রবিবার মানেই সূর্যের বার। কারণ, সূর্যেরই অপর নাম রবি। হিন্দুশাস্ত্রে তিনি যেমন রবি নামে গ্রহ। তেমনই সূর্য নামে দেবতা। বিশ্বের বিভিন্ন প্রান্তেই, বিভিন্ন ধর্মে সূর্যকে দেবতা হিসেবে মানা হয়। তাঁর মন্দিরও রয়েছে বিভিন্ন জায়গায়।
তার মধ্যে ভারতে যে মন্দিরের কথা সবার মাথায় আসে, তা হল কোণার্কের সূর্য মন্দির। পুরী থেকে ৩৫ আর ভুবনেশ্বর থেকে ৬৫ কিলোমিটার দূরে কোণার্ক শহরে এই মন্দির। এর আকৃতি রথের মত। ভারতের সাতটি বিস্ময়ের অন্যতম এই মন্দির। বিশ্বের অন্যতম ঐতিহ্যবাহী স্থান। ১,২৫৫ খ্রিস্টাব্দে পূর্ব গঙ্গ রাজবংশের রাজা প্রথম নরসিংহদেব মন্দিরটি নির্মাণ করিয়েছিলেন।
এর পরিকাঠামো লোহার বিম দিয়ে তৈরি হয়েছিল। কোণার্ক নামটি সংস্কৃত কোণ আর অর্ক (সূর্যের অপর নাম) সমন্বয়ে তৈরি। যার অর্থ, এই মন্দির আসলে সূর্যের বিভিন্ন কোণের অবস্থান। কথিত আছে, শ্রীকৃষ্ণের পুত্র শাম্ব এখানে এসে সূর্যদেবের তপস্যা করে হারানো রূপ ফিরে পেয়েছিলেন।
কাশ্মীরের অনন্তনাগে মার্তণ্ড মন্দির ছিল। যা আসলে সূর্যমন্দির। সূর্যেরই অপর নাম মার্তণ্ড। কিন্তু, এই মন্দিরও ধ্বংস হয়ে গিয়েছে হামলাকারীদের আক্রমণে। গুজরাটের মোধেরাতে রয়েছে একটি সূর্য মন্দির। ১০২৬ সালে চালুক্য রাজবংশের সময়ে প্রথম ভীমার শাসনকালে মন্দিরটি তৈরি হয়েছিল। তবে, এই মন্দির বর্তমানে আর উপাসনার কাজে ব্যবহৃত হয় না। বর্তমানে পশ্চিমবঙ্গের পুরুলিয়ায় সাহেব বাঁধে রয়েছে একটি সূর্যমন্দির। এছাড়াও গোয়ালিয়রে রয়েছে সূর্যমন্দির। ওড়িশার কটরমলে আছে সূর্যমন্দির। গয়ায় সূর্যমন্দির আছে। রাঁচিতেও সূর্যমন্দির আছে।
আরও পড়ুন- কে দেবী সন্তোষী, কেন শুক্রবারেই হয় তাঁর পুজো, জানুন মাহাত্ম্য
হিন্দু শাস্ত্রমতে কশ্যপ ও অদিতির পুত্র হলেন সূর্য। শনি, যমরাজ, যমুনা, অশ্বিনীকুমাররা হলেন সূর্যের সন্তান। আর, তিনি হনুমানের গুরুদেব। আবার, তিনিই দেবী দুর্গার তিন নেত্রের অন্যতম। সূর্য হলেন সৌভাগ্য আর সমৃদ্ধির দেবতা। সূর্য উপাসনা করলে পরিবারে সুখ-শান্তি বজায় থাকে। শরীর ও মন চাঙ্গা হয়। কর্মক্ষেত্রে সফলতা লাভের সম্ভাবনা বাড়ে, ভয় দূর হয়, খারাপ শক্তির প্রভাব কমে। একইসঙ্গে অর্থনৈতিক উন্নতি লাভ হয়, মা-বাবা হওয়ার স্বপ্ন পূরণ হয়, দুর্ঘটনার হাত থেকে রক্ষা পাওয়া যায়, নানা ধরনের রোগের হাত থেকেও রেহাই মেলে। পূরণ হয় মনের ইচ্ছা।