সমাজকে বাদ রেখে সমাজবিজ্ঞান বিশ্লেষণ হয় না, বুঝিয়ে দিল মুম্বই-এর টাটা ইন্সটিটিউট অব সোশাল সায়েন্স। ৩৭৭ ধারা বাতিল করার ঐতিহাসিক রায় ঘোষণার পর দিন কয়েক কেটেছে মাত্র। তারই মধ্যে অভিনব উদ্যোগ নিল টিস। লিঙ্গ নিরপেক্ষ হোস্টেলের ভাবনা প্রথম এদের মাথাতেই এল।
আইন সমাজের দৃষ্টিভঙ্গি কতটা পালটাতে পারবে, আদৌ পারবে কিনা, এসব বিতর্কের রেশ থাকতে থাকতেই দিনবদলের প্রথম গানটা গেয়ে উঠল একঝাঁক তাজা মন। এলজিবিটিকিউ সম্প্রদায়ের মানুষ এখানে থাকতে পারবেন কোনো অস্বসতি ছাড়াই। রূপান্তরকামী, সমকামী আবার লিঙ্গ পরিচয়ের প্রতি উদাসীন, সবাই স্বেচ্ছায় আসতে পারবেন এখানে। আপাতত ২০টি আসনের এই হোস্টেলে বসবাস শুরু করেছেন ১৭জন পড়ুয়া।
আরও পড়ুন, ‘রুদ্ধশ্বাস, কত প্রতীক্ষা’র অবসান, বিয়ে করছেন ওড়িশার রূপান্তরকামী আমলা
এতদিন লিঙ্গ পরিচয় দিতে স্বচ্ছন্দ নয়, এমন পড়ুয়ারা মহিলা হোস্টেলে থাকতে বাধ্য হতেন।এলজিবিটিকিউ সম্প্রদায়ের প্রতিনিধি এবং সম্প্রতি প্রতিষ্ঠানের কালচারাল কমিটির সাধারণ সম্পাদক নির্বাচিত হওয়া অকুণ্ঠ বললেন, "লিঙ্গের ভিত্তিতে মানুষকে আলাদা করা হলে তৃতীয় লিঙ্গের মানুষদের আসলে সমাজ থেকে আলাদা করে দেওয়া হয়।"
সমাজের ঠিক করে দেওয়া সংজ্ঞার মধ্যে নিজেকে খুঁজে না পেলেই সে ব্রাত্য, এমন উদাহরণ দেশ, কাল সীমানা নির্বিশেষে অজস্র। আইনও তৈরি হয় সংখ্যাগুরুর কথা ভেবেই। যুগে যুগে দেশে দেশে। এরকম পরিস্থিতিতে লিঙ্গ পরিচয় অস্বীকার করা সহজ নয়। একগুচ্ছ মানুষের সেই লড়াইয়ের প্রথম মঞ্চটা দিল টিস।
এই প্রসঙ্গে কেন্দ্রের সামাজিক ন্যায় এবং ক্ষমতায়ণ বিভাগের প্রতিনিধি রানাডে জোর দিয়ে মনে করিয়ে দিলেন, পড়ুয়ারা সিদ্ধান্ত নেবেন তাঁরা কোথায় থাকবেন। 'মহিলা', 'পুরুষ', অথবা 'লিঙ্গ নিরপেক্ষ' মানুষ যেন স্বেচ্ছায় বেছে নিতে পারেন তাঁর ছাদ। কর্তৃপক্ষ যেন বাধ্য না করেন। হোস্টেল প্রসঙ্গে রানাডে বললেন, "যারা 'মহিলা' কিংবা 'পুরুষ' এই দুই পরিচয়ের মধ্যে কোনোটিকেই স্বতঃস্ফূর্তভাবে মেনে নিতে পারছেন না, এই হোস্টেল মূলত তাঁদের জন্য।"