শিব অনাদি ও অনন্ত। সেই শিবের কাছে ভক্তদের চাহিদার শেষ নেই। এরাজ্যেই আছে বেশ কয়েকটি জাগ্রত শিব মন্দির। যেখানে ভগবান শংকর ভক্তদের মনোবাঞ্ছা পূর্ণ করেন। এমনই এক মন্দির হল মুর্শিদাবাদের জাগ্রত পাতালেশ্বর শিবমন্দির। যেখানকার অলৌকিক মহিমার সাক্ষী হয়ে স্থানীয় বাসিন্দারা সংস্কার করে দিয়েছেন গোটা মন্দির ও মন্দির চত্বর। প্রাচীর দিয়ে ঘিরে দেওয়া হয়েছে সমগ্র জায়গাটি। তৈরি হয়েছে সুন্দর বাগান। পাশ দিয়ে বয়ে গিয়েছে কাটিগঙ্গা নদী। তা যাতে মন্দিরের কোনও ক্ষতি করতে না-পারে, সেজন্য বাঁধিয়ে দেওয়া হয়েছে ঘাট।
মন্দিরে প্রবেশের মুখে প্রায় ৪০ ফুট উচ্চতার একটি শিবমূর্তি তৈরি করা হয়েছে। এখানকার শিবলিঙ্গ স্বয়ম্ভূ জ্যোতির্লিঙ্গ। শিবলিঙ্গটি যেহেতু পাতাল থেকে মাটি ভেদ করে উঠে এসেছে, তাই এখানকার শিবলিঙ্গের নাম দেওয়া হয়েছে পাতালেশ্বর। শিবলিঙ্গকে ঘিরেই তৈরি হয়েছে মন্দির। প্রায় ৩০০ বছর ধরে এখানে শিব ভগবানের আরাধনা হয়ে আসছে। জাগ্রত ভগবানের দর্শন পেতে সারাবছরই এখানে ভক্তদের সমাগম হয়। দূর-দূরান্ত থেকে ভক্তরা নানা প্রার্থনা নিয়ে এই মন্দিরে শিবের দর্শনে আসেন।
এই মন্দিরে গর্ভগৃহে প্রবেশের আগে রয়েছে ছয় ফুট লম্বা বারান্দা। গর্ভগৃহের চারপাশেই এমন বারান্দা রয়েছে। গর্ভগৃহের দেওয়ালের বাইরে রয়েছে বিভিন্ন মূর্তি। কোথাও রয়েছে হর-পার্বতীর মূর্তি। কোথাও বা অন্য মূর্তি। এই সব মূর্তির পুজোও করেন ভক্তরা। বারান্দা থেকে প্রায় ১০ ফুট নীচে রয়েছে গর্ভগৃহের মেঝে ও শিবলিঙ্গ। ভক্তদের বিশ্বাস এখানে শিবের কাছে যা মানত করা হয় অথবা তাঁর কাছে হাতজোড় করে যা চাওয়া হয়, সেই সব কামনা পূরণ হয়।
আরও পড়ুন- সাঁই ধর্মস্থানের মতই অলৌকিক ক্ষমতাসম্পন্ন দাতা বাবার মাজার, ছাই-স্নানজলে সারে রোগ
কোথায় রয়েছে এই জাগ্রত শিবমন্দির? এই শিবমন্দির রয়েছে মুর্শিদাবাদের কাশিমবাজারে। ইতিহাস বলে, একসময় নাকি এখানে ১০৮টি শিব মন্দির ছিল। তার মধ্যে এখন কেবলমাত্র এই একটি মন্দিরই টিকে আছে। শুধু তাই নয়, এই পাতালেশ্বর শিব মন্দিরই মুর্শিদাবাদের একমাত্র জ্যোতির্লিঙ্গ।