এক) নতুন সিঁদুরের কৌটো কিনে দেবী জগদ্ধাত্রীর পুজোর সময় পুরোহিতকে দিয়ে পুজো করিয়ে নিতে হয়। তার থেকে কিছু সিঁদুর দেবীর চরণে দিতে হয়। বাকিটা রেখে দিতে হয় সিঁদুরের কৌটোয়। পরিবারের সদস্যদের কপালে সেই সিঁদুরের ছোঁয়া দিলেই মুক্তি মেলে নানা সমস্যা থেকে। বাড়িতে শুভ কাজের আগে এই সিঁদুরের টিকা বা টিপও ব্যবহার করেন অনেকে।
দুই) পুজো চলাকালীন কোনও সধবাকে লালপেড়ে বস্ত্র, আলতা, সিঁদুর দিলেও মেলে নানা সমস্যা থেকে মুক্তি।
তিন) নতুন শঙ্খ কিনে দেবীর মন্দিরে বা মণ্ডপে পুজো করিয়ে পরিবারের নিত্যপুজোর জায়গায় রেখে দিলেও নানা সমস্যা দূর হয়ে যায়।
চার) এই দিনে নিরামিষ খাবার খেলে সৌভাগ্য বাড়ে বলেই বিশ্বাস ভক্তদের একাংশের।
পাঁচ) এই পুজোয় কোনও ভিক্ষুক বা দরিদ্রকে ভিক্ষা দিলে তাতে বিশেষ পুণ্যলাভ হয়, দেবী জগদ্ধাত্রী খুশি হন বলেই ভক্তরা মনে করেন।
ছয়) এই দিনে দেবীর চরণে লালপেড়ে বস্ত্র দান করলে দেবী জগদ্ধাত্রী সন্তুষ্ট হন আর বিশেষ আশীর্বাদ করেন বলেই ভক্তদের বিশ্বাস।
পুজোর সময়
অনেক জায়গাতেই নবমীর দিনই জগদ্ধাত্রী পুজোর সপ্তমী, অষ্টমীর পুজো করা হয়। এর প্রথম পুজো আরম্ভ শুরু হয়েছে সকাল ৭টায়। দ্বিতীয় পুজো আরম্ভ হবে বেলা ২.৩০-এ। তৃতীয় পুজো আরম্ভ হবে বিকেল ৪.১০-এ। সন্ধ্যারতির সময়কাল শুরু হবে রাত ৮ টায়।
কে এই দেবী জগদ্ধাত্রী
দেবী জগদ্ধাত্রী দেবী পার্বতীর অন্যরূপ। উপনিষদ অনুযায়ী, তাঁর নাম উমা হৈমবতী। বিভিন্ন তন্ত্র এবং পুরাণেও দেবীর উল্লেখ আছে। কার্তিক মাসের শুক্লা নবমী তিথিতে এই পুজো হয়। অবশ্য, অনেকেই চার দিন বা আরও বেশিদিন ধরে জগদ্ধাত্রী পুজো করে থাকেন।
বাংলায় জগদ্ধাত্রী
দেবী জগদ্ধাত্রী সম্পূর্ণ তান্ত্রিক দেবী। বাংলার তান্ত্রিক সিদ্ধাচার্য রঘুনাথ তর্কবাগীশ ১৬০টি তন্ত্র ও প্রায় শতাধিক ধর্মগ্রন্থ ঘেঁটে 'আগমতত্ত্ব বিলাস' নামে একটি বই লিখেছিলেন। যাতে দেবী জগদ্ধাত্রীর মূর্তি বিবরণ, পূজার সময়কাল, পূজা পদ্ধতি, পূজার বীজ মন্ত্র, সব উল্লেখ আছে। সেই কারণে পশ্চিমবঙ্গ ছাড়া অন্য রাজ্যে জগদ্ধাত্রী পুজোর প্রচলন নেই।
আরও পড়ুন- চান্না থেকে রাজগঞ্জ, বর্ধমানের নানা জায়গায় ছড়িয়ে সাধক কমলাকান্তের লীলাক্ষেত্র
আগে পুজো হত
এরাজ্যের নদিয়ার কৃষ্ণনগর, হুগলির চন্দননগর, গুপ্তিপাড়া, শান্তিপুরের সূত্রাগড়ে আগে উল্লেখযোগ্য জগদ্ধাত্রী পুজো হত। এখন গোটা রাজ্যের বিভিন্ন জায়গায় এই পুজোর প্রচলন বেড়েছে। ব্যবসায়ীরা মূলত এই পুজো করেন।