Advertisment

সিদ্ধার্থের মধ্যে ভগবান দেখছে ওরা

Happy Teachers Day 2018: কলেজের মাসিক মাইনে, বই, হোস্টেল খরচ, যাবতীয় সব কিছুই জুগিয়ে দেবেন ডঃ সিদ্ধার্থ ঘোষ। ওই গুটি কয়েক ছেলেমেয়ের কাছে তিনি এখন ভগবান।

author-image
IE Bangla Web Desk
New Update
The ultimate vision of the trus

গরীব ছাত্র ছাত্রীদের এমবিবিএস ডিগ্রী পেতে সাহায্য করার চেষ্টা করে নিউরো বিশেষজ্ঞ চিকিৎসক সিদ্ধার্থ ঘোষ

Happy Teachers Day 2018: দ্বাদশ শ্রেনীর দোরগোড়া অবধি কষ্ট করে পৌঁছে দিয়েছেন বাবা মা। পড়াশোনায় মেধাবি ওরা। তাই জয়েন্টের মেডিক্যালের পরীক্ষায় ভালো র‌্যাঙ্ক করেছিল। কিন্তু তারপর? ভালো ফলাফল করেছি ঠিকই, কিন্তু পরবর্তী ধাপের জন্য বাবা মায়ের ওপর চাপ সৃষ্টি করাটা বোধহয় অন্যায়। ভালো ফল করা দোষের হয়ে দাঁড়ালো তাহলে? ডাক্তার হতে পারব না? এমন ভাবনা যখন ঘনঘটার আকার নিয়েছে মনে, তখন নিউরো বিশেষজ্ঞ ডঃ সিদ্ধার্থ ঘোষের ট্রাস্টের খবর গিয়ে পৌঁছায় ওদের কাছে। ওরা জানতে পারে, মন দিয়ে পড়তে চাইলে ডাক্তারি পড়ার জন্য মোটা অঙ্কের খরচ জুগিয়ে দেবেন তিনি।

Advertisment

কিছুটা মুশকিল আসানের পথ দেখে কলকাতায় এসে যোগাযোগ করে ওরা। জানতে পারে কলেজের মাসিক মাইনে, বই, হোস্টেল খরচ, যাবতীয় সব কিছুই জুগিয়ে দেবেন তিনি। ওই গুটি কয়েক ছেলেমেয়ের কাছে তিনি এখন ভগবান। আজ শিক্ষক দিবসে তাঁকে গুরু মানতে বিন্দুমাত্র বাধা নেই ওদের।

আরও পড়ুন: ট্রেনে করে নিয়ে আসতে হয় পানীয় জল

কলকাতা মেডিক্যাল কলেজের দ্বিতীয় বর্ষের ছাত্রী পিয়ালি দে বলেন, "যে টাকাটা উনি আমাদের জন্য ব্যয় করেন, তা দিয়ে অধিকাংশটাই হয়ে যায়।” একজন সদ্য পাশ করা ছাত্র জানায়, "সিদ্ধার্থ ঘোষের সঙ্গে থাকতে চাই ভবিষ্যতে, বাবা চাষ করে দিন এনে দিন খাইয়ে বড় করেছে, সেখান থেকে আমাকে ডাক্তার করে তোলার পিছনে সব চেয়ে বড় অবদান ওঁর। আমার কাছে উনি ভগবান তুল্য।"

যাঁকে নিয়ে এত কথা, সেই সিদ্ধার্থ ঘোষ কী বলেন? তাঁর কথায়, "ডাক্তারি পড়াতে ছাত্রছাত্রী পিছু প্রত্যক বছর প্রায় লাখ টাকার কাছাকাছি খরচ হয়। নিজের পারিশ্রমিক দিয়ে যতটা পারি চেষ্টা করে যাই। দিন যত গড়িয়েছে, চিকিৎসার খরচও তত বেড়েছে। বহু মানুষ আজও পয়সার অভাবে বিনা চিকিৎসায় মারা যান। তাই চিকিৎসার খরচ কমাতে বিনা পয়সায় বা অনেক কম খরচে চিকিৎসা দিতে উদ্যোগ নিয়ে থাকেন অনেকে। কিন্তু সব সময় খরচ সামাল দেওয়া সম্ভব হয়ে ওঠে না। তখন অগত্যা সাহায্যে চাইতে হয়।"

আরও পড়ুন: টাকা নয়, খাবার দাও। ক্ষুধার্ত পেটে দুটো খাবার দিলেই খুশি ওরা

এই উদ্যোগ আজকের নয়। ১১ বছর ধরে চিকিৎসক সিদ্ধার্থ ঘোষ সাহায্যের হাত বাড়িয়ে দিয়েছেন ছাত্রছাত্রীদের দিকে। সূত্রের খবর, আর.জি. কর হাসপাতাল, মেদিনীপুর মেডিক্যাল কলেজ, এসএসকেএম, ইত্যাদি থেকে ২০১৫ সালে চার এবং এবছর ছ'জন ডাক্তারি ডিগ্রী নিয়ে পাশ করে বেরিয়েছেন। সাধারণত প্রত্যেক বছর প্রায় ১০ জন করে গরীব ছাত্রছাত্রীদের এমবিবিএস ডিগ্রী পেতে সাহায্য করার চেষ্টা করে সিদ্ধার্থ ঘোষের ট্রাস্ট।

এছাড়াও সিদ্ধার্থবাবু আরও নানা ধরণের চিকিৎসা বিষয়ে সাহায্য করে থাকেন। সম্প্রতি এক অনুষ্ঠানে অভিনেতা সাহেব চট্টোপাধ্যায় জানান, তাঁর জীবন ফিরিয়ে দেওয়াতে সিদ্ধার্থ ঘোষের কাছে তিনি ঋণী। এতেই শেষ নয়, টালিগঞ্জে অবস্থিত এক বৃদ্ধাশ্রম ও পানিহাটির এক অনাথ আশ্রমেরও দায়ভার নিয়েছেন তিনি।

দুর্দিনের ডামাডোলে যখন চতুর্দিকে হায় হায় রব উঠেছে চিকিৎসকদের বিরুদ্ধে, ভাঙচুর হচ্ছে হাসপাতাল, সেসময় সবার অগোচরে গরীবদের পাশে দাঁড়িয়ে কম পয়সায় সঠিক চিকিৎসা দেওয়ার চেষ্টা করছেন এই কিংবদন্তী চিকিৎসক। তিনি জানিয়েছেন, শুরুটা ভালো ছিল না মোটেই, ব্যঙ্গ তামাশার মুখে পড়তে হলেও বর্তমানে বেশ পরিচিতি পেয়েছেন। পাশাপাশি, তিনি কৃতিত্ব দিয়েছেন দুস্থ ছাত্রছাত্রীদেরও।

Advertisment