কলকাতাসহ গোটা রাজ্যে ছড়িয়ে পড়েছে করোনা-আতঙ্ক। এই মুহূর্তে ভারতে এই মারণ রোগে প্রাণ হারিয়েছেন দু'জন। বিশ্ব জুড়ে মৃতের সংখ্যা ছাড়িয়েছে পাঁচ হাজার। তবে পশ্চিমবঙ্গে এখনও এই ভাইরাসে কেউ আক্রান্ত না হলেও দেশজুড়ে আক্রান্তের সংখ্যা বর্তমানে ৮২। সংখ্যাটা রাতারাতি বেড়েও চলেছে। এই অবস্থায় কী উপসর্গ দেখা গেলে, কখন কোন হাসপাতালে যাওয়া দরকার, সে সম্পর্কে সম্যক ধারণা থাকা ভীষণ জরুরি। সেই নিয়েই চিকিৎসকদের সঙ্গে কথা বলল ইন্ডিয়ান এক্সপ্রেস বাংলা।
কোন উপসর্গ দেখলে হাসপাতালে যেতে হবে?
পালমোনোলজিস্ট ডাঃ অশোক সেনগুপ্ত বলছেন, "করোনা ভাইরাসের সঙ্গে আর পাঁচটা সর্দি কাশির প্রাথমিক উপসর্গ খুব কিছু আলাদা না। গলা ব্যথা, মাথা ব্যথা, হাঁচি-কাশি গা ম্যাজম্যাজ সাধারণ জ্বরেও হয়। তবে করোনার ক্ষেত্রে জ্বর খুব বাড়বে, দেহের তাপমাত্রা ১০৩-১০৪-এ উঠে যেতে পারে। গলা ব্যথা বাড়বে। শুকনো কাশি এবং শ্বাসকষ্ট হলে তবে তা চিন্তার বিষয়"। তবে হাসপাতালে যাওয়ার দরকার হলে সরকারি হাসপাতালেই যাওয়া দরকার। কারণ, বেসরকারি হাসপাতাল এখনও করোনা মোকাবিলার সবরকম পরিষেবা প্রদানে সক্ষম নয়।
সাধারণ মানুষ কী সতর্কতা নেবেন?
অলংকরণ- অভিজিৎ বিশ্বাস
আরও পড়ুন, ঘরে বসেই কী ভাবে বানাবেন সার্জিকাল মাস্ক?
রাজ্যের একমাত্র সরকারি সুপার স্পেশালিটি হাসপাতাল এসএসকেএম-এর সুপার ডঃ রঘুনাথ মিশ্র জানালেন, "ইওরোপিয় দেশ, চিন, ইতালি, ইরান, সিঙ্গাপুর, থাইল্যান্ড, জাপান- এই দেশগুলো থেকে সদ্য ঘুরে এসেছেন, এমন ইতিহাস থাকলে এবং এর সঙ্গে বাকি উপসর্গগুলি মিলে গেলে তবেই সেই রোগীকে আইসোলেশনে রেখে পরীক্ষা করা হচ্ছে। যদি পজিটিভ রিপোর্ট পাওয়া যায়, তখনই করোনা আক্রান্ত বলা হবে"। উপসর্গ এবং শর্ত মিলে গেলে প্রয়জনীয় তথ্যপ্রমাণ নিয়ে সরকারি নির্দেশাবলী মেনে সরকারি হাসপাতালে যেতে হবে"। এখনও পর্যন্ত রোগীকে বেলেঘাটা আইডি হাসপাতালে এক দিন রেখে তাঁর দেহ থেকে নমুনা সংগ্রহ করা হচ্ছে। নমুনা বেলেঘাটা আইডি হাসপাতাল থেকে নাইসেড ছাড়াও এসএসকেএম হাসপাতালেও পাঠানো হচ্ছে। দুপুর একটার আগে নমুনা এসে পৌঁছলে রিপোর্ট পাওয়া যাবে সন্ধ্যার মধ্যেই।
ক্যালকাটা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের সুপার ডঃ ইন্দ্রনীল বিশ্বাস জানালেন, "বিদেশ থেকে আগত যে কোনও মানুষের শারীরিক সমস্যা হলে তথ্যপ্রমাণ নিয়ে সরকারি হাসপাতালে যেতে পারেন, কলকাতার সমস্ত সরকারি হাসপাতাল, জেলা হাসপাতাল এবং মহকুমা হাসপাতালেই করনোর পরীক্ষার পরিষেবা রয়েছে। নাইসেড এবং এসএসকেএম-এ দুটি ল্যাবরেটরি খোলা হয়েছে নমুনা পরীক্ষার জন্য। করোনা আক্রান্তের কাছাকাছি এলে তাঁরও পরীক্ষা করানো দরকার। তবে এ রাজ্যে করোনা পজিটিভ রোগী এখনও নেই। সুতরাং সেরকম রোগীর কাছাকাছি থাকার সম্ভাবনা এ রাজ্যে নেই"।