Advertisment

গড়িয়ার কাছেই ত্রিপুরাসুন্দরী মন্দির, জাগ্রত দেবীর কৃপায় মেলে ধর্ম-অর্থ-কাম-মোক্ষ

ঐতিহ্য আর জাগ্রত দেবীর কারণে, অনেকে এই মন্দিরকে সতীপীঠও বলে থাকেন।

author-image
IE Bangla Web Desk
New Update
Boral Tripurasundari Temple

দক্ষিণ কলকাতায় গড়িয়ার কাছেই বোড়াল। সেখানে রয়েছে দশমহাবিদ্যার অন্যতম মহাবিদ্যা দেবী ষোড়শী বা ত্রিপুরাসুন্দরীর মন্দির। ঠিক কবেকার এই মন্দির, তা নিয়ে গবেষকদের মনে সন্দেহ আছে। তবে, মন্দির যে অতি প্রাচীন তা নিয়ে তাঁদের কোনও দ্বিধা নেই। অনেকে একে সতীপীঠও বলে থাকেন। দেবী ত্রিপুরাসুন্দরীই বোড়ালের অধিষ্ঠাত্রী। তাঁর ভৈরব পঞ্চানন।

Advertisment

কথিত আছে ত্রয়োদশ শতাব্দীতে সেন বংশের জমানায় এই মন্দির প্রতিষ্ঠিত হয়েছিল। ভক্তদের দাবি, এই মন্দির থেকে তাঁরা বংশ পরম্পরায় দেবী ত্রিপুরাসুন্দরীর কৃপা পেয়েছেন। দেবীর কাছে কোনও মনস্কামনা জানালে, তা কিছুদিনের মধ্যেই পূরণ হয়। শুধু তাই নয়, দেবীর কৃপায় অর্থাভাবও দূর হয় বলেই দাবি ভক্তদের।

স্বাধীনতার আগে ১৯৪০ সালে কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয়ের আশুতোষ সংগ্রহালয়ের গবেষকরা মন্দিরের প্রাচীন ধ্বংসস্তূপ খনন করেছিলেন। তখন নানা ঐতিহাসিক উপাদান পাওয়া গিয়েছিল, যেসব খ্রিস্টীয় সপ্তম ও অষ্টম শতকের। যার মধ্যে রয়েছে দু’টি সুন্দর বিষ্ণুমূর্তি। এছাড়াও পাওয়া গিয়েছে পাথরে খোদাই করা বিষ্ণুর পাদপদ্ম। ত্রয়োদশ শতকের চিত্রিত বিভিন্ন আকারের ইট।

ওই সব ইটের ওপর খচিত রয়েছে দেবদেবীর মূর্তি, মঙ্গলঘট, আঙুরের স্তবক, পদ্মফুল প্রভৃতি কারুকার্য। স্তূপ খননের সময় প্রাচীন মন্দিরের ভিতের আশপাশে খ্রিস্টীয় ত্রয়োদশ-চতুর্দশ শতকের পোড়ামাটির বিভিন্ন আকৃতির পাত্র, পুতুলও পেয়েছেন গবেষকরা।

আরও পড়ুন- মালদার প্রাচীন জহুরা কালী মন্দির, পুজো দিলেই পূরণ মনস্কামনা

এছাড়াও মন্দির সংলগ্ন জমি থেকে পুরাতাত্ত্বিকরা খ্রিস্টপূর্ব দ্বিতীয় শতক থেকে শুরু করে সপ্তম-অষ্টম শতক পর্যন্ত নানা ঐতিহাসিক উপাদান খুঁজে পেয়েছেন। যার মধ্যে রয়েছে শুঙ্গযুগের পোড়ামাটির ফলক, গুপ্তযুগের পোড়ামাটির অপ্সরামূর্তি, রাক্ষসের মুখ, নারী-পুরুষের মিথুনমূর্তি, ফলকে উৎকীর্ণ জাতক-কাহিনি, মহিষ ও হরিণের শিলীভূত শিং, মাটির মাল্যদান, বড় পাথরের জালা, বিভিন্ন প্রকারের মৃৎপাত্র ও প্রস্তরপাত্রের ভগ্নাংশ ইত্যাদি।

বিভিন্ন প্রকারের পাত্রের মধ্যে পিঙ্গল রঙের পাত্রগুলি শুঙ্গ ও কুষাণ যুগের বলেই গবেষকরা জানিয়েছেন। এই সব ঐতিহ্যের মধ্যেই মন্দিরের জাগ্রত দেবী ত্রিপুরাসুন্দরী ভক্তদের আশা-আকাঙ্ক্ষা পূরণ করায় এই মন্দিরে ভক্তদের ভিড় ক্রমশই বাড়ছে।

Kali Puja Kali Temple pujo
Advertisment