Advertisment

বাড়ি থেকে ব্যাংক, নেই একটাও দরজা, গ্রামে অপরাধ ঠেকানোর দায়িত্বে স্বয়ং শনিদেব

গ্রামবাসীদের দাবি, গ্রহরাজের মূর্তি আঘাত খাওয়ার পর, তা থেকে বের হয়েছিল রক্ত।

author-image
IE Bangla Web Desk
New Update
Shani_Temple

এ এক আজব গ্রাম। কোনও সিনেমা নয়, বাস্তবের। এই গ্রামে কোনও অপরাধ হয় না। চুরি-ডাকাতি থেকে ধর্ষণ, কিছুই না। বছরের পর বছর এই গ্রামে কোনও পুলিশি পাহারার ব্যবস্থা ছিল না। ২০১৫ থানা তৈরি হয়েছে। তার আশপাশ দিয়ে এই গ্রামের লোকজন যাতায়াত করেন। কিন্তু, তাঁরা থানায় কোনওদিন কোনও অভিযোগ জানাতে যান না। এই গ্রামে প্রতিদিন দূর-দূরান্ত থেকে বহু পর্যটক আসেন। তাঁরা ফিরেও যান। কিন্তু, সেই পর্যটকরাও কোনও থানায় এই গ্রামে অপরাধ হয়েছে বলে অভিযোগ জানিয়েছেন, এমন খবর নেই।

Advertisment

কারণ, এই গ্রামের বাসিন্দারা বিশ্বাস করেন, তাঁদের রক্ষাকর্তা শনি মহারাজ। যে গ্রহরাজ স্বপ্নাদেশে গ্রামের বাসিন্দাদের বলেছেন, 'যদি তোরা আমার উপাসনা করিস তাহলে আমি তোদের সবাইকে নিরাপদে রাখব। গ্রামে কারও বাড়িতে দরজা বানানোর দরকার নেই। কেউ চুরি বা কোনও অপরাধ করতে গেলেই আমার বক্রদৃষ্টির সামনে পড়বে।' আর, এই গ্রামে কোনও বাড়িতে দরজা পর্যন্ত নেই। গ্রামে ব্যাংক আছে। সেখানেও কাচের দরজায় কোনও তালাচাবি পর্যন্ত থাকে না। তা, সেই ব্যাংকে যত টাকা লেনদেনই হোক না-কেন।

স্থানীয় বাসিন্দারা বিশ্বাস করেন, এই গ্রামে কেউ কোনও অপরাধ করে পার পাবে না। অপরাধ করলে আর গ্রামের বাইরে বেরোতে পারবেন না। শনি মহারাজের কড়া শাসনে হয় সেই অপরাধী অন্ধ হয়ে যাবে। অথবা বধির হয়ে যাবে। অথবা তাঁর মৃত্যু হবে। স্বপ্নাদেশে গ্রামের বাসিন্দাদের দরজা বানাতে বারণ করেছিলেন শনি মহারাজ। সেকথা না-শুনে কয়েক বছর আগে এক ব্যক্তি গ্রামের বাড়িতে দরজা বানিয়েছিলেন। পরদিনই সড়ক দুর্ঘটনায় তাঁর মৃত্যু হয়েছে।

আরও পড়ুন- যে মূর্তি সরানোয় প্রতিবার নেমেছে ভয়াবহ বিপর্যয়, উত্তরাখণ্ডের রক্ষাকর্ত্রী জাগ্রত দেবী ধারি

আধুনিক যুগে সন্দেহ আর বিশ্বজুড়ে অপরাধের বাড়বাড়ন্তের মধ্যেও কিন্তু এই গ্রামে টিকে আছে সততা, বিশ্বাস, ভক্তি। গ্রামের বাসিন্দারা বিশ্বাস করেন, শনি মহারাজের কৃপাতেই তাঁরা আর্থিক অবস্থাসম্পন্ন। অবাক করা এই গ্রামের নাম শনি শিঙ্গনাপুর। মহারাষ্ট্রে আহমেদনগর জেলায় সদর থেকে প্রায় ৪০ কিলোমিটার দূরে এই গ্রাম।

মহারাষ্ট্র পরিবহণ দফতরের একের পর এক বাস আছে এই গ্রামে যাতায়াত করার জন্য। যে গ্রামের বাসিন্দারা তাঁদের রক্ষক মনে করেন দেড় ইঞ্চি চওড়া, ৫ ফুট ৯ ইঞ্চি উচ্চতার এক পাষাণ মূর্তিকে। গ্রামবাসীদের দাবি, এই পাষাণ মূর্তি আঘাত পেলে, সেখান থেকে রক্তও বের হয়। কারণ, এই মূর্তি সাধারণ কোনও পাথর নয়, স্বয়ং শনিদেব।

pujo Temple Saturn
Advertisment