scorecardresearch

অসংখ্য মানুষের ভরসা, বিগ্রহ ঠিক কতটা জাগ্রত, আজও হাতেনাতে প্রমাণ পান ভক্তরা

মানত পূরণ হলে পাশের পুকুরে স্নান করে দণ্ডী কেটে পুজো দেন পুণ্যার্থীরা।

Narna Panchayat Temple 1

আজ থেকে প্রায় আটশো বছর আগে হাওড়া জেলার ডোমজুড়ের নারনা গ্রামে পঞ্চানন দেবের মন্দিরে শুরু হয়েছিল পুজো। অত্যন্ত জাগ্রত এই মন্দিরে সারাবছর ভক্তদের ভিড় লেগেই থাকে। এখানকার বিগ্রহ ঠিক কতটা জাগ্রত, হাতেনাতে তার প্রমাণ পান ভক্তরা। এমনটাই কথিত আছে। এই মন্দিরে আসতে হলে, হাওড়া থেকে বাসে ডোমজুড় আসতে হয়। সেখান থেকে টোটোয় চেপে নারনা আসা যায়। অথবা, দ্বিতীয় হুগলি সেতু থেকে কোনা হয়ে জগদীশপুর। সেখান থেকে অটোয় চেপে নারনায় পৌঁছনো যায়। সব মিলিয়ে মন্দিরে পৌঁছতে সময় লাগে প্রায় দেড় ঘণ্টা।

ডোমজুড় থানা এলাকার অতি প্রাচীন গ্রাম এই নারনা। গ্রামে একসময় গোয়ালারাই বেশি থাকতেন। গ্রামের পশ্চিম দিকে রয়েছে বিরাট এক অশ্বত্থ গাছ। তার নীচে রয়েছে নারনা পঞ্চানন দেবের মন্দির। কথিত আছে, তুবারাম ঘোষ নামে এই গ্রামের এক বাসিন্দা পঞ্চানন দেবের স্বপ্নাদেশ পেয়েছিলেন যে পাশের পুকুরে দেবতা আছেন। পরদিন সকালে তিনি পুকুরে গিয়ে দেখতে পেয়েছিলেন যে, সেখানে একটি ঘট রয়েছে। তিনি সেটিকে তুলে এনেছিলেন। কিন্তু, ঘটটিকে নিয়ে এলে কীভাবে তার পুজো করবেন, সেই ভেবে তিনি চিন্তায় পড়েছিলেন। শেষ পর্যন্ত সাত-পাঁচ ভেবে তুবারাম ঘোষ ঘটটিকে আবার পুকুরেই ফেলে দিয়েছিলেন।

কথিত আছে, সেই রাতেই তুবারাম ঘোষ ফের স্বপ্নাদেশ পেয়েছিলেন। সেই স্বপ্নাদেশে বলা হয়েছিল, এক অশ্বত্থগাছ রেখে, সেই স্থানে যেন ঘটটির পুজো করা হয়। পুকুরে চাল ধুতে যাওয়ার সময় কয়েকটি চাল দিয়ে পুজো করলেই দেবতা সন্তুষ্ট হবেন। আর, দেবতার আশীর্বাদে একদিন তুবারাম ঘোষের পরিবারেরও শ্রীবৃদ্ধি ঘটবে। সেইমতো পরদিন ওই পুকুরের পাড়ে তুবারাম ঘোষ গিয়েছিলেন। সেই সময় আশ্চর্যজনকভাবে দেখতে পেয়েছিলেন যে ঘট তিনি জলে ফেলে দিয়েছিলেন, তা পুকুরের ঘাটের পাশে রয়েছে। ঘটটিকে তুলে এনে এরপর তুবারাম ঘোষ একটি মাটির বেদি বানিয়ে তাতে স্থাপন করেছিলেন। আর, সেই বেদিতে পুঁতে দিয়েছিলেন অশ্বত্থ গাছের চারা। সেই দিন থেকেই নারনা পঞ্চানন দেবের পুজো শুরু হয়।

কথিত আছে, সেই দিনই তুবারাম ঘোষ আবারও স্বপ্নাদেশ পেয়েছিলেন। স্বপ্নাদেশে তাঁকে বলা হয়েছিল, দেবতার ওই থানের মাটি পঙ্গু এবং পক্ষাঘাতগ্রস্তদের শরীরে লাগালে, তিনি আরোগ্য লাভ করবেন। আরোগ্য লাভ করলে ভক্তদের গঙ্গা থেকে জল এনে দেবতার স্থানে ঢালতে হবে। আর, সন্ন্যাস ব্রত পালন করতে হবে। সেই থেকে আজ পর্যন্ত অসংখ্য ভক্ত এই মন্দিরে ছুটে আসেন দূর-দূরান্ত থেকে। বহু অসুস্থ মানুষ এই মন্দিরে এসে হাতেনাতে ফল পেয়েছে বলেই দাবি ভক্তদের।

আরও পড়ুন- প্রাচীন বিখ্যাত মন্দির, যা অসংখ্য ভক্তের মনস্কামনা পূরণের সাক্ষী

শুধু ফল পাওয়াই নয়। এখানে বৈশাখ-জ্যৈষ্ঠ মাসে দেবতাকে খিচুড়ি ভোগ দেওয়া হয়। শীতকালে দেওয়া হয় অন্যপদ। এখানে এখন প্রতিদিন ভক্তদের আসা-যাওয়া লেগেই থাকে। মানত পূরণ হলে, পাশের পুকুরে স্নান করে ভক্তরা দণ্ডী কেটে দেবতার পুজো দেন। বহু অলৌকিক কাহিনি রয়েছে এই মন্দিরকে ঘিরে। ভক্তদের দাবি, এখানকার দেবতা ঠিক কতটা জাগ্রত, না-হলে তা বুঝিয়ে বলা কঠিন।

Stay updated with the latest news headlines and all the latest Lifestyle news download Indian Express Bengali App.

Web Title: The famous temple of panchanan dev in narna