বর্তমান দিকে দাঁড়িয়ে ডায়েট নিয়ে ওয়াকিবহল অনেক মানুষই। আকর্ষণীয় এবং ফিট শরীর পাওয়ার প্রচেষ্টায় অনেকেই নিজের মতো করে বানিয়ে নেন ডায়েট প্ল্যান, কেউ আবার এর-ওর কথা শুনে প্রলোভনে পা দেন, আর কেউ আবার সঠিক পথ অনুসরণ করে চিকিৎসকের পরামর্শ নেন। কিন্তু হেলদি ডায়েট শব্দটির অর্থ আসলে কী?
রাষ্ট্রসংঘের খাদ্য ব্যবস্থাপনা সম্মেলন ২০২১ অনুষ্ঠিত হতে চলেছে সেপ্টেম্বরে। তবে এর আগের সম্মেলনে খাদ্য ব্যবস্থাকে সংঘটিত করার এক নিদারুণ সংজ্ঞা এবং তার কার্যকারিতা প্রসঙ্গে আলোচনা করা হয়েছে। বিশেষত শিশু এবং তরুণদের জন্য, খাদ্য ব্যবস্থাকে শক্তিশালী করা, স্বাস্থ্যকর খাদ্যাভ্যাস প্রচার এমনকি পুষ্টি সরবরাহের বিষয়টিতে নজর দেওয়া হয়েছে। এককথায় স্বাস্থ্যকর খাদ্যের কতটা প্রয়োজন সেই বিষয়েই পদক্ষেপ নেওয়া হয়েছে।
গবেষণায় দেখা গেছে, স্বাস্থ্যকর খাদ্য কেবল সুস্বাস্থ্য নয়, তার সঙ্গে রোগ প্রতিরোধেও সাহায্য করে। প্রয়োজনীয় পুষ্টি, ভিটামিন, প্রোটিন এবং অন্যান্য পর্যাপ্ততা দান করে। ধারণাগত ভাবে খাদ্যকে পুষ্টির কমবেশি প্রভাবের ওপর বৃদ্ধি করে আলাদা করা সম্ভব নয়। এক একটি বয়সের জন্য একেকরকম খাবার উপযোগী। একটি শিশু যা সহজেই হজম করতে পারবে কিংবা তার শরীরের উপযোগী একজন প্রাপ্তবয়স্ক মানুষের ক্ষেত্রে তার ব্যতিক্রম হবে এটাই স্বাভাবিক। আবার দেহের আকৃতি বা ওজনের উপরেও এই বিষয়টি প্রাসঙ্গিক।
রাষ্ট্রসংঘের বিশেষজ্ঞদের অভিমত অনুযায়ী, পুষ্টি যেমন দরকারি তেমন অতিরিক্ত পুষ্টি শরীরের পক্ষে ক্ষতিকারক সাব্যস্ত হতে পারে। বেশ কিছু খাবার এবং তাদের সংমিশ্রণ গ্রহণ করার আগে জেনে বুঝে নেওয়া ভালও। সুতরাং, পুষ্টিকর খাদ্য হিসেবে অন্তর্ভুক্ত বিষয়গুলি কী? এর সাপেক্ষে তাদের মতামত, এমন একটি খাদ্য যা প্রোটিন, ভিটামিন, খনিজ, অ্যামিনো অ্যাসিড, ফ্যাটি অ্যাসিড এবং ফাইবারের মতো পুষ্টি সরবরাহ করে। এবং ক্ষতিকারক পদার্থ যথা, সোডিয়াম, স্যাচুরেটেড ফ্যাট এবং শর্করার পরিমাণ হ্রাস করে।
পুষ্টির ঘনত্বের ওপর নির্ভর করে খাদ্যকে কমবেশি হিসেবে রেটিং করার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। প্রতি ১০০ গ্রাম বা ১০০ কিলো ক্যালরি হিসেবে এর মাত্রা নির্ধারণ করা হবে। কোনও খাদ্য মানুষের শরীরে কী পরিমাণে কাজে লাগছে সেই বিবেচনায় এর থেকে ভালও উপায় নেই। যদিও লিঙ্গ, বয়স এবং জীবনের পর্যায় অনুসারে পুষ্টির প্রয়োজনীয়তা ভিন্ন। এর মান নির্ধারণ করা বেশ কঠিন।
আরও পড়ুন ডাল এবং বাদাম ভিজিয়ে খাওয়ার কারণ জানেন কি?
খাদ্য নিরাপত্তার উপর জোর দিয়ে বেশ কিছু মন্তব্য করা হয়েছে সম্মেলনে। জৈবিক বিপদ, ক্ষতিকারক রোগজীবাণু এমনকি রাসায়নিক কীটনাশক, পশুপাখির শারীরিক অসুস্থতার জেরে খাদ্যদ্রব্য ক্রমশই নিজের পুষ্টি হারাচ্ছে। তাই সেই বিষয়ে নজর দেওয়া প্রয়োজন অর্থাৎ, খামারের পশুদের সঠিকভাবে দেখভাল করা। খাদ্য নিরাপত্তার জন্য সক্রিয় পরিবর্তন গ্রহণ করা, খাদ্য নিরাপত্তা সক্ষমতা গড়ে তোলা, প্রতিটা সরকারকে তাদের নিজস্ব নাগরিকদের স্বাস্থের উন্নতির দিকে নজর দেওয়া এবং অবশ্যই সুখাদ্য রফতানি করা। ভাল খাদ্যগ্রহণ সমগ্র বিশ্বের ভবিষ্যতের জন্য প্রয়োজন।
ইন্ডিয়ান এক্সপ্রেস বাংলা এখন টেলিগ্রামে, পড়তে থাকুন