ভগবান শ্রীকৃষ্ণ অত্যন্ত জাগ্রত। তাঁর ভক্ত মাত্রেই একথা জানেন। তাঁরা অনুভব করেন, যে শ্রীকৃষ্ণ নানা সময় কীভাবে তাঁদের মধ্যে একটা শান্তির ভাব জাগিয়ে রাখেন। যে শান্তির ভাবে মলিন হয়ে যায়, জীবনে পাওয়া নানা বাধা-বিঘ্ন ও যন্ত্রণা। এদেশেই আছে এমন এক মন্দির, যেখানে ভগবান শ্রীকৃষ্ণের দর্শন লাভ হয়। কথিত আছে, এই মন্দিরে প্রতিরাতে আসেন ভগবান শ্রীকৃষ্ণ, রাধারাণী ও গোপিনীরা। এই মন্দিরের নাম হল নিধিবন মন্দির। মন্দিরটি রয়েছে ভগবান শ্রীকৃষ্ণের লীলাভূমি বৃন্দাবনে। বৃন্দাবন প্রেমের প্রতীক হিসেবে পরিচিত। শ্রীকৃষ্ণ ও রাধার প্রেমলীলার জন্য বৃন্দাবন বিখ্যাত। এই বৃন্দাবনের প্রসিদ্ধ মন্দিরই হল নিধিবন মন্দির। যা নানা রহস্যে ঘেরা।
ভক্তদের বিশ্বাস, এই মন্দিরে আজও শ্রীকৃষ্ণ রাসলীলা করে থাকেন। প্রতিরাতে এই মন্দিরে স্বয়ং শ্রীকৃষ্ণ, রাধিকা এবং অনেক গোপিনীর আবির্ভাব ঘটে। মন্দিরটির কাছে জঙ্গলের গাছগুলোও অত্যন্ত রহস্যময়। যে কোনও কারণেই হোক, গাছগুলোর মাথা থাকে নীচের দিকে। ভক্তদের বিশ্বাস, ভগবানের জন্যই গাছগুলো মাথনত করে রাখে। তাঁরা এ-ও মনে করেন, এই গাছগুলোই আসলে ভগবান শ্রীকৃষ্ণের গোপিনী। যাঁরা রাতের বেলায় রূপ বদল করেন।
ভগবান শ্রীকৃষ্ণের এই মন্দিরে রাতের বেলায় নূপুরের শব্দ শোনা যায়। এই মন্দিরে এক বিশেষ ঘর রয়েছে। সেখানে রুপোর গ্লাস রাখা হয়। পরবর্তী সময় এই গ্লাসে অস্বাভাবিক পরিবর্তন দেখা যায়। ঘরটি রংমহল নামে পরিচিত। সন্ধ্যা-আরতির পর থেকে পরদিন সকাল পর্যন্ত এই মন্দিরে ভক্তদের প্রবেশ পুরোপুরি নিষিদ্ধ। এখানে পুরোহিতরা খাবার সাজিয়ে চলে যান। কথিত আছে, যে ভক্তরা কৌতূহলের বশে ওই নিষিদ্ধ সময়ে এই মন্দিরে গিয়েছেন, তাঁরা বিভিন্ন রোগে আক্রান্ত হয়েছেন। অনেকে অন্ধ হয়ে গিয়েছেন। অনেকে আবার বধিরও হয়ে গিয়েছেন।
আরও পড়ুন- ঘরের কাছেই জাগ্রত মন্দির, যেখানে ভক্তদের মনোবাঞ্ছা পূরণ করেন দেবী
এই মন্দিরের একপাশে একটি কুয়ো আছে। কথিত আছে, রাসলীলা চলাকালীন রাধারাণীর তৃষ্ণা পেয়েছিল। তখন শ্রীকৃষ্ণ বাঁশি দিয়ে এই কুয়ো খুঁড়েছিলেন। মন্দিরটি ঘিরে রয়েছে বহু পৌরাণিক কাহিনি। অনেক বৈজ্ঞানিক এবং ঐতিহাসিক এই মন্দিরের রহস্য উদ্ঘাটনের চেষ্টা করেছেন, কিন্তু পারেননি। তাঁরাও মেনে নিয়েছেন যে এই মন্দিরের বিভিন্ন ঘটনা বেশ রহস্যজনক। যা, তাঁদেরকেও ভাবিয়েছে। আর, এই সব কারণেই নিধিবন আজও তীর্থযাত্রীদের কাছে অত্যন্ত আকর্ষণের জায়গা।