১০ জুন সকালে জীবনাবসান হলো ভারতীয় সাংস্কৃতিক জগতের কিংবদন্তি ব্যক্তিত্ব গিরীশ কারনাড-এর। পদ্মশ্রী, পদ্মভূষণ, সাহিত্য আকাদেমি এবং একাধিক জাতীয় পুরস্কারে সম্মানিত গিরীশ কারনাডের মৃত্যুতে শোকস্তব্ধ বিনোদন জগৎ। নাট্যকার-পরিচালক গিরীশ কারনাড তাঁর নাট্য প্রযোজনা নিয়ে একাধিকবার এসেছেন কলকাতায়, অভিনয়ের সূত্রেও থেকে গেছেন এখানে। সেরকমই এক হিন্দি ছবির জন্য গিরীশ কারনাডের সঙ্গে কাজ করেছেন নৃত্যশিল্পী সুকল্যাণ ভট্টাচার্য। এদিন ইন্ডিয়ান এক্সপ্রেস বাংলার সঙ্গে ভাগ করে নিলেন সেই অভিজ্ঞতা।
নাচের মহড়ায় গিরীশ কারনাড
সুকল্যাণের কথায়, "ওঁর সঙ্গে আমার আলাপ হয়েছিল একটি হিন্দি ছবির সূত্রে। এর আগে নাগামন্ডলের মতো ওঁর তৈরি নাটক আমি দেখেছি। ছবির সিকুয়েন্সে ছিল গিরীশজি গুরু, এবং তিনি তাঁর শিষ্য রূপা গঙ্গোপাধ্যায়কে নাচের তামিল দিচ্ছেন। আর এই কারণেই উনি নাকি বলেছিলেন আমি নাচের মহড়া না করে কাজটা করব না। সেজন্যই আমাকে তলব করা হয়েছিল। টলি ক্লাবে শুরু হয়েছিল রিহার্সাল। আমি পৌঁছে ওঁর সঙ্গে আলাপ হওয়ার পর কাজ শুরু করব। এমন সময় উনি ঝুঁকে আমার পা ছুঁতে যান। আঁতকে উঠে সরে গিয়েছিলাম।
"ওঁর আমি নখের যোগ্যও নই। বলেছিলাম, 'এ কী করছেন! আপনার সামনে দাঁড়ানোটাই ধৃষ্টতা!' গিরীশজি বলেছিলেন, 'গুরু ব্রহ্মা, গুরু বিষ্ণু, গুরু দেব মহেশ্বর। তুমি এখন আমার গুরু, প্রণাম করে ছাত্রের মতো কাজটা শুরু করতে চাই। জানি তুমি আমার ছেলের থেকেও ছোট।' এখনও কথাগুলো মনে করলে গায়ে কাঁটা দেয়। আজ খবরটা শুনে যে কী মন খারাপ হয়ে গিয়েছে।
সুকল্যাণ ভট্টাচার্যের কাছে তালিম নিচ্ছেন কিংবদন্তী
"'শঙ্করভরণ' ছবিতে সম্ভবত উনি নাচ করেছেন। সেই অভিজ্ঞতাও আমার সঙ্গে ভাগ করে নিয়েছিলেন তিনি। ফোনে আমাদের যোগাযোগ ছিলই। ওঁকে কলকাতায় আমার নাচের অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি হিসেবে আমন্ত্রণ জানানোর কথাও হয়েছিল। বলেছিলেন আসবেন। কিন্তু সে আসা আর হলো না।"