Advertisment

অলৌকিক শক্তিপীঠ দ্বারবাসিনী, যেখানে গেলে মনস্কামনা পূরণ নিশ্চিত, এমনটাই বিশ্বাস ভক্তদের

নদীর ওপারেই ঝাড়খণ্ডের মাইথন।

author-image
IE Bangla Web Desk
New Update
Devi_Dwarbasini

শক্তিপীঠের ভূমি বীরভূম। এই জেলায় ছড়িয়ে আছে একের পর এক মন্দির। রয়েছে বহু সাধনতীর্থ। যেসব সাধনক্ষেত্র বিভিন্ন সাধকের সাধনায় দ্যুতি ছড়িয়েছে। ভারতীয় অধ্যাত্মবাদকে সমৃদ্ধ করেছে। কিন্তু, এতেও যেন শেষ নয়। এই লালমাটির জেলায় এখনও এমন শক্তিপীঠ রয়েছে, যা প্রচারের আলোর বাইরে। কিন্তু, সুদূর অতীত থেকে সূর্যের আলোর মতই শক্তিসাধনায় উজ্জ্বল। এমনই এক পুণ্যতীর্থ দ্বারবাসিনী।

Advertisment

যে মন্দির আজও ঘন জঙ্গলের মধ্যে নির্জন স্থানে রয়েছে। বীরভূমের মহম্মদ বাজারের বনপুরের বিস্তীর্ণ এলাকাজুড়ে বনভূমি। পাশ দিয়ে বয়ে গিয়েছে দ্বারকা নদী। ওপারে ঝাড়খণ্ড। এপারে নদীর ধারেই শ্মশান। ষোড়শ শতাব্দীতে এই অঞ্চল ছিল বীর রাজার রাজ্যের অন্তর্ভুক্ত। শেষ বীর রাজাকে হত্যা করে সিংহাসনে বসেছিলেন তাঁর সেনাপতি জুনেইদ খাঁ। কিন্তু, জুনেইদ খাঁর অকাল মৃত্যু হয়। তাঁর পুত্র বাহাদুর ওরফে রণমস্ত খাঁ সিংহাসনে বসেন।

১৭৫২ খ্রিস্টাব্দে তাঁর উত্তরপুরুষ মহম্মদ আসাদুজ্জামান খাঁ দেবী দ্বারবাসিনীর নিত্যসেবার জন্য ভাগলপুর থেকে নিয়ে এসেছিলেন তান্ত্রিক-পুরোহিত তিলকনাথ শর্মাকে। সেই সময় মুর্শিদাবাদের সিংহাসনে বসেন মীরকাশিম। তিনি ইংরেজদের সহায়তায় আসাদুজ্জামান খাঁকে পরাস্ত করেন। এরপর বীরভূমের এই রাজনগর এলাকা কার্যত চলে যায় ব্রিটিশদের শাসনে।

আসাদুজ্জামানের পরবর্তী রাজা ঠিকমতো কর দিতে না-পারায় এই অঞ্চল নিলাম করে দেয় ইংরেজরা। যা কিনে নেয় হেতমপুরের রাজপরিবার। এইসময় দ্বারবাসিনী মন্দিরের পুজোর দায়িত্ব কিছু সময় হেতমপুরের রাজা আবার কিছু সময় শিয়াখোলের রাজবাড়ির হাতে চলে যায়। তবে, শাসক বদলালেও দ্বারবাসিনী মন্দিরের পুরোহিত বংশ কিন্তু বদলায়নি। বংশ পরম্পরায় তাঁরা এই মন্দিরের পুজো আজও করে চলেছেন।

ভক্তদের দাবি, এই মন্দিরে দেবীর কাছে যে মনস্কামনা জানানো হয়, তা-ই পূর্ণ হয়। শুধু এই রাজ্যই নয়। প্রতিবেশী ঝাড়খণ্ড থেকেও এই মন্দিরে তাই ভক্তরা ছুটে আসেন। প্রতি মকর সংক্রান্তিতে এখানে মেলা বসে। জঙ্গল ঘেরা এলাকা হওয়ায়, বিকেল ৪টের পর এই অঞ্চলে বাইরে থেকে আর কেউ আসার সাহস দেখান না। কারণ, একটা গা ছমছমে পরিবেশ বিরাজ করে। এই মন্দিরে দেবী দ্বারবাসিনী দুর্গারূপে পূজিতা হন।

আরও পড়ুন- সোদপুরের শিরডি সাঁই মন্দির, যেখানে এলেই ভক্তদের অশান্ত মন শান্ত হয়ে যায়

এখানকার দ্বারকা নদী পেরিয়ে পাহাড়ের কোলে রয়েছে ঝাড়খণ্ডের দেবী কল্যাণেশ্বরীর মন্দির। প্রতিদিন সকাল ১০টা থেকে ১২টা পর্যন্ত দেবী দ্বারবাসিনীর পুজো চলে। তারপর দেবীকে ভোগ দেওয়া হয়। দর্শনার্থীরা পায়েস ভোগ পান। এখানে যেতে গেলে প্রথমে যেতে হবে বোলপুর। সেখানে বোলপুর-মুরারপুর বাস ধরে কেন্দুসরাইয়ের মোড়ে নামতে হবে। সেখান থেকে টোটোয় চেপে যাওয়া যাবে এই মন্দিরে।

Durgapuja pujo Temple
Advertisment