ঘুমাতে যাওয়ার আগে এবং ঘুম থেকে ওঠার পর মানুষ নিজের দিকে তাকানোর ফুরসৎ নেই, তবে মুঠোফোনের কথাই আগে মনে পড়ে। বালিশের পাশে মোবাইল রেখেই ঘুমাতে যাওয়ার অভ্যাস সকলের। কেউ কেউ আবার মোবাইল না টিপলে, সোশ্যাল মিডিয়ায় না থাকলে একেবারেই ঘুমাতে পারেন না। তবে চিকিৎসকদের ধারণা বেশ আলাদা, তারা বলেই থাকেন কম করে ১ ঘণ্টা আগে থেকে মুঠোফোনের ব্যবহার বন্ধ করে দেওয়া উচিত, এবং যতটা সম্ভব এটিকে শরীরের থেকে দূরে রাখা উচিত। তাদের মতে শোবার সময় ইলেকট্রনিক গ্যাজেটের বেশি ব্যবহার ক্ষতিকারক হতে পারে।
জার্নাল অফ স্লিপ রিসার্চে প্রকাশিত গবেষণায় ৫৮ জন প্রাপ্ত বয়স্ক ব্যক্তির মুঠোফোন এবং ইলেকট্রনিক গ্যাজেট সম্পর্কিত ব্যবহারকে বিশ্লেষণ করা হয়েছে। তাদের প্রতিদিনের এটির সঙ্গে সক্ষতা, ব্যবহারের অবস্থান এমনকি মাল্টি টাস্কিং সম্পর্কিত তথ্যের ওপর ভিত্তি করেই সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়। এতে জানা গেছে ইলেকট্রনিক ডিভাইসে ব্যয় করা সময়ের ওপর পরীক্ষা করা হয়েছে। মাথার ত্বকে সংযুক্ত ধাতব ডিস্ক ব্যবহার করে বৈদ্যুতিক কার্যকলাপ শনাক্ত করা হয়েছে যাতে মোট ঘুমের সময়কাল এবং ঘুমের গুণমান পরিমাপ করেই সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে।
গবেষণার ফলাফল কী?
তাতে জানা গেছে, ঘুমের আগে যদি স্বল্প সময় ইলেকট্রনিক মিডিয়া ব্যবহার করা হয় কিংবা মুঠোফোনের ব্যবহার করা হয় তবে কোনওরকম প্রভাব পরে না। মাল্টি টাস্কিং করলেই সমস্যা...
অধ্যাপক মরগান এলিথ্রপ জানাচ্ছেন, যদি আপনি একান্তই ইলেকট্রনিক মিডিয়া ব্যবহার করেন, ধরুন টিভি দেখছেন বা গান শুনছেন তবে সময় সংক্ষেপিত রাখুন। নিজেকে ফোকাসড রাখুন, তবেই নেতিবাচক ফলাফলের আশঙ্কা থাকে না। অন্যদিকে চিকিৎসক প্রীতম মুন বলছেন, সেলফোন ঘুমানোর আগে বেশি ব্যাবহার করলে অনিদ্রা হতে পারে। কারণ এর স্ক্রিন থেকে নীল রঙের আলো বের হয়...এবং এটি মেলাটোনিন উৎপাদনে হস্তক্ষেপ করে। এবং এটি ঘুম নিয়ন্ত্রণে আলাদাই ভূমিকা নেয়। জ্ঞানগত সমস্যা হতে পারে, ঘুমের অভাবে অনেককিছু ভুলে যেতে পারে মানুষজন, প্রতিদিনের কাজে স্বাচ্ছন্দ্য বোধ করে না।
আবার চিকিৎসক অভিষেক সুভাষ বলছেন, লোকজনের ঘুমাতে যাওয়ার আগে ফোন ব্যবহার না করলেই ভাল। এই ধরনের ডিভাইস থেকে বিছানাকে দূরে রাখা উচিত। একটি ভাল পরিবেশ, ঘুমের জন্য ভাল বিছানা, এগুলি গুণমানে সাহায্য করে। সঙ্গেই সঠিক খাদ্যাভ্যাস এবং অল্প পরিমাণে ব্যায়াম তথা প্রাণায়াম করলে অনেক ভাল ফল পাওয়া যায়। খাবারের মধ্যে ক্যালোরি ইনটেক, সঠিক পরিমাণে কার্বোহাইড্রেট এবং স্যাচুরেটেড ফ্যাটযুক্ত খাবার খাওয়া উচিত... জাঙ্ক ফুড একেবারেই উচিৎ নয়। অ্যালকোহল এবং ধূমপান বন্ধ করা উচিত, স্ট্রেস পূর্ণ জীবন যাত্রা মুশকিল জোগায়- মানসিক চাপ কমিয়ে নিজেকে সুস্থ রাখতে চেষ্টা করতে হবে...