শ্রীরামকৃষ্ণ স্বয়ং এসে এখানে মানত করতেন, এতটাই জাগ্রত এই মন্দির

বিপদে-আপদে অতিঘনিষ্ঠ ভক্তদেরও এই মন্দিরে এসে মানত করার পরামর্শ দিতেন পরমহংসদেব।

বিপদে-আপদে অতিঘনিষ্ঠ ভক্তদেরও এই মন্দিরে এসে মানত করার পরামর্শ দিতেন পরমহংসদেব।

author-image
IE Bangla Web Desk
New Update
siddheswari kali

কালীক্ষেত্র কলকাতা। এখানকারই কালীঘাট সতীপীঠ। দেবী অত্যন্ত জাগ্রত সেকথা অনেকেই জানেন। কিন্তু, এই কলকাতাতেই এমন মন্দির রয়েছে, যেখানে সাধনা করে সাধক সিদ্ধিলাভ করেছেন। তেমন কালীমন্দিরের খবর খুব কম জনই রাখেন। আর, সেই মন্দির রয়েছে কলকাতার কুমোরটুলি অঞ্চলে। এই মন্দিরটি পরিচিত সিদ্ধেশ্বরী কালী মন্দির নামে। যাঁরা খোঁজ রাখেন, তাঁদের অনেকেরই জানা এই মন্দিরের মাহাত্ম্য। কারণটা আর কিছুই নয়, ঠাকুর শ্রীরামকৃষ্ণ তাঁর বহু ভক্তকেই এই মন্দিরের কথা বলে গিয়েছেন।

Advertisment

ঠাকুর শ্রীরামকৃষ্ণ নিজে এই মন্দিরে নিয়মিত আসতেন। কেশবচন্দ্র সেন গুরুতর অসুস্থ হয়ে পড়লে, শ্রীরামকৃষ্ণ তাঁর সুস্থতার জন্য এই মন্দিরে দেবীর কাছে ডাব-চিনি মানত করেছিলেন। উপেন্দ্রনাথ মুখোপাধ্যায় বসুমতী সাহিত্য মন্দিরের প্রতিষ্ঠাতা শ্রীরামকৃষ্ণের নির্দেশে এই মন্দিরে ছুটে আসতেন। গিরিশচন্দ্র ঘোষ তাঁর নাটক রচনার পর এই মন্দিরে দেবীর পায়ে ছুঁইয়ে তারপর নাটকের মহড়া শুরু করতেন। তিনি দেবী সিদ্ধেশ্বরীকে ভক্তিভরে 'উত্তর কলকাতার গিন্নি' বলেও ডাকতেন।

এই মন্দির অত্যন্ত প্রাচীন। এতটাই প্রাচীন যে একসময় এই মন্দিরের পাশ দিয়ে হুগলি নদী বয়ে যেত। সেই নদী বর্তমানে পশ্চিমদিকে অনেকটাই সরে গিয়েছে। এখানে সাধনা করে সিদ্ধিলাভ করেছিলেন কালীবর নামে এক সন্ন্যাসী। এছাড়াও অতীতে বহু সাধক এখানে তপস্যা করেছেন। আগে দেবীর মন্দির বলতে ছিল হোগলা পাতার কুটীর। বর্তমানে মন্দিরটি দালান। মন্দিরে বেশ কয়েকটি ঘর রয়েছে। গর্ভগৃহের সামনে ভক্তদের দাঁড়ানোর জন্য রয়েছে অলিন্দ। তার সামনে আবার গাড়ি বারান্দাও রয়েছে। বছর তিনেক আগেও এই মন্দিরের সংস্কার হয়েছে।

আরও পড়ুন- ভক্তদের কামনা পূরণ করেন সিঙ্গুরের জাগ্রত ডাকাতকালী, সারদামণির নামও এই পুজোয় জড়িয়ে

Advertisment

এখানকার দেবীমূর্তির বছরে একবার অঙ্গরাগ হয়। দেবীর বাম পায়ের দিকে রয়েছে শ্বেত দিগম্বর মহাদেবের মাথা। মন্দিরে দেবীর হাতের খাঁড়া ছাড়াও আরও দুটি খাঁড়া আছে। তার মধ্যে একটি খাঁড়া দিয়ে আগে বলি হত। সেই খাঁড়া তোলা আছে। আর একটি প্রাচীন খাঁড়া আছে। যা ধোয়া জল অনেক ভক্ত বাড়ি নিয়ে যান। সেই জল বাড়িতে থাকলে কোনও অশুভ শক্তি ওই পরিবারকে স্পর্শ করতে পারে না-বলেই বিশ্বাস ভক্তদের। তবে, বারবার করে জলে ধুয়ে ফেলার জন্য খাঁড়াটি ক্ষয়ে গিয়ে খুব ছোট হয়ে গিয়েছে।

এই মন্দিরে নিত্যপুজো ছাড়াও প্রতি অমাবস্যায় বিশেষ পুজো হয়। কালী পুজো, রটন্তি কালী পুজো, ও ফলহারিণী কালী পুজোয় থাকে বিশেষ আয়োজন। বৈশাখ মাসে বুদ্ধ পূর্ণিমার দিন হয় দেবীর ফুলদোল। ওই দিন দেবীকে ফুল দিয়ে সাজানো হয়, ফুলের গয়না পরানো হয়।

Kumartuli Kali Puja Kali Temple Lord Shiva