কৌটিল্য চাণক্য। ভারতের ইতিহাস তাঁকে এই নামেই চেনে। সেই চাণক্যের নীতি লেখা আছে ‘নীতি দর্শন’ নামে এক গ্রন্থে। যা যুগে যুগে ভারতবাসীকে পথ দেখিয়েছে ও দেখাচ্ছে। যা পড়লে আমাদের দৈনন্দিন জীবনচর্চা আরও সুন্দর ও শোভন তো হয়ই। পাশাপাশি, জীবনে উন্নতি ঘটে ধারাবাহিকভাবে। একবিংশ শতাব্দীর বর্তমান সময়েও চাণক্য যে কতটা প্রাসঙ্গিক, তাঁর নীতিবাক্যগুলো পড়লেই তা বোঝা যায়। বর্তমান জটিল জীবনযাত্রাতেও তাঁর শ্লোকগুলোর গুরুত্ব যেন একচুলও কমেনি।
চাণক্যের তেমনই একটি উপদেশ হল, 'পণ্ডিতেষু গুণাঃ সর্বে মূর্খে দোষা হি কেবলম্। তস্মান্ মূর্খসহস্রেভ্যঃ প্রাজ্ঞঃ একো বিশিষ্যতে।।' যার বঙ্গানুবাদ করতে হয়, পণ্ডিত সকল গুণের আধার। আর, মূর্খের কেবলই দোষ। তাই সহস্র মূর্খের চেয়ে একজন পণ্ডিতই শ্রেষ্ঠ।
একে ব্যাখ্যা করলে অর্থ যেটা হয়, তা হল- একজন পণ্ডিত বা বিদ্বান ব্যক্তি অনেক শাস্ত্র অধ্যয়ন করে অনেক জ্ঞান অর্জন করেন। ফলে সেই জ্ঞানী ব্যক্তি, কোনও অন্যায় কাজ করেন না। তিনি তাঁর প্রাপ্ত বিদ্যার দ্বারা সমাজ ও সংসারের অনেক উপকার করে থাকেন। তাঁর জ্ঞানের দ্বারা এবং অর্জিত বিদ্যার সাহায্যে তিনি কর্তব্য এবং কর্ম করে থাকেন। আর, তা থেকে তিনি কখনও বিচ্যুত হন না।
আরও পড়ুন- চাণক্যের এই নীতিবাক্য, যা শেখালে সন্তানের লেখাপড়া নিয়ে নিশ্চিন্ত থাকবেন অভিভাবকরা
তাঁর জ্ঞানার্জিত বিচার ও বুদ্ধি ব্যবহারিক জীবনেও নানা কাজে লাগে। যা সমাজের উপকার করে থাকে। কিন্তু, মূর্খ ব্যক্তির সম্বল কেবলই মূর্খতা। যে কারণে সেই ব্যক্তি প্রতি পদে ভুল করে থাকেন। সমাজের কাছে, এমনকী পরিবারের কাছেও সেই ব্যক্তি হেয় প্রতিপন্ন হন। মূর্খ ব্যক্তির অন্যের প্রতি কর্তব্য-কর্মের কোনও জ্ঞান থাকে না। জীবনে কোনওরকম উন্নতিও তিনি করতে পারেন না। এই সমাজ ও সংসারে তাঁর কোনও অবদান থাকে না। সেই জন্য বলা হয়, একজন পণ্ডিত ব্যক্তি যা পারেন, এক হাজার মূর্খ ব্যক্তিও তা পারেন না। তাই সহস্র মূর্খ ব্যক্তির চেয়ে একজন পণ্ডিত ব্যক্তিই শ্রেষ্ঠ।