/indian-express-bangla/media/media_files/2025/10/22/tara-3-2025-10-22-04-37-13.jpg)
Tara Temple Kolkata: কলকাতায় তারা মায়ের মন্দির।
/indian-express-bangla/media/media_files/2025/10/22/tara-1-2025-10-22-04-37-32.jpg)
কালীতীর্থে তারার বাস
Tara Temple Kolkata: কলকাতাকে অনেকেই এখনও ভালোবেসে 'কলিকাতা' বলেন। অনেকে বিশ্বাস করেন, মা কালী নাম থেকেই এই শহরের নামের উৎপত্তি। এই শহর কালীক্ষেত্র, অর্থাৎ দেবী কালী ও তাঁর তত্ত্বে ভরপুর এক নগরী। তাই কলকাতার অলিগলিতে দেখা মেলে অসংখ্য কালীমন্দিরের।
/indian-express-bangla/media/media_files/2025/10/22/tara-2-2025-10-22-04-38-03.jpg)
দশমহাবিদ্যার এক রূপ
তবে দশমহাবিদ্যার অন্যতম দেবী তথা কালীর ঠিক পরের দেবী হলেও তারার মন্দির কিন্তু তেমন একটা এই শহরে দেখা যায় না। তবে, শহর কলকাতাতেই এক জায়গায় সেই মন্দির আছে। সেটা হল, উত্তর কলকাতার গিরিশ পার্ক ও তারাসুন্দরী পার্ক-এর সংলগ্ন এলাকায়। ঠিকানা- ৫১, শিকদার পাড়া স্ট্রিট, কলকাতা–৭।
/indian-express-bangla/media/media_files/2025/10/22/tara-4-2025-10-22-04-38-30.jpg)
নতুন নয়
এই মন্দির নতুন গজিয়ে ওঠেনি। বরং বলা ভালো, এই মন্দির কলকাতার ইতিহাসে ধর্ম, সাধনা ও ঐতিহ্যের এক অনন্য মেলবন্ধন। ২৫০ বছরেরও বেশি পুরনো এই মন্দিরে আজও নিয়মিত পূজা, আরতি ও অন্নকূট উৎসব পালিত হয় হাজার হাজার ভক্তের উপস্থিতিতে।
/indian-express-bangla/media/media_files/2025/10/22/tara-5-2025-10-22-04-39-02.jpg)
যেভাবে গড়ে উঠল মন্দির
একসময় এই অঞ্চল ছিল ঘন জঙ্গল ও সুতানুটি এলাকার অন্তর্গত। সেই সময় এক গুপ্ত সাধক তটিনী চক্রবর্তী স্বপ্নে মা তারার দর্শন পান। স্বপ্নাদেশ অনুযায়ী তিনি জঙ্গলের মধ্যে ব্যাঘ্রচর্ম পরিহিত এক কষ্টিপাথরের তারামূর্তি আবিষ্কার করেন। সেই মূর্তি নিয়েই শুরু হয় তারামায়ের পূজা ও আরাধনা। পরবর্তীতে তটিনীর উত্তরসূরি প্রাণকৃষ্ণ ও জয়গোপাল চক্রবর্তী মন্দিরের প্রচার বাড়ান। জয়গোপালের পাঁচ পুত্র— আশুতোষ, সদানন্দ, ভোলানাথ, চন্দ্রনাথ ও শম্ভুনাথ — সকলেই দেবীর পূজা ও মন্দির রক্ষণে যুক্ত ছিলেন। ১৩০৯ বঙ্গাব্দের ৬ চৈত্রে আশুতোষ চক্রবর্তীর উদ্যোগে বর্তমান পাথরবাঁধানো মন্দিরটি নির্মিত হয়। সেই সময় থেকেই ভক্তদের ভিড় ও দানের ধারা ক্রমশ বাড়তে থাকে।
/indian-express-bangla/media/media_files/2025/10/22/tara-6-2025-10-22-04-39-58.jpg)
দেবীর মূর্তি
