সারাদিনে ঠিক কী পরিমাণ মোবাইল আর ফোন ছাড়া থাকেন বলুন তো? হিসেব করুন! উহু! গুলিয়ে যাবে থাক। আপনার শুতে ঘুমাতে জাগতে সবসময় এর অত্যাচারে আপনি এবং বলাই উচিত আপনার পরিবারের লোকেরা বড্ড বিরক্ত। কিন্তু কিছু তো করার নেই। সেইদিনের ৬ ঘণ্টার শাট ডাউন জীবন ব্যতিব্যস্ত করেছিল তো? বুঝেই উঠছিলেন না কি করবেন। কিন্তু এই আপনারা আমরাই কিন্তু এককালের সেই মানুষ যারা ছোটবেলা পুরোপুরি উপভোগ করেছি।
সকাল বেলা ঘুম থেকে ওঠার পরেই বিছানা হাতরে ফোন, রাত্রে শুতে যাওয়ার আগে ফোন। মাঝখানে কাজের ফাঁকে কম্পিউটার থেকে নানা কিছু তো রইলো। আপনি জানেন কি বিভৎস মাত্রায় নিজের অজান্তেই ঘণ্টার পর ঘণ্টা আপনি ফেসবুক আর ইনস্টাগ্রাম স্ক্রল করতে থাকেন? এতে আদৌ লাভ? এইটুকু এক্কেবারে সঠিক আপনি ট্রেন্ডিং এর সঙ্গে আপডেটেড থাকেন।
সোশাল মিডিয়া কি মারাত্মকভাবে সাংঘাতিক সেটি বলে বোঝানো দায়। অজান্তেই আপনার মানসিক অবস্থা দিনদিন রসাতলে নিয়ে যেতে এটি সক্রিয়। আপনি আদতে বুঝতেও পারছেন না যে এটি আপনাকে দুর্বল করে তুলছে। বেশ কিছু পোস্ট এবং ভিডিও তার সঙ্গে নানা ধরনের মন্তব্য এবং বক্তব্য আপনার আত্মবিশ্বাস থেকে ধৈর্য এমনকি সু চিন্তা করার ক্ষমতাকেও মাত দিচ্ছে। আপনাকে কেমন দেখতে, আপনার শিক্ষাগত যোগ্যতা থেকে শুরু করে দুনিয়ার সঙ্গে পাল্লা দিয়ে চলার নানান আজগুবি চিন্তা কেরে নিচ্ছে শান্তি। শুধুই লাইক, কমেন্ট আর শেয়ারের চক্করে দূর্বিসহ অবস্থা। আর আপনি সেই জোয়ারে সীমা ছাড়িয়ে গা ভাসিয়েছেন।
এই বিষয়ে চিকিৎসাশাস্ত্রে বেশ কিছু উল্লেখ আছে! বিশেষজ্ঞদের মতে সোশাল মিডিয়া আপনার কাছে এক খুশির আমেজ। এটিতেই আপনার মন ধ্যান সব যুক্ত। মগ্ন হয়ে এতেই ডুবে থাকেন। ফলেই আমাদের মস্তিষ্কে ডোপামাইন নামক হরমোন ক্ষরণ ক্রমশ আপনাকে খুশি থাকতে বাধ্য করে। সহজ ভাষায় একে হ্যাপি হরমোন বলে। এর কারণেই বারবার আপনি সেই একই জায়গায় কৌতুকের খোঁজে হাজির হন। সময়ের তোয়াক্কা তো থাকে নাই! তার সঙ্গে বেশ কিছু পরিবর্তন আপনাকে সম্পূর্ণ অন্য মানুষ করে তোলে।
প্রথম, যখন আপনি সোশাল মিডিয়ার অন্য কাউকে দেখেও নিজের জীবনযাত্রা পরিবর্তন করেন কিংবা এমন কিছু করার চেষ্টা করেন যা অন্যরা করছে। এটি কিন্তু একধরনের জোর পূর্বক পরিস্থিতি। তারপরে যদি আপনি ব্যর্থ হন তবে আর কথা নেই।
দ্বিতীয়, এর কারণে খাওয়া-দাওয়া তে অনিয়ম থেকে শুরু করে দিনের পর দিন অস্থিরতা এবং ঘুমের ব্যাঘাত সঙ্গে নানা সমস্যা আপনাকে ভাল থাকতে দেবে না।
তাহলে, এর থেকে ভাল থাকার একটিই উপায়। নিজেকে বোঝাতে হবে যে পর্দার আড়ালে সবকিছুই আসল এবং সত্যিই নয়। এটি ধোঁয়াশা এবং মানুষকে উস্কানিমূলক প্রবণতা দেয়। নিজেকে অন্য সৃজনশীল কাজে ব্যস্ত রাখুন। ভাল থাকতে গেলে অল্প সময় বউ পড়ুন। মেডিটেশন করুন এবং নিজেকে সামলে নিয়ে শিখুন। বেশিরভাগ সমিক্ষাই বলে, দিনের তুলনায় রাতে সোশাল মিডিয়ায় লোকজনের আনাগোনা বেশি। কিন্তু সারাদিনের পর রাতেই মানুষের প্রয়োজন হয় পর্যাপ্ত ঘুম এবং বিশ্রামের। এইসময় উচিত চিন্তা ফেলে শান্ত রাখা। দরকার পড়লে গান শুনুন। কিন্তু এই পোকা থেকে নিজেকে বের করে নিয়ে আসুন নয়তও বাসা বেঁধেছে তবে বিস্তার হতে সময় লাগবে না।
ইন্ডিয়ান এক্সপ্রেস বাংলা এখন টেলিগ্রামে, পড়তে থাকুন