়, বামাক্ষ্যাপা এখানে দেবীর ঘটও প্রতিষ্ঠা করে গিয়েছিলেন। যে ঘট, আজও এই বাড়ির মন্দিরে অবিকৃত অবস্থায় রয়েছে। বাড়ির মন্দির হলেও যে কেউ এখানে পুজো দিতে পারেন। তবে, পুরোহিত হিসেবে বংশপরম্পরায় থাকেন পরিবারেরই কোনও না-কোনও সদস্য।
আরও পড়ুন- মানকরের জাগ্রত বড়মা কালী, রাতে চক্ষুদান করায় পিটিয়েছিলেন শিল্পীকে
ভক্তদের দাবি, এই দেবীর কাছে মানসিক করলে, তা পূরণ হয়। আর, দেবী যদি মনে করেন কারও থেকে পুজো নেবেন, তবে তিনি পুজো নিয়েই ছাড়েন। আর, যদি মনে করেন যে কারও থেকে পুজো বা সেবা নেবেন না, তবে তিনি নেন না। এই ঘাট ও মন্দিরের ঐতিহ্যের কথা মাথায় রেখে তা সংস্কার করে দেওয়ার আশ্বাস দিয়েছেন স্থানীয় বিধায়ক, তৃণমূলের অসিত মজুমদার। সেইমতো পরিকল্পনাও করা হয়েছে বলেই তাঁদের জানানো হয়েছে। এমনটাই দাবি এই মন্দির বাড়ির পরিবারের সদস্যদের।