এখানে দেবী তারার বিগ্রহটি অত্যন্ত শাস্ত্রীয়। তিনি চতুর্ভুজা — চার হাতে খড়গ, কর্তৃকা, নীলপদ্ম ও কপালপাত্র। দেবীর মাথায় রুপোর মুকুট, নাকে সোনার নথ, টানাটানা চোখে যেন অলৌকিক দীপ্তি। প্রায় দুই ফুট উচ্চতার এই কষ্টিপাথরের মূর্তি মন্দিরকে আলোকিত করে রেখেছে। অনেক ভক্ত এই মন্দিরকে 'তারামা কালী মন্দির' বলেও ডাকেন। কারণ মা কালী ও তারার তত্ত্বে অনেক মিল রয়েছে।
/indian-express-bangla/media/media_files/2025/10/22/tara-7-2025-10-22-04-40-36.jpg)
মন্দিরের বর্ণনা
দেবীর ডানপাশে শায়িত আছেন শিব, পাশে সাধক বামদেবের ছোট বিগ্রহ। এছাড়াও রয়েছে রামকৃষ্ণদেব, মা সারদা ও অন্যান্য দেবদেবীর ক্ষুদ্র মূর্তি ও পটচিত্র। গর্ভগৃহের দরজার ওপরের মা তারার চিত্রটি বিশেষভাবে ভক্তদের দৃষ্টি আকর্ষণ করে। প্রবেশমুখে রয়েছে প্রাচীন হাড়িকাঠ, বাঁ পাশে দুটি পুরনো শিবমন্দির — চণ্ডীশ্বর ও জগদীশ্বর। তারপর লম্বা নাটমন্দির, আর তার পিছনেই মূল গর্ভমন্দিরে রয়েছে রুপোর সিংহাসনে মা তারা। গর্ভমন্দিরটি পাথর বাঁধানো ও সুদৃশ্যভাবে নির্মিত, যা প্রাচীন বঙ্গীয় স্থাপত্যের নিদর্শন।
/indian-express-bangla/media/media_files/2025/10/22/tara-8-2025-10-22-04-41-29.jpg)
দর্শনের সময়
এই মন্দিরের সবচেয়ে বড় উৎসব হল অন্নকূট উৎসব, যা পালিত হয় কালীপুজোর পরের দিন। সেই দিন হাজার হাজার ভক্ত যোগ দেন দেবী দর্শনে ও প্রসাদগ্রহণে। এছাড়া প্রতিদিন সকালে ও রাতে আরতি অনুষ্ঠিত হয় এখানে। দর্শনের সময় সকালে ভোর ৫টা থেকে দুপুর ২টো, বিকেলে ৪টে থেকে রাত ১০টা, সন্ধ্যারতির সময় রাত ৮টা ৩০ থেকে ৯টা।
/indian-express-bangla/media/media_files/2025/10/22/tara-9-2025-10-22-04-42-42.jpg)
পথনির্দেশ
গিরিশ পার্ক মেট্রো স্টেশন থেকে হেঁটে বা রিকশায় যাওয়া যায় সহজেই। তারাসুন্দরী পার্কের পাশের সরু গলি দিয়ে ঢুকলেই দেখা মিলবে মন্দিরের প্রবেশদ্বার। কালীকৃষ্ণ ঠাকুর স্ট্রিট বা পুঁটে কালীতলার দিক দিয়েও পৌঁছানো যায় সহজে। এই মন্দিরের সবচেয়ে বড় আকর্ষণ হল, এর ধ্যানসম্মত তারামূর্তি এবং ঐতিহ্যবাহী পূজা-পদ্ধতি। কলকাতার বহু পুরনো মন্দিরের মধ্যে এটি অন্যতম। এখানে দেবীকে এখনও তন্ত্রশাস্ত্রীয় রীতিতে আরাধনা করা হয়। উত্তর কলকাতার এই মন্দির কেবল ধর্মীয় স্থান নয়, এটি শহরের ইতিহাস, বিশ্বাস ও সংস্কৃতির অমূল্য অধ্যায়।
/indian-express-bangla/media/agency_attachments/2024-07-23t122310686z-short.webp)
Follow Us