৮ মার্চ, দিনটা মেয়েদের কেউ অনুগ্রহের দান হিসেবে দেন নি, এটা নারীদের অর্জিত অধিকার। দিনযাপনের কায়িক শ্রম থেকে একটা দিন তো পাওয়া গেল উদযাপনের, এই বা কম কীসে? কিন্তু গয়না, প্রসাধনী, শাড়ির দামে ছাড়, বিজ্ঞাপনের ঘেরাটোপ ভেঙে স্বমহিমায় এগিয়ে চলতে শেখানোয় ব্রতী ব্রিটিশ কাউন্সিল, বিগত সত্তর বছর ধরে। তাদের এই প্রয়াসকে আরও একধাপ এগিয়ে দিচ্ছে ফুটবল কোচ কুন্তলা ঘোষ দস্তিদারের পথচলা।
বিশ্বকাপে 'ক্যাপ্টেন’স আর্মব্যান্ড' উঠেছিল যাঁর হাতে, সেই কুন্তলা নিরন্তর সংগ্রাম করেছেন মেয়েদের ফুটবল নিয়ে। রাজ্যে মহিলা ফুটবল কোচ বাড়ানোর জন্য বর্তমানে উপযুক্ত প্রশিক্ষণ দিচ্ছেন তিনি। ''প্রিমিয়ার লিগ আর ব্রিটিশ কাউন্সিল পাশে না থাকলে এটা সম্ভব হত না। এর অংশ হতে পেরে আমি গর্বিত,'' বলছিলেন কুন্তলা। মহিলা ফুটবলার নিয়ে কাজ ওঁর রোজনামচা। কুন্তলা বললেন, "ইউনাটইটেড স্পোর্টসের তরফে কমিউনিটি ডেভলপমেন্টে কাজ শুরু করি, মেয়ে কোচ বলে অনেক খোঁচাও সহ্য করতে হয়েছে। সেখান থেকেই যোগাযোগ ব্রিটিশ কাউন্সিলের সঙ্গে।"
আরও পড়ুন, এক চুমুকেই মন ভাল, নারী নক্ষত্রের ঈশ্বর সংকল্প
"কিছুদিন আগেই মুর্শিদাবাদে গিয়েছিলাম ট্রেনিং দিতে। ছেলেদের ফুটবল প্রশিক্ষণ যাতে ঠিকমতো দিতে পারেন, সেইজন্য একজন মা কোচের ট্রেনিং নিচ্ছেন। এগুলোই তো প্রাপ্তি। মেয়েরা এগিয়ে আসছে। ভারতীয় দলের কোচ হলে এই পাওয়াগুলো থেকে বঞ্চিত হতাম," প্রায় এক নিশ্বাসে কথাগুলো বললেন কুন্তলা।
তবে কেবলমাত্র খেলা নয়, সঙ্গীতের বিষয়েও মনোযোগ রয়েছে তাদের। ইলেকট্রনিক মিউজিকে মেয়েদের আগ্রহ বাড়াতে উদ্যোগী কাউন্সিল। নাচের জন্য তো বিদেশি কোলাবরেশনও রয়েছে। সম্প্রতি ৭০ জনকে বৃত্তি দিয়ে বিদেশে পড়াশোনার সুযোগও তৈরি করা হচ্ছে। সারাবছরের অনলস প্রয়াসে ইংরাজী শিক্ষা, বিজ্ঞানমনস্কতা বাড়ানোর কাজ করা হচ্ছে কেবলমাত্র মেয়েদের জন্য।
আসলে অধিকারের হিসেব নিকেশটা যদি নারীদের হয়, তাহলে সেটা বুঝে নিতে হবে তাঁদেরই। বছরের একটা দিন সেটা মনে করানোর ভনিতা বাদ দিয়ে ৩৬৫টা দিন চোখে আঙুল দেওয়ার কাজটা এভাবেই চালিয়ে যান কুন্তলারা, লক্ষ্য থাকুক স্বনির্ভরতা।