করোনা আবহে রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়ানোই সবচেয়ে বেশি প্রয়োজনীয় হয়ে উঠেছে এই মুহূর্তে। পৃথিবীজুড়েই কোভিড গবেষক, চিকিৎসকেরা জানিয়েছেন করোনার সঙ্গেই আপাতত বেশ কিছুদিন বসবাস করতে হবে আমাদের, অর্থাৎ করোনা মুক্ত পৃথিবী পেতে আরও বেশ কিছুটা সময় লাগবে আমাদের। এই পরিস্থিতিতে নিজেদের শরীরের ইমিউনিটি বাড়ানোই সবচেয়ে কার্যকর। ইমিউনিটি বাড়ানোর ক্ষেত্রে হলুদ দুধ খুব উপাকারি, সে কথা স্বীকার করছেন সবাই।
এক নজরে দেখে নেওয়া যাক হলুদ-দুধ খাওয়ার উপকারিতা।
হলুদ দুধে আছে ভাইরাস ও ব্যাক্টেরিয়া বিরোধী গুণাবলী
ভারত, বাংলাদেশ, পাকিস্তান ও নিকটবর্তী দেশগুলিতে সর্দি জ্বরের ঔষধ হিসেবে হলদি দুধ দেয়া হয়।গবেষণায় দেখা গেছে কারকিউমিনের ভাইরাস বিরোধী গুণাগুণ ইনফেকশানের বিরুদ্ধে কাজ করে।
হলুদ দুধের প্রধান উপাদান এন্টি অক্সিডেন্টে ভরপুর
হলুদের প্রধান উপাদান কারকিউমিন (Curcumin) নামক কম্পাউন্ড অ্যান্টি অক্সিডেন্ট গুণাবলীর জন্য সুখ্যাত। এর ফলে হলুদ আয়ুর্বেদ ঔষধে শত শত বছর ধরে ব্যবহৃত হয়ে আসছে। অ্যান্টি অক্সিডেন্ট দেহের কোষকে ধ্বংস থেকে রক্ষা করে।
বেশীরভাগ সময় হলদি দুধে দারুচিনি এবং আদাও ব্যবহার করা হয়, যার ফলে এটা এন্টি অক্সিডেন্টে আরো বেশী ভরপুর হয়ে উঠে।
প্রদাহ এবং জয়েন্টের ব্যথা কমায়
হলুদ দুধে আছে সব ধরনের প্রদাহ বিরোধী গুণাগুণ। দীর্ঘস্থায়ী প্রদাহ ক্যান্সার, মেটাবলিক সিন্ড্রোম, আলযহাইমার্স রোগ (Alzheimer’s disease) এবং হৃদরোগের জন্য দায়ী। এজন্যে এসব রোগ থেকে দূরে থাকতে হ’লে আপনাকে খেতে হবে সেই সব খাবার যাতে আছে প্রদাহ বিরোধী (anti-inflammatory) উপাদান। এসব প্রদাহ-বিরোধী গুণাগুণ অস্টিওআর্থ্রাইটিস (osteoarthritis) এবং রুমাটয়েড আর্থ্রাইটিস (rheumatoid arthritis) জনিত জয়েন্টের ব্যথা কমাতে পারে।
মস্তিষ্কের কার্যকারিতা ও স্মৃতিশক্তি বাড়ায়
গবেষণায় দেখা গেছে হলুদ খেলে মস্তিষ্কে ব্রেইন ডেরাইভড নিউরোটফিক ফ্যাক্টেরের (brain-derived neurotrophic factor BDNF) মাত্রা বাড়ে। BDNF মস্তিষ্কের নতুন যোগাযোগ এবং মস্তিষ্কের কোষের বিকাশে সহায়তা করে। মস্তিষ্কে কম মাত্রায় BDNF থাকলে আলযহাইমার্স রোগসহ বিভিন্ন ধরনের মস্তিষ্কের রোগ হওয়ার ঝুঁকি বাড়ে।
হলুদের কারকিউমিন (curcumin) মেজাজ ভাল রাখে
হলুদের প্রধান উপাদান কারকিউমিন মেজাজ ভাল রাখে এবং বিষন্নতা দূর করে। একটি গবেষণায় ৬০ জন বিষাদ্গ্রস্ত ব্যক্তিকে ৬ সপ্তাহ ধরে কারকিউমিন, এবং ওষুধ অথবা দু’টির কম্বিনেশান দেয়া হয়।
যারা শুধু কারকিউমিন খেয়েছেন তাঁদের মানসিক অবস্থার উন্নয়ন হয় ঔষধ খাওয়া দলের অংশগ্রহনকারীদের মতই।কিন্তু, সবচেয়ে বেশী উন্নতি হয় যারা ওষুধের সাথে কারকিউমিনও খেয়েছেন।
হৃদরোগ থেকে রক্ষা করে
বিশ্বজুড়ে হৃদরোগে মৃত্যুর হার অনেক বেশী। হলুদ দুধের ৩টি উপাদানই (হলুদ, দারুচি এবং আদা) হৃদরোগ থেকে আপনাকে রক্ষা করতে পারে।
ব্লাড সুগার কমায়
বেশীরভাগ সময় হলদি দুধে মধু বা চিনি দেয়া হয়। তাই ব্লাড সুগার কমানোর গুণাগুণ পেতে হলে এটা পান করতে হবে মধু বা চিনি ছাড়া।
হলুদ দুধ ক্যান্সারের ঝুঁকি কমায়
বিজ্ঞানীর বিভিন্ন উপায়ে ক্যান্সারের চিকিৎসা খুঁজে বেড়াচ্ছেন। কিছু কিছু গবেষণায় দেখা গেছে হলদি দুধের উপাদান এ ব্যাপারে সাহায্য করতে পারে।গবেষণায় দেখা গেছে আদার উপাদান ৬-জিঞ্জারলের (6-gingerol) আছে ক্যান্সার বিধ্বংসী গুণাগুণ।