"আদমশুমারি হলে তার মাথা কেউ গুনবে না...
তার ভোট চাইবেনা গণতান্ত্রিক কোনও প্রার্থী
সরকারে দরকার নেই তাই নিজের সুরঙ্গে..."
ভোটাধিকার থাকা আর ভোট দিতে পারা যে এক নয়, সে কথা দেশের রূপান্তরকামীদের দেখলেই বেশ বোঝা যায়। আসন্ন লোকসভা নির্বাচনে যাতে সমস্ত রূপান্তরকামী মানুষ ভোট দিতে পারেন, তার জন্য সম্প্রদায়ের মধ্যে সচেতনতা বাড়াতে বিশেষ পদক্ষেপ নিয়েছে নির্বাচন কমিশন। সম্প্রদায়ের প্রতিনিধি হিসেবে বিশেষ হুইরেমকে কমিশন থেকে নিয়োগ করা হয়েছে ভোটাধিকার সংক্রান্ত সচেতনতা বাড়ানোর জন্য।
২০১৬ সালে মিস ইন্টারন্যাশনাল কুইন, থাইল্যান্ড প্রতিযোগিতায় ভারতের প্রতিনিধিত্ব করেছিলেন বিশেষ হুইরেম। ২০১৪ সালে নির্বাচন কমিশন প্রথম 'তৃতীয় লিঙ্গ' হিসেবে স্ত্রী এবং পুরুষের সঙ্গে আলাদা লিঙ্গ হিসেবে এদের স্বীকৃতি দেয়। ২৮ হাজার ৫২৭ জন নথিভুক্ত তৃতীয় লিঙ্গের ভোটারের মধ্যে সে বছর ভোট দিয়েছিলেন মাত্র ১৯৬৮ জন। ২০১১ সালের আদমশুমারি অনুযায়ী দেশের রূপান্তরকামীদের জনসংখ্যা ৪ লক্ষ ৮৭ হাজার ২০৩। আর নির্বাচন কমিশনের সাম্প্রতিক তথ্য বলছে, দেশের নথিভুক্ত রূপান্তরকামীর সংখ্যা মাত্র ৪০ হাজার, মোট জনসংখ্যার মাত্র ১০ শতাংশ।
আরও পড়ুন, World Autism Day: ছকে বাঁধা চিন্তা থেকে বেরিয়ে সচেতনতা বাড়ান
একটা ভোটার কার্ড পেতে এদের কেন এত বছর সময় লেগে গেল, তার পেছনেও অনেক কারণ রয়েছে। "আমাদের মতো রূপান্তরকামীদের ভোটার তালিকায় নাম তোলার পদ্ধতিটি এত দীর্ঘ, যার ফলে এখনও ৪ লক্ষের বেশি মানুষ তালিকার বাইরেই রয়ে গিয়েছেন", ইন্ডিয়ান এক্সপ্রেসকে একটি সাক্ষাৎকারে বলেছেন বিশেষ হুইরেম।
এই লোকসভায় এলাহাবাদ থেকে আম আদমি দল মহামন্ডলেশ্বর ভবানী নাথ বাল্মিকি নামে এক রূপান্তরকামীকেই দাঁড় করিয়েছেন ভোটে। জিতলে তিনিই হবেন দেশের প্রথম রূপান্তরকামী সাংসদ। মধ্যপ্রদেশ থেকে ১৯৯৮ সালে দেশের প্রথম রূপান্তরকামী বিধায়ক হিসেবেও নির্বাচিত হয়েছিলেন ইনিই।
অধিকাংশ ক্ষেত্রে রূপান্তরকামীরা রাজনীতিতে তেমন আগ্রহ দেখান না। কারণ কোনও কেন্দ্রেই বড় ভোট ব্যাঙ্ক তৈরি করেন না রূপান্তরকামীরা।
দিল্লিতে তৃতীয় লিঙ্গের মানুষদের নিয়ে কাজ করা অসরকারি এক সংস্থা 'হমসফর'-এর প্রতিষ্ঠাতা যশবিন্দর সিং বললেন, "যদি দেশের সমস্ত রূপান্তরকামীরা এক জায়গায় কেন্দ্রীভূত হতেন, তাঁদের সংখ্যাটা প্রভাব ফেলতে পারত ভোট ব্যাঙ্কে। সেটা যেহেতু হয়নি, রাজনৈতিক দিক থেকে একটা ঔদাসিন্য থেকেই গিয়েছে"।