/indian-express-bangla/media/post_attachments/wp-content/uploads/2023/03/Devi_Shitala.jpg)
বেহালা বাসাপাড়ায় দেবী শীতলার মন্দির। ভক্তদের দাবি, দেবী এথানে অত্যন্ত জাগ্রত। প্রতিবছর বৈশাখ মাসে হয় দেবীর বাৎসরিক পুজো। এখানে দেবীর পুজোয় প্রথমে ডালা দেওয়া হয়। পরে দেবীর ঘট ডোবানোর পর্ব শুরু হয়। এখানে দেবীর পুজোয় মোট ন'টি ঘট বসানো হয়। এর মধ্যে একটি ঘট দেবী শীতলার। একটি ঘট জ্বরাসুরের। একটি রক্তবতী, একটি নারায়ণ, এতি দেবী লক্ষ্মীর, একটি বাবা লোকনাথের, একটি মহাদেবের, একটি রাধা-কৃষ্ণের ঘট বসে। এরপর দেবীর পুজো শুরু হয়।
পুজোর সঙ্গে চলে দেবীর গান। তারপর দেবীর চক্ষুদানের পুজো আরতি শুরু হয়। এখানে দেবীর হাজারটি ডালা পড়ে। এখানে দেবীর চোখ পুজো করার সময় জ্বলজ্বল করে। এখানে গোটা এলাকাবাসী পান্তা খেয়ে ব্রত পালন করেন। এখানে দেবীর কাছে যে যা মানত করেন, দেবী সকলের মনস্কামনা পূরণ করেন। মানত পূরণ হলে সেই ভক্তরা ধুনো পুড়িয়ে যান। এখানকার বাৎসরিক পুজোর বিশেষত্ব যে প্রত্যেক পুজোয় বৃষ্টি হবেই। বৃষ্টি উপেক্ষা করেই এখানে প্রচুর ভক্তের সমাগম হয়।
দেবীর ভোগে থাকে ভক্তদের দেওয়া অসংখ্য ডাব, দল, দুধ আর ফলমূল। দেবীর পুজোর পরদিন হয় ডালা বিতরণ। তারপর হয় এলাকাবাসীদের জন্য মহাভোগের আয়োজন। পুজোর দিন দেবীর গান শেষ হলে, দই-ডাবের জনল, পঞ্চগব্য আর গোমূত্র মিশিয়ে চরণামৃত তৈরি করে ভক্তদের মধ্যে বিতরণ করা হয়। গত দু'বছর করোনা অতিমারির জন্য দেবীর পুজো বন্ধ ছিল। পুনরায় ২০২২ সাল থেকে দেবীর পুজো আয়োজিত হচ্ছে। পুজোকমিটির এক সদস্যের দাবি, দেবী তাঁকে স্বপ্নে দেখা দিয়েছেন। করোনার পরবর্তী পুজো বেশ জাঁকজমকের সঙ্গে করতে বলেছেন।
আরও পড়ুন- হাজার বছরের প্রাচীন মন্দির, ভক্তের কামনা পূরণে জাগ্রত দশঘরার বাবা পঞ্চানন
ব্রিটিশ আমল থেকে এই পুজো চলে আসছে। তখন থেকেই রয়েছে দেবীর মন্দিরটি। একবার এক ব্রিটিশ কর্তা দেবীর এই মন্দিরটি ভেঙে দেওয়ার কথা বলেছিলেন। তারপর দেখা গেল, সেই ব্রিটিশ অফিসার নিজেই বহু রোগে অসুস্থ হয়ে মারা যান। এখানে দেবীর চোখের দিকে তাকালে বোঝা যায়, দেবী যেন জীবন্ত হয়ে ভক্তদের আশীর্বাদ দিচ্ছেন। বাসাপাড়ায় আরও দেবদেবীর মন্দির রয়েছে। কিন্তু, স্থানীয় বাসিন্দারা দেবী শীতলাকেই সবচেয়ে বেশি মানেন। দেবীর মন্দিরের পাশেই রয়েছে একটি পুকুর। সেখানে কোনও রোগী স্নান করলে, তাঁর সমস্ত রোগ নির্মূল হয়ে যায়। এমনটাই দাবি ভক্তদের।