ঈদ-উল-অধা মুসলমানদের প্রধান ধর্মীয় উৎসবের অন্যতম। হজরত ইব্রাহিমের আমল থেকে আজও পৃথিবী জুড়ে কোরবানিকে আল্লাহর পায়ের নিবেদন হিসেবে মনে করা হয়। অন্য সব কিছুর মতো স্থানীয় পরিবেশ-পরিস্থিতির নিরিখে কোরবানিতেও বেশ কিছু বৈচিত্র্য দেখা যায়। পৃথিবীর বিভিন্ন দেশে এর রয়েছে বিভিন্ন নাম। যেমন বাংলাদেশে এটি কোরবানির ঈদ, বকরি ঈদ নামেও পরিচিত। ভারত, দক্ষিণ আফ্রিকা ও পাকিস্তানেও ঈদ-উল-অধাকে বলা হয় বকরি ঈদ। মরক্কো, আলজেরিয়া, তিউনিসিয়া, মিসর ও লিবিয়ায় কোরবানির ঈদকে বলা হয় ঈদুল কিবির।
Why Muslims Slaughtered Goat on Eid al Adha, Bakra Eid
বাংলা দেশের একটি সংবাদ মাধ্যমে প্রকাশিত তথ্য অনুযায়ী, এই ঈদের প্রধান আকর্ষণ পশু কেনাবেচা শুরু হয়েছে ইতিমধ্যেই। জমে উঠেছে পশুর বাজার। এ বছর এক কোটি ষোলো লাখ গবাদি পশু কোরবানির জন্য প্রস্তুত রয়েছে। সরকারী তথ্যমতে, এবার ৪০-৪৫ লাখ গরু-মহিষ এবং ৬০-৬৫ লাখ ছাগল-বকরি ও ভেড়া কোরবানি হবে। যার বাজার মূল্য প্রায় ৩৩ কোটি টাকা।
কেন ছাগল কাটা হয় বকরি ঈদে?
এক সময় এই বাংলায় বকরি অর্থাৎ ছাগল ছাড়া অন্য কোনও পশু বলির জন্য বিশেষ পাওয়া যেত না, কাজেই ছাগল বলি দিয়েই ঈদ পালন করার কারণে ঈদ-উল-অধার নাম হয় বকরি ঈদের। পাশাপাশি পূর্ববঙ্গে একসময় গরু কোরবানি দেওয়া যেত না। তাই ছাগল বা বকরি দিয়ে ঈদ-উল-অধা পালন করা হত। তাই বকরি ঈদ নামেই পরিচিত ছিল কোরবানির ঈদ।
অন্যদিকে আরবি “বাকারা” শব্দের অর্থ গাভী তথা গরু। আর এই গরুকে বলি দেওয়ার মধ্যে দিয়েই পালন হয় বকরীর ঈদ। কিন্তু ১৯৪৭ সালের আগের মুহূর্ত পর্যন্তু পূর্ববঙ্গ তথা বাংলাদেশে হিন্দু জমিদাররা নিজেদের জমিদারিতে কোরবানি বা গো-হত্যা করতে দিতেন না। জমিদারদের অত্যাচার আর ধর্মী অনুশাসন মানতে গিয়ে অনেকেই ‘বকরি’ অর্থাত ছাগলকে কোরবানি বা বলি দিতেন। আর এভাবেই ব্রিটিশ আমলে ঈদ-উল-অধা স্থানীয়ভাবে ‘বকরির ঈদে’ পরিণত হয়।