ঈশ্বরিক শক্তি। যার সাধনায় অনেক অসাধ্যকে সাধ্য হতে দেখেছেন ভারতবাসী। এদেশের প্রতিটি ঘরে রয়েছে ঈশ্বর আরাধনার বাতাবরণ। রয়েছে সেই মহাশক্তির ছায়া। বাকি ভারতের সঙ্গে তুলনা টানলে দেখা যাবে যে এই বাংলাও তার ব্যতিক্রম নয়। এমনকী এখানে নাস্তিকতার আড়ালেও চলে দৈব সাধনা, পুজো-অর্চ্চনা, জপ-তপ। চলে তন্ত্রচর্চাও। যার সাহায্যে জীবনের অনেক কঠিন পরিস্থিতিকে সহজে সামলে নেন ভক্তরা।
এই বাংলার আরও বড় সুবিধা যে এখানে রয়েছে বেশ কয়েকটি শক্তিপীঠ। বেশ কয়েকটি সিদ্ধপীঠ। এই বাংলায় জন্ম নিয়েছেন একের পর এক মহাপুরুষ। এমনই এক শক্তিপীঠ হল পূর্ব বর্ধমান জেলার কোগ্রামের উজানি। পৌরাণিক কাহিনি অনুযায়ী যেখানে দেবী সতীর বাম হাতের কনুই পড়েছিল। এখানে দেবী মণ্ডলচণ্ডী। আর ভৈরব কপিলাম্বর বা কপিলেশ্বর।
হিন্দুদের ৫১ সতীপীঠের মধ্যে পীঠনির্ণয় অনুযায়ী ১৩তম সতীপীঠ হল উজ্জয়িনী। আর অন্নদামঙ্গল কাব্য অনুযায়ী জায়গাটার নাম উজানি। গবেষকদের ধারণা, ওড্ডিয়ান মঙ্গলকোট অনুযায়ী কোগ্রামেই রয়েছে উজানি সতীপীঠ। অজয় নদের পাড়ে এই মন্দিরে প্রথমে একটি বারান্দা পড়ে। তার ভিতরে আছে আয়তাকার গর্ভগৃহ। সেখানেই রয়েছে দেবী মঙ্গলচণ্ডীর ছোট কালো পাথরের দশভুজা মূর্তি। আর, ভৈরব কপিলাম্বর কালো পাথরের শিবলিঙ্গ।
আরও পড়ুন- পূরণ হয় দীর্ঘদিনের মনস্কামনাও, ঘুরে আসুন এই সতীপীঠে
মন্দির সকাল ৬টা থেকে রাত ৮টা পর্যন্ত খোলা থাকে। এখানে দুর্গাপুজো, কালীপুজো, চৈত্র নবরাত্রি, শিবরাত্রি বেশ ঘটা করে পালন হয়। জায়গাটা গুসকরা স্টেশন থেকে ১৬ কিলোমিটার দূরে। দেবী এখানে সিংহবাহিনী। কথিত আছে, এখানে দেবীর কাছে প্রার্থনা করলে তা বৃথা যায় না।
প্রচলিত কাহিনি অনুযায়ী, অভিশপ্ত স্বর্গের অপ্সরা ফুল্লরা এখানে খুল্লনা রূপে জন্মগ্রহণ করেছিলেন। তিনি বিয়ে করেছিলেন ধনপতি সওদাগরকে। শিবভক্ত সওদাগর বাণিজ্যে বের হওয়ার আগে দেবীর ঘটে লাথি মেরেছিলেন। এরপর তিনি আর উজানি নগরে ফিরতে পারেননি। শেষ পর্যন্ত দেবী মঙ্গলচণ্ডীকে পুজোয় সন্তুষ্ট করে খুল্লনা সন্তুষ্ট করেন। তার পরই ফিরে আসেন সওদাগর।