দিনের পর দিন তাপমাত্রা নিম্নমুখী। ক্রমশই ঠান্ডা গ্রাস করছে চারিপাশ। যদিও বা শীত প্রিয় মানুষের সংখ্যাই বেশি কিন্তু তারপরেও এই শীতকালে অনেকেই মুশরে পড়েন মানসিক ভাবে। এর কারণ ব্যাখ্যা করা খুবই কঠিন তারপরেও চিকিৎসা শাস্ত্রে এর লক্ষণ কিন্তু অনেক মানুষের মধ্যেই বিদ্যমান। এবং একে 'সিজনাল আফ্যাক্টিভ ডিসঅর্ডার' বলা হয়। আগে জানতেন?
যদিও বা শীত মানেই একগুচ্ছ পার্বণ থেকে নতুন বছরের শুরুর অপেক্ষা, তার সঙ্গে পিকনিক, এদিক ওদিক ঘুরে বেড়ানো লেগেই আছে। কিন্তু এমন সময় মন খারাপ হওয়ার সুযোগ খুব বেশি। তার বিশেষ কারণ হিসেবে আবহাওয়ার পরিবর্তন, এবং শীতকাল মানেই রুক্ষতা, শুষ্কতা এবং আবদ্ধ একটি বিষয়। মানসিকভাবে অনেকেই বাড়িঘরের জানলা দরজা বন্ধ করে বসে থাকায় চট করে মানিয়ে নিতে পারেন না। তার মধ্যেই শীতকাল অর্থাৎ চট জলদি সন্ধ্যে এবং রাত্রি পেরিয়ে ভোর না হওয়ার এক বিরাট সময়ের প্রতীক্ষা।
অনেকেই এমন আছেন শীতকাল মানেই একটু বেশি আলস্য বোধ করেন অথবা ঘুম যেন ভাঙতেই চায় না। মন খারাপের অন্ত নেই, আর হ্যাঁ মিষ্টি অথবা চকোলেট খাওয়ার শেষ নেই। এগুলি আসলেই একধরনের ডিপ্রেশনের লক্ষণ। অর্থাৎ পরিস্থিতির সঙ্গে নিজেকে মানিয়ে নেওয়ার জো আপনার নেই তাই আপনি ক্রমাগত ক্লান্ত এবং অশান্ত দুইই হয়ে পড়ছেন।
গবেষণা বলছে, এই সিজনাল ডিসঅর্ডার সকলের মধ্যে থাকে এমন কোনও কথা নেই তবে, নির্দিষ্ট ঋতুতেই এটি মানুষের মধ্যে বেশি দেখা যায়। কিছু মানুষ বর্ষাকালের প্যাচপ্যাচে ভাব সহ্য করতে পারেন না সেই থেকেও মন খারাপ হয়। এবং বেশিরভাগ ক্ষেত্রে দেখা যায়, এটি শুধু মানুষের মন খারাপই করে না তার সঙ্গেই দিনের পর দিন তাঁকে মানুষের থেকে দূরে সরিয়ে দেয়। নিজেকে আরও সেই ব্যক্তি আবদ্ধ করে নিন। ধীরে ধীরে মানুষ কথা বলার আগ্রহ পর্যন্ত হারিয়ে ফেলে। তবে এর কিছু উপায় রয়েছে, যেগুলি কিন্তু আপনাকে একটু হলেও ভাল রাখার চেষ্টা করতে পারে।
প্রথম, নিজেকে মন থেকে প্রস্তুত করতে হবে শীতকাল শুরু হওয়ার আগে। দরকার পড়লে শীত সম্পর্কিত ভাল ভাল আর্টিকেল পড়ুন। শীতের জায়গার ভিডিও দেখুন। নিজেকে ঠান্ডার সঙ্গে যুজে ওঠার জন্য তৈরি করুন।
দ্বিতীয়, সূর্যের আলোয় বেশি সময় কাটান। প্রয়োজনে সূর্য ওঠার সঙ্গে সঙ্গেই নিজেকে ঘুম থেকে তোলার চেষ্টা করুন। এবং দুপুরবেলা নাগাদ রোদ লাগানোর চেষ্টা করুন।
তৃতীয়, যখন যা মন চায় সেই খাবারটি অবশ্যই খান। এবং মিষ্টি হোক বা নোনতা কার্পণ্য করবেন না খাওয়ার ব্যাপারে। তবে এই বিষয়েও খেয়াল রাখবেন অতিরিক্ত কার্ব যুক্ত খাবার কিন্তু আপনার জন্য ঠিক না হতে পারে। এবং সারাদিনে প্রোটিন অবশ্যই খান।
চতুর্থ, একা থাকবেন না। যতই বিরক্ত লাগুক, মানুষের সঙ্গে কথা বলুন। নিজেকে ঘরে আটকে রাখবেন না, বরং সেই জায়গায় মানুষের সঙ্গে মিশুন, কথা বলুন। নিজে থেকে আনন্দ উপভোগ করুন।
পঞ্চম, আপনার যেটি করতে সবথেকে বেশি ভাল লাগে, নাচগান, কিংবা শরীরচর্চা এগুলির সঙ্গে যুক্ত হন। তবেই শরীর ভাল থাকবে এবং তার সঙ্গে নিজেও ভাল থাকবেন।
নিজেকে সবকিছুর সঙ্গে মানিয়ে নেওয়া আপনার কাজ এবং তার সঙ্গেই মানসিকভাবে দৃঢ় করে তুলতে হবে, সেটিই আপনার ধৈর্য্যের পরিচয়।
ইন্ডিয়ান এক্সপ্রেস বাংলা এখন টেলিগ্রামে, পড়তে থাকুন