/indian-express-bangla/media/media_files/2025/10/21/shantipur-kali-puja-2025-2025-10-21-17-11-45.jpg)
Shantipur Kali Puja 2025: শান্তিপুরে কালীপুজো দেখতে দর্শকদের ব্যাপক ভিড় হয়।
/indian-express-bangla/media/media_files/2025/10/21/shantipur-kali-puja-2025-2025-10-21-17-12-05.jpg)
শান্তিপুরের কালীপুজো
Shantipur Kali Puja 2025: শান্তিপুরের কালীপুজো (২০২৫) মানেই এক অন্যরকম অনুভূতি। এখানে নেই কোটি টাকার ঝাঁ-চকচকে প্যান্ডেল, নেই চটকদার আলোকসজ্জা—তবু লক্ষ লক্ষ মানুষ সারারাত ধরে কালীমায়ের টানে রাস্তায় বেরিয়ে পড়েন। শান্তিপুরের কালীপুজোর মূল আকর্ষণ হল ইতিহাস, ভক্তি এবং প্রাচীন ঐতিহ্য। প্রায় ৫০০ বছরের পুরোনো প্রতিমা আজও ভক্তদের হৃদয়ে গর্বের অনুভূতি বয়ে আনে।
/indian-express-bangla/media/media_files/2025/10/21/shantipur-kali-puja-2025-2025-10-21-17-12-46.jpg)
পূজার বিশেষত্ব
শান্তিপুর শহরের নাম জড়িয়ে আছে তিনটি গুরুত্বপূর্ণ প্রতিমার সঙ্গে—বামা কালী, মহিষখাগী কালী এবং আগমেশ্বরী মা। প্রতিটি পূজা তার নিজস্ব রীতি এবং আচার-অনুষ্ঠানের জন্য পরিচিত। একদিনেই পূজা, একদিনেই ভাসান— এই রীতি শুধু শান্তিপুরেই দেখা যায়। রাত ১২টার পর শুরু হয় চক্ষুদান এবং তারপর দেবীর পূজা।
/indian-express-bangla/media/media_files/2025/10/21/agameshwari-kali-2025-10-21-17-14-13.jpg)
আগমেশ্বরী মা– তান্ত্রিক আধ্যাত্মিকতার মিলন
শান্তিপুরের আগমেশ্বরী মা-এর পূজা এক গভীর আধ্যাত্মিকতার প্রতীক। কথিত আছে, প্রায় ৪০০ বছর আগে এক তান্ত্রিকের স্বপ্নাদেশ থেকে এই পুজো শুরু হয়। বৈষ্ণব ও শাক্ত সাধনার মিলন ঘটে এখানে। আজও রীতিমাফিকভাবে চলে পুজো-পাঠ, মন্ত্রোচ্চারণ এবং গভীর নীরবতা। এখানে কোনও উন্মাদনা নয়, অনুভবটাই মুখ্য। ভক্তেরা অন্তরঙ্গভাবে মায়ের উপস্থিতি অনুভব করেন, যা এক অনন্য অভিজ্ঞতা প্রদান করে।
/indian-express-bangla/media/media_files/2025/10/21/shantipur-bama-kali-2025-10-21-17-15-19.jpg)
বামা কালী– ভক্তি যখন নৃত্যে রূপ নেয়
বামা কালী পূজা শান্তিপুরের সবচেয়ে ভিন্নধর্মী রূপ। গভীর রাতে বাঁশের মাচায় প্রতিমা ওঠে, ভক্তরা কাঁধে কাঁধ মিলিয়ে নাচ শুরু করেন। কেউ কাঁধে নেন, কেউ গলা ছেড়ে জয়ধ্বনি তোলেন, কেউ শুধু চোখের জলে ভিজে যান। দেবী যেন ভক্তদের হৃদয়কে ব্যাকুল করে তোলেন। এই নাচ শুধু ভক্তির প্রকাশ নয়, বরং দেবীর সঙ্গে একাত্মতার অনুভূতি তৈরি করে।
/indian-express-bangla/media/media_files/2025/10/21/shantipur-mahishkhagi-kali-2025-10-21-17-16-06.jpg)
মহিষখাগী কালী– বিসর্জনও রীতিমাফিক
মহিষখাগী কালী পূজোও এক অনন্য অভিজ্ঞতা। পূজা একদিনে সম্পন্ন হয় এবং সেই রাতেই শুরু হয় বিসর্জনের প্রস্তুতি। ভক্তরা মিছিলে কাঁধে কাঁধ মিলিয়ে এগিয়ে চলেন। এখানে বিসর্জন মানে বিদায় নয়, বরং আবার দেখা হবে দেবীর সঙ্গে। এটি ভক্তদের মধ্যে নতুন আশা ও পুনর্মিলনের অনুভূতি তৈরি করে।
/indian-express-bangla/media/media_files/2025/10/21/shantipur-patal-kali-2025-10-21-17-16-42.jpg)
শান্তিপুরের অলিগলি – ইতিহাসের ছোঁয়া
শান্তিপুর শহরের প্রতিটি অলিগলি, পুরোনো ইটের দেওয়াল, শতাব্দী পেরোনো হাওয়া—সবকিছুতেই মিশে আছে দেবী কালীর আরাধনার ইতিহাস। এখানে প্রতিটি কোণ থেকে প্রাচীন সংস্কৃতি, ভক্তি এবং ঐতিহ্য বোঝা যায়। প্রজন্ম থেকে প্রজন্ম পর্যন্ত এই রীতি চলে আসছে, যা শান্তিপুরকে অন্য সব কালীপুজোর থেকে আলাদা করেছে।
/indian-express-bangla/media/media_files/2025/10/21/shantipur-kali-puja-2025-2025-10-21-17-18-08.jpg)
শান্তিপুরে কালীপুজোর পথনির্দেশ
শান্তিপুরে প্রায় হাজার দুয়েকের বেশি কালীপুজো হয়। তার মধ্যে বিশেষ উল্লেখযোগ্য হল- স্টেশনের দিকে কিছুটা এগিয়ে বাইগাছির কাছে জোড়াকালী। বড় গোস্বামী পাড়ার আগমেশ্বরী, চন্ডালি। ভাঙ্গি পাড়ার মুক্তকেশী, এগিয়ে গুলবাজ কালী। চাঁদুনি পাড়ার ঘর চাঁদুনি, বাহির চাঁদুনি। বুড়োশিবতলার সাধনা কালী, রথতলা দিয়ে যেতে পারবেন চড়ার বামা কালীর মণ্ডপে। এরপর আবার মেইন রোড ধরলে দেখতে পাবেন ঘাট চাঁদুনি কালী। ওটা দেখে পথে পড়বে আনন্দময়ী কালী সেখান থেকে থানার মোড়ে দেখা পাবেন মাধব কালীর। এরপর কাঁসারি পাড়াতে বুড়িমা দেখে, পৌরসভার কাছে দে বাড়ির কালী, পাশে পক্কান্নেশ্বরী দেখে চলে আসবেন ডাকঘর মোড়। একটু এগিয়ে দেখে নেবেন মহিষখাগী কালী। আবার পিছনে এসে মেইন রোড ধরবেন। পথে কাশ্যপ পাড়াতে কালী মুখার্জী মাঠের বামা কালী বা বোম্বাট কালী দেখে নেবেন। পাশে বাংলা কালী। এগিয়ে পাতাল কালী। এছাড়া পথে অজস্র ডাকাতে কালীর মূর্তিও দেখতে পাবেন।