মানুষের জীবনে এখন দুই সঙ্গী, নয়তো মাস্ক আর নয়তো কম্পিউটার। সে কর্মক্ষেত্রে হোক, কিংবা পড়াশোনায় সারাদিন এর দিকে তাকিয়ে থাকতে থাকতে যেন চোখের একেবারেই দিশেহারা অবস্থা। কিন্তু আসলেই করার কিছু নেই। বিশেষ করে যারা প্রথম থেকেই চশমা ব্যাবহার করেন তাদের কাছে কিন্তু এটি বেশ সমস্যার। এক নাগাড়ে তাকিয়ে থাকতে থাকতে নয় চোখে আবছা ভাব কিংবা তুখোড় মাথা যন্ত্রণা!
ডিজিটাল এই জীবনযাত্রা মানুষের সঙ্গে সঙ্গেই তার পারিপার্শ্বিক জীবন কে করে তুলেছে জর্জরিত। সবথেকে বেশি যেন চোখ এবং তার সম্পর্কিত সবকিছু কেই। বাড়ি বসে কাজ করতে গিয়ে বেশিরভাগ মানুষের এখন সমস্যা কম্পিউটার ভিশন সিনড্রোম। কী বলছেন এই বিষয়ে চিকিৎসকরা?
তুষার গ্রোভার ( ভিশন আই কেয়ার, নিউ দিল্লি ) বলছেন, চোখের সহ্য করার একটা ক্ষমতা আছে। এবং সেই প্রেক্ষিতে দেখতে গেলে, সারাদিন ল্যাপটপ, কম্পিউটার কিংবা মোবাইলের দিকে তাকিয়ে তাকিয়েই চোখের সহ্য করার মত এক্সপোজার মাত্রা পেরিয়ে যায়। যেহেতু বেশিরভাগ সময়ে আমরা ডিজিটাল স্ক্রিনে ব্যাহত করি সেই কারণেই, স্ক্রিনের সঙ্গে অসামঞ্জস্য বিরূপ প্রতিক্রিয়া সৃষ্টি হয়। যেটি দৃষ্টিশক্তিকে কমজোরী করে তোলে।
কী ধরনের লক্ষণ দেখা যায়?
বেশিরভাগ সময় ধরে কম্পিউটার কিংবা অল্প আলোতে মোবাইল ব্যবহার এসবের কারণে নির্দিষ্ট কিছু সমস্যার সৃষ্টি হয় তার মধ্যে, চোখে যন্ত্রণা, চোখ থেকে জল পড়া, মাথা ব্যাথা, আবছা দৃষ্টি, ঘাড় এবং কাঁধে যন্ত্রণা এগুলি খুব স্বাভাবিক তবে কষ্টদায়ক। শুধু তাই নয়, এই ধরনের ব্যথা এবং যন্ত্রণা রাতে ঠিক করে ঘুমাতে দেয় না। মনোযোগ ব্যাঘাত ঘটায়, সারা শরীরের সঙ্গে মনেও অস্বস্তি সৃষ্টি করে। সঙ্গেই চিকিৎসক গ্রোভার বলেন এর থেকে কম্পিউটার ভিশন সিনড্রোম সৃষ্টি হয়! সেটি আসলেই কী?
একনাগাড়ে কম্পিউটার স্ক্রিনে তাকিয়ে থাকতে গেলেও চোখের দৃষ্টি স্থির থাকা প্রয়োজন। এবং এর থেকেই জোর পরে চোখের পেশীর ওপরে। অনেক সময় আলোর কমতি কিংবা স্ক্রিনের উজ্জ্বলতা থেকেও কিংবা স্ক্রিন যদি মসৃন না হয়, সেই থেকেও হতে পারে চোখের কাঁপুনি এবং যন্ত্রণার মত সমস্যা। সঙ্গেই চোখের পলক তখন কম পরে যখন মানুষ মনোযোগ দিয়ে একটি কাজ করেন।
বিশেষ করে বাড়িতে বসে যারা কাজ করছেন, তাদের মধ্যে বসার গাফিলতি, স্থিরদৃষ্টে কাজ করা, এবং যারা চশমা অথবা লেন্স ব্যবহার করেন, তাদের কিন্তু অবশ্যই সতর্ক থাকা উচিত। অন্তত একভাবে তাকিয়ে থাকা থেকে যথেষ্ট দূরে থাকা উচিত। সবসময় নিজের নজরের বিরুদ্ধে গিয়ে কাজ করা উচিত নয়। তাই সাবধান থাকুন।
তাহলে কী উপায়ে ভাল থাকবেন?
- স্ক্রিন নিয়ে সতর্ক থাকুন। খুব ছোট আকারের স্ক্রিন একেবারেই ব্যবহার করবেন না।
- দ্বিতীয়, আলোর দিকে এবং বিপরীত বিবেচনা করেই কম্পিউটার রাখার ব্যবস্থা করুন। সঠিক স্থানে না রাখলে বেশ অসুবিধা।
- চোখ থেকে পর্যাপ্ত দূরত্ব, অন্তত এক হাত হওয়া উচিত। পর্দা এবং চোখের কোণের মধ্যে অবশ্যই দূরত্ব রাখতে হবে।
- শুধু চশমা নয়, ইউভি রশ্মি দ্বারা নির্মিত চশমা অবশ্যই ব্যবহার করা উচিত।
- অত্যন্ত গুরুত্বের সঙ্গে ২০-২০-২০ নিয়ম পালন করতে হবে। অর্থাৎ ২০ মিনিটে পরপর ২০ সেকেন্ডের জন্য ২০ ফুট দূরে দেখতে হবে। সঙ্গেই সবুজের দিকে তাকিয়ে থাকুন। সবথেকে বড় কথা চোখকে বিশ্রাম দিন।
ইন্ডিয়ান এক্সপ্রেস বাংলা এখন টেলিগ্রামে, পড়তে থাকুন