Advertisment

জানেন থ্যালাসেমিয়া কী, এর কারণ, লক্ষণ নির্ণয় ও চিকিৎসা কীভাবে হয়?

বিশ্বে প্রতিবছর একলক্ষ শিশু থ্যালাসেমিয়া নিয়ে জন্মগ্রহণ করে।

author-image
Chinmoy Bhattacharjee
New Update
Thalassemia

থ্যালাসেমিয়া রোগের নামটি অনেকের কাছেই পরিচিত। তবে, এই রোগের ব্যাপারে সকলে বিস্তারিত তেমন একটা জানেন না। পরিসংখ্যান কিন্তু বলছে, বিশ্বে প্রতিবছর ১ লক্ষ শিশু এই রোগ নিয়ে জন্মগ্রহণ করেন।

Advertisment

থ্যালাসেমিয়া কী?

থ্যালাসেমিয়া রক্তের একটি রোগ। এই রোগ মা-বাবার থেকে ত্রুটিপূর্ণ জিনের মাধ্যমে সন্তানের শরীরে আসে। তাই এটি একটি বংশগত রোগ। এই রোগে আক্রান্তের শরীরের হিমোগ্লোবিনের পরিমাণ কম থাকে। হিমোগ্লোবিন শরীরের বিভিন্ন অংশে অক্সিজেন বয়ে নিয়ে যায়। হিমোগ্লোবিন তৈরি হয় আলফা এবং বিটা প্রোটিন দিয়ে। যদি এই প্রোটিনগুলোর উৎপাদন কমে যায়, তবে শরীরে হিমোগ্লোবিনের উৎপাদনও কমে যায় আর, থ্যালাসেমিয়া হয়।

অ্যানিমিয়া থেকে অবসাদ

আলফা আর বিটা প্রোটিন তৈরি হয় জিন থেকে। গবেষকরা বলেন, বাবা-মায়ের মধ্যে একজন থ্যালাসেমিয়ার বাহক হলে, সন্তানদের থ্যালাসেমিয়া হওয়ার সম্ভাবনা কম থাকে। থ্যালাসেমিয়া বহনকারী সাধারণত রক্তে অক্সিজেনের স্বপ্লতা বা অ্যানিমিয়াতে ভুগে থাকেন। এই অ্যানিমিয়ার ফলে আসে অবসাদগ্রস্ততা। কারও কারও অঙ্গহানিও পর্যন্ত হয়ে থাকে।

থ্যালাসেমিয়া কেন হয়?

মানবদেহে লোহিত কণিকার আয়ু তিন মাস। অস্থিমজ্জায় অনবরত লোহিত কণিকা তৈরি হয়। থ্যালাসেমিয়া আক্রান্তদের ক্ষেত্রে লোহিত কণিকার আয়ু কম থাকে। তাঁদের হিমোগ্লোবিন ঠিকমতো তৈরি না-হওয়ায় রক্তের লোহিত কণিকাগুলো সহজেই ভেঙে যায়। আর অস্থিমজ্জার পক্ষে লোহিত কণিকা তৈরি করা সম্ভব হয় না। একইসঙ্গে, থ্যালাসেমিয়া আক্রান্তকে নিয়মিতভাবে রক্ত গ্রহণ করতে হয় বলে রক্তে আয়রনের পরিমাণ ধীরে ধীরে বেড়ে যায়। যাতে প্লীহা আয়তনে বড় হয়ে যায়। পরবর্তী কালে শরীরে অতিরিক্ত আয়রন জমা হওয়ায় মস্তিষ্ক, হৃদপিণ্ড, প্যানক্রিয়াস, যকৃত এবং অন্ডকোষের মত বিভিন্ন অঙ্গের কার্যক্ষমতা নষ্ট হয়ে যায়।

আরও পড়ুন- জন্মদিনে বিশ্বকবি স্মরণ, রসময় রবীন্দ্রনাথের নানা দিক

থ্যালাসেমিয়ার চিকিৎসা

শিশুরাই যেহুতু থ্যালাসেমিয়ায় আক্রান্ত হয়, তাই তাঁদের সঠিক চিকিৎসা হতে পারে একমাত্র শিশু রক্তরোগ বিশেষজ্ঞের অধীনে। মাইনর থ্যালাসেমিয়ার ক্ষেত্রে সাধারণত চিকিৎসার কোনও প্রয়োজন হয় না। মেজর থ্যালাসেমিয়ার ক্ষেত্রে প্রয়োজনে বছরে ৮ থেকে ১০ বার রক্তগ্রহণ করতে হয়। অতিরিক্ত আয়রন জমে যাতে যকৃত বিকল হয়ে না-যায়, সেজন্য আয়রন চিলেশন থেরাপির মাধ্যমে অতিরিক্ত আয়রন শরীর থেকে বের করে দেওয়া হয়। অস্থিমজ্জা প্রতিস্থাপনের মাধ্যমে থ্যালাসেমিয়া থেকে সম্পূর্ণ মুক্ত হওয়া যায়। সেজন্য একজন ম্যাচ ডোনার লাগে। পাশাপাশি রোগীকে আয়রন এবং ফলিক অ্যাসিড খেতে হয়। সুষম ও পুষ্টিকর খাবার, বিশেষ করে ক্যালসিয়াম, জিংক, ভিটামিন ডি সমৃদ্ধ খাবার খেতে হয়।

blood test thalassemia hidden diseases
Advertisment