আহমেদাবাদ শহর থেকে ১৫০ কিলোমিটার দূরে গুজরাটের সালাংপুর। ভক্তদের ভিড় এখানে গোটা সপ্তাহই লেগে থাকে। কিন্তু, শনিবার আসলে সেই ভিড়টা কয়েকগুণ বেড়ে যায়। কারণ, শনিদেবের সঙ্গে এই মন্দিরের বিশেষ সম্পর্ক। কথিত আছে, একবার পৃথিবীতে শনিদেবের প্রকোপ ভয়ংকর বেড়ে গিয়েছিল। বিপন্ন মানুষ প্রতিকারের জন্য হনুমানের শরণ নিয়েছিলেন। তাঁদের প্রার্থনায় সাড়া দিয়ে শনিদেবকে জব্দ করবেন বলে ঠিক করেছিলেন হনুমান।
Advertisment
শনিদেব জানতেন, হনুমান ব্রহ্মচর্য পালন করেন। তাই তিনি হনুমানের হাত থেকে বাঁচতে নারীরূপ ধারণ করেন। আর, হনুমানের পায়ের কাছে বসে ক্ষমা চান। সেই কাহিনিই উঠে এসেছে সালাংপুরের মন্দিরে, কষ্টভঞ্জনের মূর্তিতে। হনুমানের কারণে শনির দুর্দশাকে এখানে এমনভাবে দেখানো হয়েছে যে, মানুষ তাতে ভরসা পান। বিপুল অর্থ খরচ করে শনির প্রকোপ রুখতে রত্নধারণের বদলে সালাংপুরবাসী তাই কষ্টভঞ্জন মন্দিরেই চলে আসেন। ভক্তদের বিশ্বাস, এখানে পুজো দিলে শুধু শনিই নন। অপদেবতা কাছে ঘেঁষে না।
বহু প্রাচীন এই মন্দির বারবার সংস্কার হয়েছে। যার ফলে দেখলে মনে হবে, এটা হয়তো নতুন কোনও দেবালয়। ভক্তদের বিশ্বাস, এই মন্দিরের অধিষ্ঠাতা কষ্টভঞ্জনদেব ভক্তের যারতীয় দুঃখকষ্ট হরণ করে তাঁকে শান্তি দেন। হনুমানজি এখানে ৪৫ কিলো সোনা এবং ৫০ কিলো রুপো দিয়ে তৈরি সিংহাসনে উপবিষ্ট। তিনি কষ্টভঞ্জন, অধিরাজ এবং মহারাজ নামেও পরিচিত। এখানে হনুমানজির পায়ের তলায় শনিদেব আর সোনার গদা রয়েছে। ভক্তদের বিশ্বাস, এই মন্দিরে এলে তাঁদের মনস্কামনাও পূরণ হয়।
পণ্ডিতরা বলেন, সিঁদুর, কাঁচা সরষের তেল, আর লাড্ডু দিয়ে হনুমানজির পুজো করা হলে তিনি খুশি হন। লাল ফুল আর হলুদ ফুল দিয়ে পুজো করাই বিধেয়। আরাধনার সময় হনুমান চালিশা পাঠ করলে খুশি হন পবননন্দন। এই মন্দিরে হনুমান আরাধনা কিন্তু, সেই সব প্রচলিত নিয়মের চেয়ে অনেকটাই আলাদা। এখানকার হনুমান মূর্তি যেমন প্রচলিত মূর্তির মতন না। তেমনই হনুমানজিকে ভোগ দেওয়া হয় বিশেষ কায়দায়। ভোগের বহরে থাকে শশা থেকে বেগুন-সহ যাবতীয় সবজি।