শহর কলকতায় মন্দিরের অভাব নেই। রাস্তা দিয়ে হাঁটার সময় এদিক বা ওদিক তাকালেই কিছু দূর পরপর মন্দির চোখে পড়বে। ছোট হোক বা বড়, সেসব মন্দিরের প্রায় সবগুলোতেই নিত্যপূজা হয়। অন্তত, পুরোহিত এসে একবার কোনওমতে পূজা সেরে যান। এত মন্দির যে তার কোনটা কী, সেই খোঁজও সকলে রাখেন না।
আর, ছোট মন্দির হলে তো কথাই নেই। বিশেষ উৎসব বা তিথিতে কোনও কোনও মন্দিরের সামনে কিছু ভক্তের ভিড় দেখা যায়। আর, কোনও কোনও এলাকায় প্রতি সপ্তাহেই শনিবার দক্ষিণার বড় থালা বা বাক্স পেতে পুজোপাঠ চলে। ব্যস্ততার মধ্যে সেসব নিয়ে বিস্তারিত খোঁজ নেওয়ার সময় পান না ভক্তরা। কিন্তু, একটু খোঁজ করলেই দেখা যাবে, এই সব মন্দিরের মধ্যে বেশ কয়েকটি কিন্তু, বেশ জাগ্রত।
মানুষের বিশ্বাসের প্রশ্ন। অনাবশ্যকভাবে বা যেচে পড়ে কাউকে সেসব বলেন না ভক্তরা। অবশ্য নিজেরা নিয়মমাফিক ও নিয়মিত সেই সব মন্দিরে যাতায়াত করেন। অবশ্য, তাঁদের বেশিরভাগই স্থানীয় এলাকার বাসিন্দা। আর, যাঁরা খবর পেয়েছেন বা উপকৃত হয়েছেন, তাঁরা কিন্তু, দূরত্ব যতই হোক নিয়মিত ছুটে আসেন এই সব মন্দিরে। এমনই এক মন্দির হল কলকাতার বিডন স্ট্রিটের শ্রীশ্রী শনি ও কালীমন্দির।
আরও পড়ুন- কয়টি কথা, যা জানলেই গীতা, উপনিষদ এবং হিন্দুশাস্ত্র জলের মত সহজ
বাংলার ১৩১২, আর ইংরেজির ১৯১৫ সালে এই মন্দির প্রতিষ্ঠিত হয়েছিল। মন্দিরটি স্থাপন করেছিলেন পণ্ডিত শ্রী সুধীরচন্দ্র গোস্বামী। তিনি প্রয়াত হয়েছেন অনেকদিনই হল। তবে, তাঁর বংশধররা আছেন। তাঁরা এই মন্দিরের দেখভাল করেন। পুজোপাঠের দায়িত্ব নিয়েছেন। এই মন্দিরের ঠিকানা হল ৩২/৫, বিডন স্ট্রিট, কলকাতা-৬। কথিত আছে, এই মন্দিরের সঙ্গে কামাখ্যার একটা যোগসূত্র রয়েছে।
পণ্ডিত সুধীরচন্দ্রের বাবা ছিলেন তান্ত্রিক। তিনি কামাখ্যা থেকে এসেছিলেন। ছ'টি মড়ার মাথা-সহ বিগ্রহ তিনিই প্রতিষ্ঠা করেছিলেন। আজও দূর-দূরান্ত থেকে ভক্তরা এই মন্দিরে আসেন। দুর্ভোগ থেকে মুক্ত হলে নিজেরাই সোনা বা রুপোর অলঙ্কার পর্যন্ত দান করেন বলে শোনা যায়। আর, সেই সব দান করা সোনা-রুপোয় রীতিমতো সজ্জিত থাকে দেবী কালী ও শনিদেবের বিগ্রহ।