/indian-express-bangla/media/media_files/2025/09/19/shiv-temple-2025-09-19-09-35-18.jpg)
Shiv Temple: শিব মন্দির
Lord Shiva Temple: হাসপাতালে চিকিৎসক জবাব দিয়ে দিয়েছেন। কান্নাভেজা চোখে পরিজনরা বের করে নিয়ে এসেছেন হাসপাতালের চৌহদ্দি থেকে। নিয়ে এসেছেন শিবমন্দিরে। কাতর স্বরে মহাদেবকে ডাকছেন ওই রোগীর মা। ভরসা বলতে, যদি একটা অলৌকিক কিছু ঘটে, এই ভাবনাটুকু! মহাদেব নিরাশ করেননি। সেই রোগী সেরে উঠেছেন। আজও সুস্থ আছেন। এমনটাই দাবি এই মন্দিরের ভক্তদের।
জাগ্রত মন্দির
শুধু এই একটি ঘটনাই নয়। এক প্রসূতির সন্তান হলেই মারা যায়। ফের সন্তান হতে চলেছে, সেই খবর পাওয়া মাত্র রাত ১১টায় তিনি ছুটে এসেছিলেন এই মন্দিরে। সন্তান হওয়ার পর অসুস্থ সন্তানকে নিয়েও এসেছিলেন। ভগবান শংকরের কাছে জানিয়েছিলেন কাতর আর্জি। যাতে অন্তত সেই সন্তান বেঁচে থাকে। তাঁর সেই প্রার্থনায় সাড়া দিয়েছেন ভোলেনাথ। আজও দিব্যি বেঁচে আছে ওই প্রসূতির সেই ছেলে। অনেকটাই বড় হয়ে গিয়েছে, এখন তার বয়স আট বয়স। আজও সেই ছেলেকে নিয়ে প্রায়ই এই মন্দিরে আসেন সেদিনের ওই প্রসূতি মহিলা ভক্ত।
আরও পড়ুন- জন্মেছিলেন চলন্ত ট্রেনে, কিংবদন্তি সুচিত্রা মিত্র সুরের পথে বেঁধেছিলেন সময়কে
ঠিক এতটাই জাগ্রত এই মন্দির। ভক্তদের কাছে ঠিক এতটাই ভরসার জায়গা এই মন্দিরে বিরাজিত দেবাদিদেব। মন্দিরের পুরোহিতদের দাবি, তাঁদের কোনও আলাদা ক্ষমতা নেই। তাঁরা শুধু ভক্তদের সঙ্গেই ভগবানের কাছে প্রার্থনা জানান। যাতে ভক্তদের প্রার্থনা ভগবান পূরণ করেন। এই মন্দিরে যা কিছু অলৌকিক ঘটনা ঘটে থাকে, সেটা ভক্তদের প্রার্থনার জন্যই।
আরও পড়ুন- মেষ থেকে মীন, জানুন আজকে কোন টিপস মেনে চললে জীবনে হবেন সফল
আর, যা ঘটে পুরোটাই ভগবানের আশীর্বাদে। পুরোহিতদের হাতে কিছু নেই। ভক্তরা এখানে এসে ভগবানের কাছে প্রার্থনা জানান। নিজেদের মত করে পুজো দেন। এটা সম্পূর্ণই ভক্ত আর ভগবানের ব্যাপার। পুরোহিতরা সাহায্য করেন মাত্র। এমনটাই দাবি মন্দিরের পুরোহিতদের।
আরও পড়ুন- কিছু প্রাণীর চোখ রাতেও জ্বলে! কারণটা জানলে রীতিমতো অবাক হয়ে যাবেন
এখানকার শিবলিঙ্গ স্বয়ম্ভূ। অনেকেই দাবি করেন, স্বয়ম্ভূ শিবলিঙ্গ ধীরে ধীরে বৃদ্ধি পায়। কিন্তু, এই মন্দিরের পুরোহিতদের সোজা কথা, ওসব হয় না। ওসব ভুল ধারণা। এখানকার কয়েকশো বছরের প্রাচীন শিবলিঙ্গ স্বয়ম্ভূ হলেও আগে যা ছিল, এখনও তাই আছে। পুরোহিতরা আরও জানিয়েছেন, এখানে ভগবান শিবের ওপর এককলসি দুধ ঢালা হলে, তা যখন প্রসাদ হিসেবে সরানো হয়, তখন দেখা যায়, তার পরিমাণ অর্ধেক কলসি হয়ে গিয়েছে।
তাঁরা দীর্ঘদিন এই মন্দিরে পুজো করছেন। বংশ পরম্পরায় পুজো করছেন। তারপরও কীভাবে এই রহস্যময় ঘটনাটি ঘটে থাকে, তার ব্যাখ্যা তাঁদের কাছেও নেই বলেই দাবি করেছেন মন্দিরের পুরোহিতরা। তাঁদের দাবি, জলের ক্ষেত্রে এই ঘটনা ঘটে না। শিবলিঙ্গের ওপর যখন জল ঢালা হয়, তখন তার পরিমাণ একই থাকে। কিন্তু, দুধের ক্ষেত্রেই ব্যাপারটা উলটো ঘটে।
আরও পড়ুন- বিখ্যাত পাতালেশ্বর শিবমন্দির, যেখানে ভক্তদের মনোবাঞ্ছা পূর্ণ করেন ভোলেনাথ
আজ যেখানে মন্দির। একসময় সেটা ছিল হলদি নদীর চর। সেই চরেই জেগে উঠেছিল শিবের স্বয়ম্ভূ লিঙ্গ। এখানে ভগবান শিবকে ভোগ হিসেবে গাঁজাও দেওয়া হয়। মন্দিরের আশপাশের বাসিন্দাদের দাবি, রাতে নাকি তাঁরা গাঁজার গন্ধ পান। অনেকে রাতে এই মন্দিরে এসে ভগবানের কাছে ধরনা দেন। তাঁরা রাতে মন্দিরেই কাটান। এমন ভক্তদের দাবি, রাতে নাকি এই মন্দির থেকে অত্যন্ত সুন্দর গন্ধ পাওয়া যায়। কোথা থেকে এই গন্ধ আসছে, আজও তা তাঁরা বুঝতে পারেননি বলেই দাবি ভক্তদের।
এই মন্দির রয়েছে ডিহি গুমাই গ্রামে। থানা নন্দকুমার। পোস্ট অফিস খঞ্চি। জেলা পূর্ব মেদিনীপুর। প্রতি সোমবার দূর-দূরান্ত থেকে শত শত ভক্ত এই মন্দিরে ছুটে আসে। মন্দিরটি রয়েছে ৪১ নম্বর জাতীয় সড়কের কাছে নন্দকুমার আর খঞ্চি স্টপেজের মধ্যে। নন্দকুমার থেকেও এই মন্দিরে সহজে আসা যায়।