Advertisment

আজ উত্থান একাদশী, হিন্দুধর্মে যার বিরাট গুরুত্ব, নিয়ম মানলে বদলায় ভাগ্যও

কার্তিক মাসের শুক্লপক্ষের একাদশীকে বলা হয় উত্থান একাদশী। যার কথা স্কন্দপুরাণে আছে। অনেকে একে ‘প্রবোধিনী’ও বলেন।

author-image
IE Bangla Web Desk
New Update
Bishnu

আজ ৪ নভেম্বর, ২০২২, শুক্রবার- উত্থান একাদশী। যার পারণ হবে পরদিন, শনিবার ভোর ৫টা ৪২ থেকে ৯টা ৫০-এর মধ্যে। এগুলো পঞ্জিকার দৌলতে আমরা অনেকেই জানি। কিন্তু, প্রশ্ন হল কী এই উত্থান একাদশী? আসলে কার্তিক মাসের শুক্লপক্ষের একাদশীকে বলা হয় উত্থান একাদশী। যার কথা স্কন্দপুরাণে রয়েছে। অনেকে একে ‘প্রবোধিনী’ও বলেন।

Advertisment

পুরাণ মতে, প্রজাপতি ব্রহ্মা তাঁর পুত্র দেবর্ষি নারদকে এই একাদশীর মহিমার কথা বলেছিলেন। পুরাণ অনুযায়ী, এই একাদশীতে ভগবান শ্রীগোবিন্দ বা শ্রীবিষ্ণু বা শয়ন যোগনিদ্রা থেকে জেগে ওঠেন। সেই কারণে এই একাদশী পাপনাশিনী, পূণ্যবর্ধিনী ও মুক্তিপ্রদায়ী। এই একাদশী ব্রত নিষ্ঠার সঙ্গে পালন করলে ১,০০০ অশ্বমেধ যজ্ঞ, শতশত রাজসূয় যজ্ঞের ফল অনায়াসে লাভ করা যায়।

শুধু তাই নয়। জগতের দুর্লভ বস্তুর প্রাপ্তি ঘটে এই একাদশী ব্রত পালনে। ভক্তিপরায়ণ ব্যক্তি পান ঐশ্বর্য্য, প্রজ্ঞা, রাজ্য ও সুখ। এই ব্রতের প্রভাবে পর্বত প্রমাণ পাপরাশি নষ্ট হয়ে যায়। যাঁরা উত্থান একাদশীতে রাত্রি জাগেন, তাঁদের সমস্ত পাপ ভস্মীভূত হয়ে যায়। শ্রেষ্ঠ মুনিগণ তপস্যার দ্বারা যে ফল লাভ করেন, এই ব্রতের উপবাসে তা পাওয়া যায়। যথাযথভাবে এই ব্রত পালন করলে আশাতীত ফল লাভ হয়। কিন্তু, বিধি না-মেনে উপবাস করলে স্বল্প ফল প্রাপ্তি হয়।

পুরাণ অনুযায়ী, যাঁরা এই একাদশীর ধ্যান করেন, তাঁদের পূর্বপুরুষেরা স্বর্গে আনন্দে বাস করেন। এই একাদশীতে উপবাস করলে ব্রহ্মহত্যাজনিত ভয়ঙ্কর নরকযন্ত্রণা থেকেও নিস্তার মেলে। বৈকুন্ঠগতি লাভ হয়। অশ্বমেধ যজ্ঞ দ্বারাও যা সহজে লাভ হয় না, তীর্থে সোনা বা দামি বস্তু দান করলে যে পুণ্য অর্জিত হয়, এই উপবাসের রাত্রি জাগরণে সেই সব অনায়াসে লাভ হয়।

আরও পড়ুন- হিন্দুশাস্ত্রে পঞ্চমুখী গণেশের গুরুত্ব, বাড়িতে কোথায় রাখবেন এই মূর্তি, জানুন বিস্তারিত

যিনি নিয়ম মেনে উত্থান একাদশীর ব্রত পালন করেন, তাঁর বাড়িতে ত্রিভুবনের সমস্ত তীর্থ এসে উপস্থিত হয়। ভগবান বিষ্ণুর প্রিয় এই একাদশীর উপবাস করলে সর্বশাস্ত্রে জ্ঞান ও তপস্যায় সিদ্ধিলাভ হয়, মুক্তি লাভ হয়। যিনি সমস্ত লৌকিক ধর্ম পরিত্যাগ করে ভক্তিভরে এই উত্থান একাদশীতে উপবাস করেন, তাঁকে আর পুনর্জন্ম নিতে হয় না। এমনকী, মন ও বাক্য দ্বারা অর্জিত পাপও উত্থান একাদশী পালনের মাধ্যমে শ্রীগোবিন্দের অর্চনায় নষ্ট হয়ে যায়।

পুরাণ মতে, এই একাদশী পালনের সঙ্গে ভগবানের উদ্দেশ্যে স্নান, দান, জপ, কীর্তন ও হোমাদি করলে তা অক্ষয় হয়ে যায়। যারা উপবাসের দিনে শ্রীহরির প্রতি ভক্তিভাবে দিনযাপন করেন, তাঁদের কাছে এই জগতে দুর্লভ বলে আর কিছু থাকে না। চন্দ্র ও সূর্যগ্রহণে স্নান করলে যে পুণ্য হয়, এই উপবাসে রাত্রি জাগরণে তার সহস্রগুণ সুকৃতি লাভ হয়। আর, তীর্থে স্নান, দান, জপ, হোম, ধ্যানের ফলে যে পুণ্য সঞ্চিত হয়, উত্থান একাদশী পালন না-করলে সে সব নিষ্ফল হয়ে যায়।

pujo Ekadashi Sri Bishnu
Advertisment