বাঙালির বিরিয়ানি খেতে কোনও দিনক্ষণ সময়, জায়গা স্থান কিছুই লাগে না। এই একটিই সুবাস যা তাকে চুম্বকের মত টানে। ঘ্রাণ নাকে আসতেই পাগল পাগল আচরণ করে মানুষ। ঘণ্টার পর ঘন্টা লাইন দিয়ে বেস্ট দোকানের বিরিয়ানি খাওয়ার মত মানুষের দেখা সহজেই মিলবে। আর এই বিরিয়ানি যদি উঠে আসে রেল স্টেশনে তাও আবার নামমাত্র দামে তবে কথাই নেই!
Advertisment
যাতায়াতের পথে লোকাল ট্রেনে অনেকেই চাপেন। হাওড়া মেন লাইনের শ্রীরামপুর স্টেশন একেবারেই না চেনার নয়। তিন নম্বর প্ল্যাটফর্মের স্টেশনে নামতেই ম ম করবে বিরিয়ানির গন্ধ। এদিক ওদিক উঁকি মারলেই দেখা যাবে লাল কাপড়ে ঢাকা বড়বড় সব হাঁড়ি। ভেতরে রয়েছে বাঙালির কাছের সেই খাবার, বিরিয়ানি। আর দাম? শুনলে চোখ কপালে উঠে যাবে! মাত্র ৩০ টাকা। অবাক লাগলেও এ একেবারে সত্যি। পরপর অনেকগুলি স্টল, সবই মাত্র ত্রিশ টাকা।
এই ব্যবসা করেই দিন কাটছে অনেক মানুষের। ছোট্ট একটা দোকান। ত্রিপল বাঁশ দিয়ে একটা গুমটি, অল্প বসার ব্যবস্থাও রয়েছে। ত্রিশ টাকার বিনিময়ে ছয় মাসের বেশি সময় ধরে বিরিয়ানি বিক্রি করছেন অলোক এবং বিলু বাবু - স্টলে দুজনের দেখাই মিলবে। বিরিয়ানি, সঙ্গে একপিস আলু এবং একপিস মাংস, ওখানে বসে খেলে স্যালাড থাকছে। সঙ্গে অবশ্যই গ্রেভি ছড়িয়ে দেওয়া হবে। সকাল ১১ টা থেকেই নিজেদের স্টল খুলে দেন তাঁরা। পরিষ্কার পরিচ্ছন্ন - স্টেশন চলতি মানুষদের অনেকেরই প্রতিদিনের ঠিকানা এই ত্রিশ টাকার বিরিয়ানির স্টল। কিন্তু কেন এই ব্যবসা?
অলোক বাবু বললেন, "আমরাই প্রথম এই স্টেশনের ওপর শুরু করি ত্রিশ টাকায় বিরিয়ানি। তারপর আরও অনেক হয়েছে। আর টাকার কথা যদি বলেন, তবে সবার কথা ভেবে এটি বানানো। এই স্টেশন দিয়ে কত মানুষ যাতায়াত করেন। ছাত্রছাত্রী থেকে শুরু করে হকার্স সকলেই আছেন। অত্যধিক দামী কিছু সকলের জন্যই সমস্যা। তাই জন্যই এই দাম"।
প্রায় মাস ছয়েকের ব্যবসা। এর মধ্যেই এত জনপ্রিয়তা, দেখা মিলল অনেক মানুষেরই। কেউ কেউ হয়তো প্রায়দিনই আসেন বিরিয়ানি খেতে। পথ চলতি মানুষের খিদে মেটাতে ঠিক যতটা প্রয়োজন ততটা কিন্তু পাওয়া সম্ভব। সপ্তাহের অন্যান্য দিনে ভিড় থাকে দেখার মত। প্রায়, রাত আটটা নয়টা পর্যন্ত পাওয়া যাবে এই দোকান। তাই বিরিয়ানি খেতে ইচ্ছে করছে কিন্তু পকেট গড়ের মাঠ, কম পয়সায় অন্তত একবার হলেও এখানে ঢু মারা যায়।