বাংলার জাগ্রত মন্দির। অবিশ্বাসের যুগে আজকাল তেমন মন্দির বেশিরভাগেরই চোখে পড়ে না। কিন্তু, একটু খোঁজ নিলেই ভক্তরা এমন জাগ্রত মন্দিরের হদিশ ঠিক পেয়ে যান। যেখানে তাঁরা শান্তির সন্ধান যেমন পান। তেমনই উদ্ধার পান নানা সমস্যা থেকে। এমনই এক জাগ্রত মন্দির রয়েছে হুগলি জেলার জনাইয়ে। নাম বদ্যিমাতা মন্দির। আজ থেকে প্রায় ২০০ বছরের পুরোনো এই মন্দির। কথিত আছে, এই মন্দিরে দেবী ভক্তদের মনস্কামনা পূরণ করেন।
কোনও রোগ-ব্যাধি হলে আজও বহু মানুষ দূর-দূরান্ত থেকে এই মন্দিরে আসেন। দেবীর কাছে প্রার্থনা জানান। দেবী নাকি সেই সব ভক্তদের স্বপ্নাদেশ দেন। সেই স্বপ্নাদেশ অনুযায়ী ওষুধ খেলে ভক্তদের যাবতীয় রোগ-ব্যাধি সেরে যায়। গত ২০০ বছর ধরেই এমনটা চলছে। আর, এই সব কারণে ভক্তদের দানে ধীরে ধীরে নতুন রূপে গড়ে উঠেছে এই মন্দির। আগে এখানে ছিল টালির চাল। সেখানেই এখন তৈরি হয়েছে পাকা দালানের পরিপূর্ণ সাজানো-গোছানো মন্দির।
দেবীর এখানে দক্ষিণাকালীর রূপ। ভক্তদের বিশ্বাস, আজও দেবী এখানে নিত্যরাতে পাশের পুকুরে স্নান করেন। সেই জন্য এই মন্দিরে ভক্তরা সচরাচর রাত্রিবাস করেন না। তবে, অমাবস্যায় মন্দিরে বিশেষ পুজোর আয়োজন করা হয়। ভক্তদের বিশ্বাস, অমাবস্যার দিনগুলোয় দেবী তাঁদের মন্দিরে রাত্রিবাসের ছাড়পত্র দিয়েছেন। এখানকার মন্দিরের পরিবেশ শান্ত ও নিরিবিলি। গোটা মন্দির চত্বর গাছগাছালিতে ঘেরা। নির্দিষ্ট দিনে এই মন্দিরে ভক্তদের ভোগের প্রসাদও খাওয়ানো হয়। কবে খাওয়ানো হবে, সেটা আগে মন্দির থেকে জেনে নিতে হয়।
আরও পড়ুন- তিনশো বছরের মন্দির, দেবীর খাঁড়া-ধোয়া জল পান করতে ভক্তদের ভিড় লেগেই থাকে
হুগলি জেলার চণ্ডীতলা ২ নম্বর ব্লকে মধ্যে পড়ে জনাই। সেই জনাইয়ের বাকসা গ্রামে রয়েছে এই প্রাচীন কালী মন্দির। শহর কলকাতা থেকে সড়কপথে বাকসা গ্রামের দূরত্ব ৩০ কিলোমিটার। বাকসা গ্রামের কাছের রেলস্টেশন হল বর্ধমান কর্ড লাইনের জনাই রোড। অটোয় চেপে জনাই রোড স্টেশন থেকে যাওয়া যায় বাকসা বদ্যিমাতা মন্দিরে। এই মন্দিরের আশপাশে কোনও পুজোর সামগ্রী পাওয়া যায় না। ভক্তরা সেসব জনাই থেকে সংগ্রহ করে নিয়ে যান।